মনিরুল ইসলাম: গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে জাতীয় ঐক্য বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় গুলশানের বাসভবন ফিরোজা থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত ‘জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের শোক ও বিজয়ের প্রথম বর্ষপূর্তি’ উপলক্ষে বিশেষ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই আহ্বান জানান।
খালেদা জিয়া বলেন, “নতুন করে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। আমাদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে হবে, জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে এবং দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষায় ঐক্য ধরে রাখতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “বীর শহীদদের রক্তস্রোত ও মায়েদের অশ্রুধারা যেন বৃথা না যায়, তা নিশ্চিত করতে হবে। আসুন, আমরা সবাই শহীদ জিয়ার স্বপ্ন বাস্তবায়নে এবং নতুন বাংলাদেশ গঠনে ঐক্যবদ্ধ হই।”
খালেদা জিয়া অভিযোগ করেন, “গত ১৬ বছর ধরে আওয়ামী লীগ ফ্যাসিবাদী শাসন প্রতিষ্ঠা করতে বিরোধী মত দমন, গুম, খুন ও বিচারবহির্ভূত হত্যার মাধ্যমে গণতন্ত্র ধ্বংস করেছে। কিন্তু ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সেই ফ্যাসিবাদের পতন ঘটেছে।”
তিনি গুম-খুনের শিকারদের তালিকা প্রস্তুতের এবং তাদের পরিবারকে পুনর্বাসনের আহ্বান জানান। বলেন, “তাদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিতে হবে, সম্মানজনক ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে হবে।”
অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ ও বক্তৃতা
‘গণঅভ্যুত্থান ২০২৪ : জাতীয় ঐক্য ও গণতান্ত্রিক অভিযাত্রা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বিকেল ৩টায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। সভার শুরুতেই ‘জাতীয় ঐক্য ও গণতান্ত্রিক অভিযাত্রা’ শীর্ষক একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।
সভায় সভাপতিত্ব করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। স্বাগত বক্তব্য দেন বর্ষপূর্তি উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খান। বক্তব্য দেন মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, সালাহউদ্দিন আহমেদ, নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্না, জাফরপন্থী জাতীয় পার্টির মোস্তফা জামাল হায়দার, জামায়াতে ইসলামীর মাওলানা আব্দুল হালিমসহ বিভিন্ন দলের নেতারা।
এছাড়া উপস্থিত ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় ও শীর্ষস্থানীয় নেতারা, শহীদ পরিবারের সদস্য, আহত ব্যক্তিরা এবং দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত হাজারো নেতাকর্মী। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আব্দুল্লাহ আল মামুন ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. নাহরীন খান।
পেশাজীবী ও বিশিষ্টজনদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহ, কবি আবদুল হাই শিকদার, সাংবাদিক আনোয়ার আলদীন, অধ্যাপক ড. শামসুল আলমসহ অনেকে।