শিরোনাম
◈ স্কুল-কলেজ পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনা নিয়ে নতুন বিধি ◈ ইংল‌্যা‌ন্ডের হা‌ন্ড্রেড ব‌লের খেলায় টানা তৃতীয়বার শিরোপা জিতলো ওভাল ইনভিনসিবলস ◈ আসন্ন নির্বাচন ফ্রি অ্যান্ড ফেয়ার করতে যুক্তরাষ্ট্র সমর্থন দেবে: ট্রেসি অ্যান জেকবসন ◈ ভারতীয় উদ্যোক্তারা মহাদুশ্চিন্তায়, ‘কীভাবে শ্রমিকদের বেতন দেব?’ ◈ নির্বাচনে সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনী মোতায়েন করা হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ◈ জরুরি অবস্থা বা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সম্ভাবনার বিষয়ে অবগত নই: আইন উপদেষ্টা ◈ ডাকসু নির্বাচন স্থগিত ◈ পুতুলের সাড়ে ৪০০ কোটি টাকা আত্মসাতের প্রমাণ মিলেছে ◈ আর্সেনালের বিরু‌দ্ধে  লিভারপু‌লের ক‌ষ্টের জয় ◈ রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সেনাপ্রধানের সাক্ষাৎ

প্রকাশিত : ০১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ১০:৫৭ দুপুর
আপডেট : ০১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ০৪:০০ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

টিন সার্টিফিকেট অনলাইনে বাতিল করবেন যেভাবে, জেনে নিন প্রক্রিয়া

টিন সার্টিফিকেট বা ট্যাক্স আইডেন্টিফিকেশন নম্বর সার্টিফিকেট, একটি ইউনিক নম্বর। টিন একটি গুরুত্বপূর্ণ সনদ যা ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের আয়কর দাখিলের জন্য ব্যবহৃত হয়। এটি করদাতার একটি পরিচিতি হিসেবে কাজ করে এবং কর সংক্রান্ত বিভিন্ন কার্যক্রমে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। টিন সার্টিফিকেট প্রাপ্তির মাধ্যমে সরকার করদাতার আয়, কর পরিশোধ এবং অন্যান্য আর্থিক তথ্য বিশ্লেষণ করতে পারে।

টিন সার্টিফিকেট থাকলে আপনাকে বাধ্যতামূলত ট্যাক্স রিটার্ন জমা দিতে হবে। যদি আপনার করযোগ্য আয় বা সম্পদ না থাকে তাহলে জিরো রিটার্ন দিতে পারবেন। তবে এই ঝামেলায় অনেকেই যেতে চান না। আবার ভালোভাবে বোঝেন না। তাই জিরো রিটার্নও জমা দেন না। এরপর পড়েন নানান ঝামেলায়।

অনেক সময় ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, ভিসা বা বিভিন্ন দাপ্তরিক কাজের জন্য টিন সার্টিফিকেট তৈরি করে থাকেন। এরপর পোহাতে হয় নানান ঝামেলা। চাইলে কিন্তু টিন সার্টিফিকেট বাতিল করতে পারেন এবং তা বিনামূল্যে। তবে এর জন্য নির্দিষ্ট কারণ দেখাতে হতে আপনাকে। কয়েকটি নির্দিষ্ট কারণ যদি আপনার থাকে তাহলেই কেবল আপনার টিন বাতিলের যোগ্য হবে।

টিন সার্টিফিকেট বাতিল করার কারণসমূহ

>> ব্যক্তিগত বা প্রতিষ্ঠানের ব্যবসা বন্ধ হওয়া: অনেক সময় প্রতিষ্ঠান বা ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর টিন সনদ বাতিল করা হয়।

>> দ্বৈত টিন গ্রহণ করা: যদি ভুলবশত একাধিক টিন সনদ পেয়ে থাকেন, তবে একটি বাতিল করতে হতে পারে।

>> টিন সনদ ব্যবহার না করা: যদি টিন সনদটি কোনো কাজে ব্যবহার না হয়ে থাকে এবং আপনি আর প্রয়োজনীয় মনে না করেন।

>> আয় কমে কর সীমার বাইরে চলে আসায় আর টিন সার্টিফিকেটের প্রয়োজন নাও হতে পারে। এসময় টিন সার্টিফিকেটটি বাতিল করতে পারেন।

>> কোনো বাংলাদেশি যদি কাজের জন্য দেশের বাইরে থাকেন এবং তার যদি বাংলাদেশে করযোগ্য কোনো আয় না থাকে তাহলে তিনি বাংলাদেশে কর দিতে বাধ্য নন। সেক্ষেত্রে তার বাংলাদেশে থাকাকালীন নিবন্ধিত টিআইএন সনদ বাতিলের আবেদন করতে পারেন।

