রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স বহরে যুক্ত হচ্ছে নতুন উড়োজাহাজ। দ্রুত সময়ের মধ্যে লিজ নেওয়া হবে চারটি উড়োজাহাজ, আর দীর্ঘমেয়াদে কেনার জন্য চলছে এয়ারবাস ও বোয়িংয়ের প্রস্তাব যাচাই-বাছাই।
বিমান সূত্রে জানা গেছে, হজ মৌসুম ও আন্তর্জাতিক রুটে ফ্লাইট ঘাটতি মেটাতে জরুরি ভিত্তিতে লিজে অন্তত চারটি বিমান আনার সিদ্ধান্ত হয়েছে। বর্তমানে বিমানের বহরে ২১টি উড়োজাহাজ আছে। উড়োজাহাজ স্বল্পতার কারণে একাধিক আন্তর্জাতিক রুটে ফ্লাইট কমানো ও কিছু রুট বন্ধ করতে হয়েছে।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) বুসরা ইসলাম জানান, ‘নতুন বিমান কিনলেও তা আসবে ২০৩২ সালের দিকে। এর আগেই হজসহ ব্যস্ত মৌসুমে ফ্লাইট পরিচালনায় ঘাটতি দেখা দেবে। তাই আপাতত লিজেই চারটি এয়ারক্রাফট আনার পরিকল্পনা চলছে।’
২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর ঢাকা সফরকালে তৎকালীন সরকারকে ১০টি এয়ারবাস কেনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। সে অনুযায়ী বিমান বোর্ড চারটি উড়োজাহাজ কেনার অনুমোদন দেয়। প্রতিটির দাম ধরা হয় প্রায় ১৮০ মিলিয়ন ডলার, সঙ্গে প্রতিটি বিমানের জন্য অফেরতযোগ্য পাঁচ মিলিয়ন ডলার ‘প্রতিশ্রুতি ফি’ দেওয়ার প্রস্তাব ছিল এয়ারবাসের।
বিপরীতে বোয়িংয়ের প্রস্তাবে একই ধরনের বিমান বিক্রিতে প্রতিটি উড়োজাহাজের মূল্য ছিল তুলনামূলক কম এবং প্রতিশ্রুতি ফি মাত্র এক মিলিয়ন ডলার। কিন্তু ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ওই চুক্তি আর বাস্তবায়িত হয়নি। অন্তর্বর্তী সরকার প্রস্তাবগুলো পুনর্বিবেচনা করে আলোচনাটি স্থগিত করে।
নতুন করে এয়ারক্রাফট কেনার আলোচনা শুরু হয়েছে সম্প্রতি। বোয়িং নতুন প্রস্তাব দিয়েছে, আর এয়ারবাস আগের উচ্চমূল্য থেকে সরে এসে অপেক্ষাকৃত কম দামে নতুন প্রস্তাব পাঠিয়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এবার কোনো সিদ্ধান্তে যাওয়ার আগে দুই কোম্পানির প্রস্তাবই খুঁটিয়ে দেখা হচ্ছে, যেন পূর্বের মতো রাজনৈতিক বিবেচনায় নয়, আর্থিক যুক্তি ও বাস্তব চাহিদার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, বিমানের ফ্লাইট পরিচালনা স্বাভাবিক রাখতে দ্রুত লিজ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা জরুরি। একই সঙ্গে ভবিষ্যতের জন্য দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনায় স্বচ্ছতা ও মূল্যায়ন নিশ্চিত করাই এখন মূল চ্যালেঞ্জ। সূত্র: যুগান্তর