শিরোনাম
◈ আন্দালিব রহমান পার্থের স্ত্রীকে বিদেশ যাত্রায় বাধা ◈ যেভাবে আটক হন সাবেক এমপি কণ্ঠশিল্পী মমতাজ (ভিডিও) ◈ ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় সেনাবাহিনী ক্যাম্পের সহায়তা পেতে যোগাযোগের নাম্বার দেয়া হল ◈ দুই দিন আগে মা মারা গেছেন, কাল মেজবান, আমাকে এখন না ধরেন ভাই” (ভিডিও) ◈ দায়িত্ব গ্রহণের পর নিজ জন্মভূমিতে যাচ্ছেন কাল প্রধান উপদেষ্টা  ◈ সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাস আল খাইমাহ ৩ নারীকে গুলি করে হত্যা, গ্রেফতার ১ ◈ জনপ্রিয়তা ও রাজনৈতিক হিসাব-নিকাশে জোরালো দৌড়: বিএনপিতে ফিরতে চান বহিষ্কৃত সাক্কু ও কায়সার ◈ আবারো মামুন লায়লার দ্বন্দ্ব, প্রকাশ্যে এলো ঐশী-মামুনের অন্তরঙ্গ মুহূর্ত ! ভিডিও ◈ পাকিস্তানের সেনাপ্রধানকে কি আটক ? যা জানা গেলো (ভিডিও) ◈ এবার মোদির বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় যা বললেন পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ

প্রকাশিত : ০৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, ০১:১৪ রাত
আপডেট : ০৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, ০১:১৪ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

প্রাপ্তমনস্ক পুরুষদের জন্য

সাদিয়া নাসরিন

সাদিয়া নাসরিন: যদিও এখনো পর্যন্ত ‘প্রাপ্তমনস্ক’ কোনো পুরুষের সঙ্গে আমার দেখা হয়নি। বেশির ভাগ পুরুষেরই বয়স বাড়ে, আকার-আকৃতি বাড়ে, ভুড়ি বাড়ে, টাক বাড়ে, কিন্তু মগজ এবং মনন বাড়ে না। তারপরেও কিছু পুরুষ তো আছেন, যারা নিজেদের রেশ্যনাল মানুষ দাাব করেন। লেখাটা তাঁদের জন্য।  প্রথমেই জেনে রাখুন এবং বিশ্বাস করুন যে, একজন স্বাবলম্বী এবং আত্মবিশ্বাসী নারী কোনো প্রয়োজনেই পুরুষের ওপর নির্ভরশীল নয়। পারিবারিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক, শারীরিক, এমনকি মাতৃত্বের প্রয়োজনেও নারীর পুরুষকে দরকার হয় না। এটি পুরুষ জানে বলেই তাদের যেকোনো সম্পর্কে নারীর উপর মালিকানা প্রতিষ্ঠার দরকার হয়। এ সংক্রান্ত পড়ালেখা না থাকলে হুমায়ুন আজাদের ‘নারী’ আপনার প্রাথমিক পাঠ। এবার আসুন মূল আলোচনা, নারী-পুরুষের বিবিধ সম্পর্কের বেসিক নর্মস এ। 

একজন অগ্রসর পুরুষ হিসেবে নিজেকে দাবি করলে আপনাকে সর্ব ক্ষেত্রেই মনে রাখতে হবে, সম্পর্কের মূল সূত্র হলো ‘সিনসিরিয়াটি অব পার্পাস’ এবং ‘অনেস্টি অব পার্পাস’। এটা মন্ত্রের মতো মুখস্ত করবেন এবং প্র্যাকটিস করবেন।  আপনি হয়তো অনেক স্মার্ট এবং ক্যারিশমাটিক পুরুষ, লাখ মেয়ের ক্রাশ, একই সঙ্গে চৌকশ স্ত্রী এবং তিন চারটা গার্লফ্রেন্ড একসঙ্গে মেইনটেইন করতে পারেন। হু কেয়ারস? আপনার মূল ক্যারিশমা কিন্তু এই ‘সিনসিরিয়ারিটি অব পারপাস’ এবং ‘অনেস্টি অব পারপাস’ সম্পর্কে জ্ঞান এবং চর্চা। যদি আপনার প্রিয়তমা স্ত্রী ছাড়াও আপনার আরও তিনশ বান্ধবী থাকে এবং সবার কাছেই আপনি ওপেন অ্যান্ড ট্রাস্টেড, দিস ইজ ইয়োর ‘অনেস্টি অব পারপাস’। মনে রাখবেন, স্ত্রী, বন্ধু, প্রেমিকা বা মিসট্রেস, প্রত্যেকটা সম্পর্কের ধরন ভিন্ন, চাহিদা ভিন্ন এবং সকলেই যে যার মতো সম্মান পাওয়ার দাবিদার। সেই সম্মান দেওয়াটাই আপনার ‘সিনসিরিয়ারিটি অব পারপাস’। 

