রেজা ঘটক: আমি তখন বাড়ি ভাড়া দিতে না পেরে পালিয়ে থাকি। মাঝে মাঝে সন্ধ্যার গোধূলী লগ্নে বাসার গলিতে উকি ঝুঁকি মারি। যদি ওই সময় ইলেকট্রিসিটি চলে যায়, তখন টুপ করে ঘরে ঢুকে, দ্রুত কিছু জামাকাপড় নিয়ে আবার সটকে পড়ি। বাড়িওয়ালী আন্টির চোখ এড়িয়ে এভাবে কয়েকদিন গেলো।
একদিন বিকালে বন্ধু নাহিদকে নিয়ে বাসার গলিতে গেলাম। আমি দোকানের আড়ালে দাঁড়িয়ে নাহিদকে শিখিয়ে দিলাম, কীভাবে বাইরের মেইন গেইট আস্তে আস্তে শব্দ না করে খুলে, মেইন গেইট খোলা রেখেই দ্রুত নীচতলার আমার রুমের তালা খুলে লন্ড্রি থেকে আনা জামাকাপড় বোগলদাবা করে, ঘরে তালা মেরে তারপর বাইরের গেটে তালা মেরে চলে আসবে। আমার শিখিয়ে দেওয়া বুদ্ধি অনুসরণ করে নাহিদ বাইরের গেট খুলে আমার ঘরের তালা খুলতে গিয়ে দেখে- কাহিনি জটিল কিছুক্ষণের মধ্যে নাহিদ বাইরের গেটের তালা মেরে আমার কাছে চলে আসে। হাতে কোনো জামাকাপড় নাই। জিজ্ঞেস করলাম, তুমি কি বাড়িওয়ালার সামনে পড়ে গেছিলা? নাহিদ কইলো, না। তাইলে? তোমার গেটের তালার সাথে আরও একটা বড় তালা মারা। এখন উপায়? নাহিদ বললো, বাড়িওয়ালীর সাথে দেখা করে অনুরোধ করো। কবে ভাড়া দিতে পারবা, একটা সম্ভাব্য তারিখ কইবা। সেদিন আর বাইরের গেটের কলিংবেল চেপে বাড়িওয়ালীকে ডাকার মত সাহস হয় নাই। আমার দশা হয়েছিল ইতালিয়ান নির্মাতা ভিট্টোরিও ডে সিকা’র ছবি ‘আম্বার্তো ডি’-এর মিস্টার আম্বার্তোর মতো। লেখক: কথাসাহিত্যিক ও চলচ্চি পরিচালক