মো. রফিকুল ইসলাম মিঠু, ঢাকা: এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেনি উত্তরা হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজের দুই শিক্ষার্থী ইয়াসির আরাফাত ও সাজ্জাদ হোসেন। প্রবেশপত্র না পাওয়ার কারণ হিসেবে উঠে এসেছে প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষের রোল নম্বর বিভ্রাট। ঘটনাটি ঘটেছে রাজধানীর উত্তরা ৭ নম্বর সেক্টরের ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে।
বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) পরীক্ষা শুরুর দিন যখন ভেতরে পরীক্ষার্থী বসে, তখন প্রতিষ্ঠান চত্বরে কান্নায় ভেঙে পড়েছিল ইয়াসির ও সাজ্জাদ। অভিভাবকরাও ছিলেন হতাশ ও ক্ষুব্ধ।
ভুক্তভোগী সাজ্জাদের বাবা অভিযোগ করেন, "আমার ছেলের রোল ছিল ১০৯১, কিন্তু প্রতিষ্ঠানটি রোল দিয়েছে ২০৯২। অর্থাৎ অন্যকে আমার ছেলের স্থানে বসানো হয়েছে। আমি মনে করি, আর্থিক লেনদেনের বিনিময়ে এ কাজ করা হয়েছে।"
সাজ্জাদ বলেন, “প্রতিষ্ঠানের ভুলে আমরা পরীক্ষা দিতে পারিনি। বন্ধুদের থেকে এক বছর পিছিয়ে গেলাম। এই অন্যায়ের বিচার চাই।”
ইয়াসির অভিযোগ করেন, “প্রধান শিক্ষক ইভানা তালুকদার আমাদের প্রবেশপত্র দেওয়ার কথা বলে রাত ১২টা পর্যন্ত বসিয়ে রেখেছিলেন। সকালে আবার আশ্বাস দেন, কিন্তু শেষমেশ কিছুই পাইনি। আমাদের বলা হয়, বিষয়টি কাউকে না জানাতে।”
সাজ্জাদের মা বিলকিস বেগম বলেন, “ভোর থেকে স্কুল গেটে দাঁড়িয়ে আছি, কেউ কোনো খোঁজ নেয়নি। ফোন করলেও ধরছে না। আমার ছেলের ভবিষ্যৎ নষ্ট হয়ে গেল।”
ঘটনার পর পরই প্রতিষ্ঠানটির শ্রেণি শিক্ষক আমিনুর রহমানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে এবং একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন স্কুল গভর্নিং বডির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের অঞ্চল-১০-এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম।
তিনি বলেন, “প্রাথমিকভাবে দায়ী শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তদন্তে কারও গাফিলতি প্রমাণিত হলে তাদের বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক ইভানা তালুকদারের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন বন্ধ রাখেন।