এই দুই জায়গায় যদি আপনি ক্যারিশমাটিক না হতে পারেন তাহলে, আপনি ‘গণি মিয়া একজন গরিব কৃষক’ ভিন্ন কিছু না। সুতরাং সম্পর্ক ব্যবস্থাপনার প্রথম ধাপেই আপনি ডিফাইন করবেন এই সম্পর্ক থেকে আপনি আসলে কী চান? আপনি সম্পর্কে ‘জড়াতে’ চান নাকি সম্পর্ক ‘করতে’ চান, অর্থাৎ যদি শুধু ‘কাঁঠাল খেতে চান উইদআউথ আঁঠা’ সেটা নিজে পরিষ্কার হন এবং অন্যপক্ষকেও স্পষ্ট করে বলুন। এখন দু’জন যদি একই উদ্দেশে একমত হন, তাহলে যতো খুশি কাঁঠাল খান। আর সমঝোতা না হলে সোজা রাস্তা মাপুন। কিন্তু কোনোভাবেই মানবিক-অমানবিক বিয়ে, বকুলবাগান, মুনিয়াপাখি, দুগ্ধের চিনি, ময়ূরের পেখম, মাথার তাজ, নয়নের মণি, এইসব গ্যাস বোম্বিং করে অন্যপক্ষকে ইমোশনাল এ্যাবিউজ করবেন না। এটা স্পষ্টতই শঠতা এবং প্রতারণা। যদিও কোনো স্বাধীন নারীকে মানসিকভাবে কানেক্ট করতে পারার মতো গভীরতা পুরুষের নেই, তবুও কোনো নারী মানসিক সঙ্গের জন্য আপনার সঙ্গে সম্পর্কে জড়াতে পারে। কিন্তু এই নারীকে আপনি বস্তুগত কিছু দিয়েই প্রলুব্ধ করতে পারবেন না, একসেপ্ট ‘কোয়ালিটি টাইম’। এ ধরনের নারীকে খুবই স্মার্টলি ডিল করতে হবে। 

আপনি যদি শর্টকোর্সে অভ্যস্ত হন, তবে এই নারী আপনার ‘কাপ অব টি’ নয়। বেশির ভাগ পুরুষ যেমন সম্পর্কের ক্ষেত্রে অবিশ্বস্ত এবং অসৎ, তেমনই প্রচুর নারীও আছেন যারা ‘বিশেষ স্বার্থে’ পুরুষের সঙ্গে সম্পর্ক করেন। সুতরাং আপনি যার সঙ্গে ইনভলব হচ্ছেন তাঁর চাহিদা সম্পর্কে ধারণা রাখুন। যদি আপনার সঙ্গে সম্পর্কের বেনিফিট হিসেবে সে তার ক্যারিয়ার গোছাতে চায় বা টাকা/গিফট/লিফট/বিদেশ ট্যুর চায় এবং আপনি সেটি দিতে রাজি থাকেন, তাহলে এটি আপনাদের বোথ পার্টি উইন উইন ম্যাচ। এখানে ম্যাচ শেষ হয়ে গেলে বা সব হিসাব চুকে যাওয়ার পরে আপনার ভাগে লাভের গুড় কম পড়লে অবশ্যই ‘ডাইনি তো আমারে ভুলায়া ভালায়া সব নিয়া গেলো’ বা ‘এই গোল্ড ডিগার আমারে ফাঁদে ফেলেছে’ টাইপের বলদা আলাপ দেবেন না। 

