নোয়াখালী প্রতিনিধি : নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে স্বামীকে ভিডিও কলে রেখেই আত্মহত্যা করেছেন ফরিদা ইয়াছমিন (৩১) নামে এক প্রবাসীর স্ত্রী।
সোমবার (০৮ সেপ্টেম্বর) সকালে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিহতের ময়নাতদন্ত সম্পূন্ন হয়। এরআগে রোববার দুপুরে সোনাইমুড়ী পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের শফিক হুজুরের বাড়ি থেকে তার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহত ফরিদা ইয়াছমিন সদর উপজেলার নোয়াখালী ইউনিয়নের দুলাল মিয়ার মেয়ে ও সোনাইমুড়ীর ভানুয়াই গ্রামের যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী নুর নবীর স্ত্রী।
স্থানীয় সূত্র জানায়, প্রবাসী নুর নবী দীর্ঘদিন ধরে স্ত্রীকে নানা বিষয়ে কথা বলতেন। গত সাত মাস ধরে ফরিদা ভাড়া থাকছিলেন শফিক হুজুরের বাড়িতে। দুই রুমের ওই ভাড়া বাসায় চারটি সিসি ক্যামেরা বসিয়ে সর্বক্ষণ নজরদারিতে রাখতেন স্বামী। শনিবার রাতে পারিবারিক কলহের একপর্যায়ে বাসা থেকে বের হতে চাইলে নুর নবী তা অনুমতি দেননি। এরপর স্বামীকে ভিডিও কলে রেখেই বোরখা পরে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে আত্মহত্যা করেন ফরিদা।
বাড়ির মালিক শফিক উল্যাহ বলেন, ফরিদা ছিলেন পর্দানশীন মহিলা। সাত মাসে আমি তার মুখও দেখিনি। শুধু ভাড়া ও বিদ্যুৎ বিল দেওয়ার সময় পর্দার আড়াল থেকে কথা হতো। প্রায় সময় শোনা যেত ফরিদার সঙ্গে তার স্বামী ঝগড়া করতেন। এমনকি বেডরুমেও সিসি ক্যামেরা লাগিয়েছিল তার স্বামী। সকালে দরজা বন্ধ দেখে পুলিশকে খবর দিই। পরে পুলিশ এসে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে।
নিহতের ভাই মাসুদ ও রাশেদ রানা অভিযোগ করে বলেন, আমার বোনকে স্বামী নজরবন্দি করে রেখেছিল। আমাদের কারো সাথে কথা বা যোগাযোগ রাখতে দিতো না। যোগাযোগ করলে মিথ্যা অপবাদ দিতো। স্বামীর চাপেই সে আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছে। সিসি ক্যামেরা ও ভিডিও কলে ঘটনাটি দেখেও স্বামী কাউকে জানায়নি। অথচ বাড়িয়ালা ও পাশের ভাড়াটিয়ার নম্বর তার কাছে রয়েছে। আসলে সে চাইছিল আমার বোন মারা যাক। আমরা এর ন্যায় বিচার চাই।
সোনাইমুড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মোরশেদ আলম বলেন, ঘটনার খবর পেয়ে মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে সিসি ক্যামেরা ও মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে এটি পারিবারিক কলহজনিত আত্মহত্যা বলে মনে হচ্ছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।