>> এছাড়া কোনো করদাতা ব্যক্তি মৃত্যুবরণ করলে তার টিন সার্টিফিকেটটির আর প্রয়োজন থাকে না। তাই তার টিন সার্টিফিকেটটিও বাতিল করা যেতে পারে। পিতার মৃত্যুর পর টিআইএন বাতিল করার দায়িত্ব বর্তায় তার উত্তরাধিকারীদের উপর। এক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে যে বাবার এমন কোনো ব্যবসা আছে কি-না যার টিআইএন বাতিল করলে ব্যবসা সংক্রান্ত সকল কাগজপত্র বাতিল করে নতুন করে করতে হয়। এ ধরনের বড় জটিলতা তৈরি হলে, উত্তরাধিকারগণ মৃত বাবার টিআইএন বাতিলের আবেদন করতে পারবেন না।

টিন সার্টিফিকেট বাতিল করার প্রক্রিয়া

টিন সনদ বাতিল করার প্রক্রিয়া প্রধানত ন্যাশনাল বোর্ড অব রেভিনিউ (এনবিআর) বা জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এর মাধ্যমে সম্পন্ন হয়। চলুন দেখে নেওয়া যাক কীভাবে আপনি এটি বাতিল করতে পারেন।

অনলাইনে বাতিল করার প্রক্রিয়া
বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ই-টিন সার্টিফিকেট বাতিল করার জন্য একটি সহজ অনলাইন পদ্ধতি চালু করেছে। এজন্য-

>> প্রথমে এনবিআর nbr.gov.bd ওয়েবসাইটে যান।
>> লগইন করুন। যদি আপনার এনবিআর ই-টিন অ্যাকাউন্ট না থাকে, তাহলে সবার আগে সাইন আপ করে অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে হবে। যদি অ্যাকাউন্ট থাকে, তবে লগইন করুন।

>> এনবিআর-এর সাইটে গিয়ে টিন বাতিলের জন্য আবেদন ফর্ম পূরণ করুন। এই ফর্মে আপনাকে আপনার টিন নম্বর, পণ্য/সেবা বা ব্যবসার বিবরণ এবং বাতিলের কারণ সহ বিভিন্ন তথ্য দিতে হবে।

>> ফর্ম পূরণ করার পর সেটি সাবমিট করুন।

>> একবার আবেদন জমা দেওয়ার পর, এনবিআর আপনার আবেদনটি পর্যালোচনা করবে এবং কোনো অতিরিক্ত তথ্য প্রয়োজন হলে আপনাকে জানানো হবে। আবেদন গৃহীত হলে আপনাকে টিন বাতিলের ঘোষণা দেওয়া হবে।

অফলাইনে বা কাগজপত্রের মাধ্যমে বাতিল করার প্রক্রিয়া

যদি অনলাইনে আবেদন করা সম্ভব না হয়, তবে আপনি স্থানীয় রেজিস্ট্রেশন অফিস বা কাস্টমস অফিসে বাতিলের আবেদন করতে পারেন। এজন্য-

>> প্রথমে আপনার ব্যক্তিগত বা প্রতিষ্ঠানের সব তথ্য প্রস্তুত করুন। যেমন: টিন নম্বর, প্রতিষ্ঠানের নাম/ব্যক্তির নাম, ব্যবসার বা প্রতিষ্ঠানের অবস্থা (বন্ধ/অবসর) ইত্যাদি।

>> যখন জাতীয় রাজস্ব বোর্ড বা সংশ্লিষ্ট অফিসে যোগাযোগ করবেন, তখন আপনাকে নির্দিষ্ট কাগজপত্র জমা দিতে হবে, যেমন- টিন সার্টিফিকেট, প্রতিষ্ঠানের ব্যবসার বন্ধ হওয়ার ঘোষণা (যদি প্রযোজ্য হয়), আপনার জাতীয় পরিচয়পত্র।

>> পর পর কমপক্ষে তিন অর্থ-বছরের শূন্য কর রিটার্ন দাখিলের প্রাপ্তি স্বীকার পত্রের ফটোকপি সঙ্গে দিতে হবে।

>> এই কাগজপত্রগুলো পূর্ণাঙ্গভাবে দাখিল করার পর, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আপনার আবেদন পর্যালোচনা করবে এবং তারপর টিন বাতিল করা হবে।

>> একবার আপনার টিন সনদ বাতিল হলে, আপনাকে একটি টিন বাতিলের সনদ প্রদান করা হবে, যা আপনি পরে ব্যবহার করতে পারবেন।

টিন বাতিল করার পর, আপনি আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়ার জন্য আর বাধ্য থাকবেন না এবং আপনার নামের সঙ্গে যুক্ত কোনো ধরনের আয়কর নথি বা দায় থাকে না। কিন্তু একবার টিন বাতিল করলে তারপর যদি আপনি টিন ব্যবহার করতে চান তাহলে আবার নতুন করে আবেদন করতে হবে। পুরোনো টিন সার্টিফিকেট ব্যবহার করতে পারবেন না।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়