এম ডি সোহেল, নোয়াখালী প্রতিনিধি: নোয়াখালীর হাতিয়ায় একটি পুকুরে কুমির দেখা গেছে—এমন গুজবে গত চার দিন ধরে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়। তবে বন বিভাগের তদন্তে জানা গেছে, সেটি আসলে ছিল একটি বড় আকারের গুইসাপ (রামগুই)।
ঘটনাটি ঘটে হাতিয়া পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের চরকৈলাশ গ্রামের আমজাদ মজিদ মিয়ার বাড়ির পুকুরে। বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বন বিভাগের একটি দল সেখানে অভিযান চালায়। তবে কুমিরের কোনো অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি।
স্থানীয় বাসিন্দা সাহেদ উদ্দিন জানান, বন বিভাগের কর্মকর্তারা পুকুরে জাল ফেলে তল্লাশি চালান। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কোনো কুমির বা রহস্যময় প্রাণীর খোঁজ মেলেনি।
পুকুরের মালিক মাসুদুল ইসলাম শরীফ বলেন, “চার দিন আগে পাশের ফেরি ওয়ালার বাড়ির লোকজন প্রথম একটি অজানা প্রাণী দেখতে পায় বলে দাবি করে। তারা সেটিকে মারার চেষ্টাও করে। এরপর গত বুধবার বিকেলে আমার স্ত্রী পুকুরে আবার সেই প্রাণীটিকে ভেসে থাকতে দেখেন। তখনই গুজব ছড়িয়ে পড়ে, এবং আশপাশের কয়েক হাজার মানুষ সেখানে ভিড় জমায়। কেউ কেউ ফেসবুকে কুমির সাদৃশ্য প্রাণীর ভিডিও ও ছবি পোস্ট করে।”
তিনি আরও জানান, বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে ১০টা পর্যন্ত পুকুরের চারপাশ ঘুরেও কিছু দেখা যায়নি।
বন বিভাগের হাতিয়া বিট কর্মকর্তা আরিফুল ইসলাম জানান, “ঘটনাস্থলে গিয়ে আমরা একটি স্থিরচিত্র পর্যালোচনা করেছি। তাতে প্রাথমিকভাবে এটিকে বড় আকারের গুইসাপ (রামগুই) বলে ধারণা করছি। ছবিটি আগে হাতে পেলে এতটা বিভ্রান্তি হতো না।”
তিনি আরও বলেন, “এত বড় গুইসাপ সচরাচর দেখা যায় না বলেই মানুষ এটিকে কুমির ভেবে ভুল করেছে।”
হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আলাউদ্দিন বলেন, “বন বিভাগের অভিযানে পুকুরে কোনো কুমির পাওয়া যায়নি। একটি স্থিরচিত্র দেখে ধারণা করা হচ্ছে, প্রাণীটি ছিল গুইসাপ।”
সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া গুজব ও কুমির আতঙ্ক শেষ পর্যন্ত একটি গুইসাপের উপস্থিতিতেই থেমে গেল—তবে ততক্ষণে পুরো এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে ব্যাপক উত্তেজনা ও জনসমাগম।