স্পোর্টস ডেস্ক : ব্যাট হাতে খুব বড় সংগ্রহের দেখা পায়নি পাকিস্তান। তবুও মামুলি সংগ্রহ নিয়েই আফগানিস্তানকে কাঁপিয়ে দেয় তারা। বিশেষ করে পাকিস্তানি স্পিনার মোহাম্মদ নওয়াজ।
এই বাঁহাতি স্পিনার একাই আফগানদের ধস নামান, তুলে নেন হ্যাটট্রিকসহ পাঁচ উইকেট। তাতেই এশিয়া কাপের আগে দাপুটে জয়ে ত্রিদেশীয় সিরিজের শিরোপাও ঘরে তুলেছে পাকিস্তান। -- চ্যানেল২৪
রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত শিরোপা নির্ধারণী ফাইনালে আফগানিস্তানকে ৭৫ রানের বড় ব্যবধানে হারিয়েছে পাকিস্তান।
আগে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেটে স্কোরবোর্ডে ১৪১ রান তুলেছিল সালমান আগার দল। লক্ষ্য তাড়ায় নেমে নওয়াজের জাদুকরী বোলিংয়ে ১৫.৫ ওভারে মাত্র ৬৬ রানে গুটিয়ে যায় আফগানিস্তান।
১৪২ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে আফগান ব্যাটাররা একেবারেই দাঁড়াতেই পারেননি। প্রথম ওভারেই শাহীন শাহ আফ্রিদির শিকার হন আফগান ওপেনার রহমানুল্লাহ গুরবাজ (৫)। এরপর পঞ্চম ওভারে আরেক ওপেনার সেদিকুল্লাহ আতলকে (১৩) ফিরিয়ে দেন লেগস্পিনার আবরার আহমেদ। কিন্তু আসল ধাক্কাটা দেন নওয়াজ—এক ওভারেই দুই উইকেট তুলে নেন।
ষষ্ঠ ওভারে বোলিংয়ে এসেই ফিরিয়ে দেন দারউইশ রাসুলি ও আজমতউল্লাহ ওমরজাইকে। দুজনেই সাজঘরে ফেরেন রানের খাতা খোলার আগেই। এরপর সাত নম্বর ওভারের প্রথম বলেই ইব্রাহিম জাদরানকে (৯) এলবিডব্লিউ করে হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেন নওয়াজ।
সেই ওভারেই আবার শূন্য রানে বিদায় করেন করিম জানাতকেও। তাতেই কার্যত শেষ হয়ে যায় আফগানিস্তানের লড়াই।
এরপর আফগান অধিনায়ক রশিদ খানকে (১৭) আউট করে পাঁচ উইকেট পূর্ণ করেন নওয়াজ। ফলে এক পর্যায়ে ম্যাচ হাতছাড়া হয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত আফগানিস্তান গুটিয়ে যায় মাত্র ৬৬ রানে। নওয়াজ ৪ ওভারে মাত্র ১৯ রান দিয়ে নেন ৫ উইকেট। আবরার আহমেদ ও সুফিয়ান মুকিম শিকার করেন ২টি করে উইকেট, শাহীন নেন ১টি। অর্থাৎ পাকিস্তানি স্পিনাররাই ফাইনালে ম্যাচ ঘুরিয়ে দেন।
এর আগে টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে পাকিস্তানও শুরুতে ধাক্কা খেয়েছিল। ওপেনার সাহিবজাদা ফারহান শূন্য রানে সাজঘরে ফেরেন। এরপর সাইম আইয়ু্ব (১৭) ও ফখর জামান (২৭) কিছুটা প্রতিরোধ গড়লেও মাঝের ওভারে নুর আহমেদ ও রশিদ খানের ঘূর্ণিতে ফের চাপে পড়ে যায়। মোহাম্মদ হারিস (২) ও হাসান নওয়াজ (১৫) ফিরলে ৭২ রানেই ৫ উইকেট হারায় পাকিস্তান।
তবে শেষদিকে অধিনায়ক সালমান আলী আগা (২৪), নায়ক মোহাম্মদ নওয়াজ (২৫) ও ফাহিম আশরাফের (১৫) ছোট ছোট ইনিংসে পাকিস্তানকে লড়াই করার মতো স্কোরে নিয়ে যান। অবশেষে সেই রানই যথেষ্টেরও বেশি প্রমাণিত হয়। আফগান ব্যাটারদের আসা-যাওয়ার মিছিল থামিয়ে পাকিস্তান উল্লাসে মাতে শারজাহে। নওয়াজের হ্যাটট্রিক আর দুর্দান্ত স্পেলই এনে দেয় তাদের কাঙ্ক্ষিত ত্রিদেশীয় শিরোপা।
লিগ পর্বে দুই দল একে অপরকে একবার করে হারিয়েছিল। তবে শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে নওয়াজের জাদুকরী স্পেলে পাকিস্তানই শেষ হাসি হাসল। ম্যাচ ও সিরিজসেরা নির্বাচিত হন ৩১ বছর বয়সী এই স্পিন অলরাউন্ডার। ৯ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু এশিয়া কাপের আগে এমন পারফরম্যান্স পাকিস্তানিদের আত্মবিশ্বাস যোগাবে নি:সন্দেহে।