আপনি একজন স্মার্ট পুরুষ, রাজনীতি বুঝেন, কূটনীতি বুঝেন, অর্থনীতি বুঝেন, কর্পোরেট পলিটিক্স বুঝেন, সাম্রাজ্যবাদ, জঙ্গিবাদ, ব্যবসা-বাণিজ্য সবই বুঝেন, শুধু নারীর কাছে আপনি আলাভোলা খোকা হয়ে গেলেন, এই গল্প এখন আর চলে না। কোনো সম্পর্কে কমিটেড হয়ে থাকলে প্রায়োরিটি, প্রিভেসি, রেসপেক্ট, কমিটমেন্ট, এসব শব্দের ওজন মাথায় গেঁথে রাখবেন। ছোটখাট কমিটমেন্টও যদি করে ফেলেন সেটা রাখবেন। সিরিয়াস কোনো ইস্যুতে কমিটমেন্ট ফেইল করতেই পারে। কিন্তু সেটা প্র্যাকটিস হয়ে গেলেই কনসার্ন। সুতরাং তরল অবস্থায় কোনো কমিটমেন্ট করবেন না। সবসময় মনে রাখবেন, আপনি যেমন ভ্যালুয়েবল, আপনার সঙ্গীও ভ্যালুয়েবল। দু’জন দু’জনের ভ্যাল্যুর প্রতি দায়িত্বশীল হলে সম্পর্ক এমনিতেই লাগসই হয়। স্ট্রং রিমাইন্ডার, আপনার বান্ধবী বা প্রেমিকা বা মিসট্রেস কেউই কিন্তু আপনার সম্পত্তি না। আপনি তাদের সঙ্গে যতো খুশি ভিডিও অডিও চ্যাট করুন, কিন্তু কোনোভাবেই তাঁর অনুমতি না নিয়ে প্রাইভেট পার্ট দেখাবেন না বা দেখতে চাইবেন না। 

তিনি যদি ইশারা ইঙ্গিতে আপনাকে থামানোর চেষ্টা করে অবশ্যই সেই ইশারা বুঝবেন। ‘মাইয়া মাইনষের না মানে নয়বার হ্যাঁ’ জাতীয় নীতিতে অটল থেকে তাকে ফুসলাতে থাকবেন না। যদি সেরকম কিছু শেয়ার করেও ফেলেন, অবশ্যই সেটা ডিভাইসে সেইভ করবেন না।

হেলদি রিলেশনশিপের জন্য স্পেস এবং কেয়ার দুটোর ব্লেন্ডিং খুব জরুরি। বেশির ভাগ নারী পুরুষই এই ব্লেন্ডিংটা জানে না। আপনি স্পেস নিতে গিয়ে আপনার সঙ্গী যেন ইগনোরড এবং ইনইডিকোয়েট ফিল না করে তাঁর জন্য বিশেষ মিথষ্ক্রিয়া দরকার। এই মিথষ্ক্রিয়া বুঝলে তবেই আপনি স্মার্ট পুরুষ। 
লাস্ট বাট নট লিস্ট, শান্তি চাইলে এক জায়গায় থিতু হন। বৈচিত্র্য খোঁজার তো কোনো শেষ নেই। কিন্তু দিন শেষে কোথাও না কোথাও তো মানুষকে থামতে হয়, তাই না? তাই সময় থাকতে সম্পর্কের মূল্য দিন। যে আপনাকে যত্ন দেয় তাকেও যত্ন দিন। রতনে রতন হয়তো মেলে, কিন্তু যতন মেলে না (একই পয়েন্ট নারীদের জন্যও প্রযোজ্য)। অ্যান্ড দ্য লাস্ট লাইন, ‘তুমি নষ্ট হইয়ো মন্দ হইয়ো, হইয়ো না প্রেম বাজিকর’। অর্থাৎ- প্রয়োজনে অপ্রেমিক হন, তবু অসৎ লুচু গণি মিয়া হবেন না। ফেসবুক থেকে 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়