শিরোনাম
◈ জুলাই অভ্যুত্থানের সেই ঐক্য কোথায়? ◈ ব্রিটিশদের ‘নাকানিচুবানি’ দিতে ইরানের এক দশকের ‘ছায়া যুদ্ধ’: যেভাবে চলছে যুক্তরাজ্যের ভেতরে গোপন তৎপরতা ◈ চট্টগ্রাম কাস্টমস কমিশনার জাকির হোসেন বরখাস্ত, আরও কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা ◈ এবার অঝোরে কাঁদলেন মিসাইল ম্যান কিম জং উন (ভিডিও) ◈ জুলাই নিয়ে ‘আপত্তিকর’ ফেসবুক পোস্ট: পুলিশের বিরুদ্ধে ছাত্রদের অবরোধ-বিক্ষোভ ◈ নতুন উচ্চতায় রেমিট্যান্স: ২০২৪-২৫ অর্থবছরে প্রবাসী আয়ের সর্বোচ্চ প্রবাহ ◈ ডলারের দরপতনে রেকর্ড, ১৯৭৩ সালের পর সবচেয়ে বড় পতনে বিশ্ববাজারে আস্থার সংকট ◈ “৭১-এর মুক্তিযোদ্ধাদের মতোই চব্বিশের যোদ্ধাদেরও জাতি ভুলবে না” — তারেক রহমান ◈ গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে ঐক্য বজায় রাখার আহ্বান খালেদা জিয়ার ◈ শ্রীলঙ্কার বিরু‌দ্ধে বুধবার  সি‌রি‌জের প্রথম ওয়ানডে ম‌্যা‌চে  মু‌খোমু‌খি  বাংলাদেশ

প্রকাশিত : ০১ জুলাই, ২০২৫, ০৬:০১ বিকাল
আপডেট : ০২ জুলাই, ২০২৫, ০৪:০০ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

জাপানে বাঁচার যুদ্ধ হেরে গেলেন বাংলাদেশের আপন: না খেয়ে মৃত্যু এক মেধাবীর

জাপানে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে গিয়ে কেন লাশ হয়ে ফিরলেন আপন?


বিদেশে উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন নিয়ে মুন্সিগঞ্জের ছেলে আপন পাড়ি জমান জাপানে। সবকিছু ঠিকঠাকই চলছিলো তার। কিন্তু আচমা হঠাৎই গত দুই সপ্তাহ ধরে তার হদিস মিলছিলো না। অবশেষে গত বুধবার বাসার দরজা ভেঙ্গে তার লাশ উদ্ধার করে জাপান পুলিশ।

বাংলাদেশি এই তরুণ জাপানের সাইকামা শহরের কান্ত ইন্ডাস্ট্রিয়াল কলেজের প্রাক্তন ছাত্র। বাবা-মা এর স্বপ্ন পূরণে আটো মোবাইল ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে তিনি পাড়ি জমিয়েছিলেন  জাপানের শহরটিতে। আপনের মৃত্যুর কারণ বেশ হৃদয়বিদারক। এই আধুনিক যুগেও খাদ্যের অভাবে মৃত্যু হয় এই তরুণের। আপনের ঘনিষ্টজনদের সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ডিসেম্বর থেকেই আর্থিক নানা জটিলতায় হতাশায় ভূগছিলেন তিনি।

অর্থের অভাবে দিতে পারেননি ইউনিভার্সিটির টিউশন ফি। তখন থেকেই বিষন্নতায়  ভূগতে থাকা আপন এক সময় যোগাযোগ বন্ধ করে দেয় বন্ধুদের সাথেও। তার এই সমস্যার কথা আত্মীয় স্বজন থেকে শুরু করে সকলে জানালেও তাকে বিন্দু পরিমাণ সাহায্য করেনি কেউ। তার বাসার ভাড়া বাকি ছিলো, বাকি ছিলো বিদ্যুৎ, গ্যাস ও পানির বিলও। ফলে কিছু দিন থেকেই তার বাসায় গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানি সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। এ করণে মোবাইল চার্জ করার মত কোন পরিস্থিতিও তার ছিলো না। বন্ধ ছিলো তার ব্যবহৃত দুইটি সিম কার্ডই। পরিবারের সাথেও ছিলো যোগাযেগ বিচ্ছিন্ন।

আপনের প্রতিবেশিদের বরাতে তার ঘনিষ্টজনরা জানাচ্ছেন, আপনের মৃত্যুর আগের শেষ ১৫ দিন তাকে দেখতে পায়নি কেউ। সর্বশেষ যেদিন দেখেছিলো তাও রান্না ঘরের জানালার ফাঁক দিয়ে। আপন তখন মোবাইলের ফ্ল্যাশ জালিয়ে বলছিলো ‘কিছুই দেখতে পাচ্ছি না’ আর জানিয়েছিলো গত চার দিন যাবৎ কিছুই খাননি তিনি।

এরপরের গল্পটা হৃদয়বিদারক ও ভয়ঙ্করে ঠাসা। গহীন অঞ্চলের সেই একলা বাসার দরজার সামনে প্রতিবেশিরা খাবার দিয়ে গেলেও সেগুলো পড়েছিলো সেখানেই। তার সহপাঠীরাও দরজা ভাঙ্গার সাহস করেনি জাপানের কড়া আইন কানুনের জন্য। অবশেষে ওরা ঠিক করলো, সাথে পুলিশ, এম্বুলেন্স আর ফায়ার সার্ভিসের সহয়তা নিয়ে দরজা খুলে তাকে নিয়ে যাবে হাসপাতালে। 

কিন্তু নির্মম নিয়তি যেন আর তা হতে দিলো না। যতক্ষণে দরজা ভেঙ্গে ভিতরে ঢুকলো জাপান পুলিশ ততক্ষণে মৃত লাশ হয়ে পড়ে আছেন তরতাজা ২৬ বছর বয়সী তরুণ আপন। এক চোখ পুরো খোলা আর আরেক চোখের অর্ধেকটা নিভু নিভু ভাব। যখন লাশ বের করা হলো তখন তার ওজন ১০ কেজির বেশি ছিলো না বইে জানান তার এক সহপাঠী। জাপান পুলিশ ময়নাতদন্ত শেষে জানালো আপনের মৃত্যু হয়েছে আর ২-৩ দিন আগে।

আপনের এই মৃত্যু যেনো এই পাষণ্ড সমাজকে চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিলো কতটা নির্মম আর হৃদয়হীন হতে পারেন মানুষরূপী কিছু অমানুষরা। আজ হয়তো তার জীবন বেঁচে যেতো কেউ তার পাশে দাঁড়ালেই। আত্মীয় স্বজনরা মিলে কিছুটা সাহায্য করলেই আজ গল্পনা না খেয়ে মৃত্যুর বদলে হতে পারতো একজন বিদেশফেরত একজন প্রকৌশলীর কোন নতুন  আবিস্কারের।  উৎস: ইনকিলাব।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়