শিরোনাম
◈ ফ্রা‌ন্সের লিও শহ‌রের কসাই থেকে গাজার কসাই: ইতিহাসে বারবার অপরাধীদের বাঁচিয়েছে আমেরিকা ◈ রিজার্ভে বড় সাফল্য: আইএমএফের লক্ষ্য ছাড়িয়ে গেছে বাংলাদেশ, প্রবাসী আয়ে রেকর্ড প্রবৃদ্ধি! ◈ আদানির বকেয়ার সব টাকা পরিশোধ করেছে বাংলাদেশ ◈ মাঠে ছড়িয়ে থাকা লেবু ও  ডিম দে‌খে ম্যাচ খেলতে আসা ‌ক্রিকেটাররা ভয়ে পালালেন ◈ ভারতীয় ক্রিকেট দলের বাংলাদেশ সফরে আপত্তি মোদি সরকারের! ◈ উনি ক্লাসে বাজে ঈঙ্গিতপূর্ণ কথা বলার পাশাপাশি বডি শেমিং করেন ◈ এবার নিউ ইয়র্ক মেয়রপ্রার্থী মামদানিকে গ্রেপ্তারের হুমকি ট্রাম্পের! তীব্র প্রতিক্রিয়া ◈ বউ পেটানোয় শীর্ষে খুলনা ও বরিশালের মানুষ: বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (ভিডিও) ◈ ক‌ষ্টের জ‌য়ে ক্লাব বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনা‌লে রিয়াল মা‌দ্রিদ ◈ দুপু‌রে এ‌শিয়ান কাপ বাছাই‌য়ে স্বাগ‌তিক মিয়ানমা‌রের বিরু‌দ্ধে লড়‌বে বাংলাদেশ নারী দল

প্রকাশিত : ০২ জুলাই, ২০২৫, ০২:৩৬ রাত
আপডেট : ০২ জুলাই, ২০২৫, ১২:১৪ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

চট্টগ্রাম কাস্টমস কমিশনার জাকির হোসেন বরখাস্ত, আরও কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা

সরকারের নির্দেশ অমান্য করে নির্ধারিত দিনে কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকার দায়ে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের কমিশনার (চলতি দায়িত্ব) মো. জাকির হোসেনকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।

মঙ্গলবার এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। 

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) আওতাধীন কর্মকর্তা মো. জাকির হোসেন ২১ ও ২৮ জুন এনবিআর ও এর অধীনস্থ কাস্টমস এবং ভ্যাট ও আয়করসহ রাজস্ব আদায়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত অন্যান্য সব দপ্তর খোলা রাখার নির্দেশনা অমান্য করেছেন।  ২৮-২৯ জুন যথাক্রমে শনি ও রোববার কাস্টম হাউজ, চট্টগ্রাম বন্ধ রেখে আমদানি রপ্তানি কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত করে সরকারের বিপুল পরিমাণ রাজস্ব ক্ষতি করেছেন। 

এ কারণে তার বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক বিভাগীয় কার্যধারা গ্রহণের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। এই পরিপ্রেক্ষিতে সরকারি চাকরি (শৃঙ্খলা) বিধিমালা, ২০১৮ এর ধারা ৩৯(১) অনুযায়ী তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের বিষয়ে লিখিত ব্যাখ্যা চেয়ে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাকে আগামী সাত কর্মদিবসের মধ্যে এই ব্যাখ্যা দাখিল করতে বলা হয়েছে। জনস্বার্থে জারি করা এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে।  

স্বাধীনতার পর কোনো সরকার যে সিদ্ধান্ত নেওয়ার দুঃসাহস দেখায়নি, তা দেখিয়েছে কাস্টমস কমিশনার জাকির হোসেন। ১৬ ডিসেম্বর, ১৯৭১ সালে দেশ স্বাধীন হবার পর নানা চড়াই-উৎড়াই পাড়ি দিয়ে আজকের দিনে সমৃদ্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। সরকার পরিবর্তন, আন্দোলন, বিক্ষোভ, গণ-অভ্যুত্থান, দুর্ভিক্ষ, করোনা মহামারিসহ সব  সংকটে কোনোদিন দেশের ৯০ শতাংশ আমদানি-রপ্তানির প্রাণকেন্দ্র চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউস বন্ধ হয়নি। তবে শনিবার নজিরবিহীনভাবে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউস কমিশনার জাকির হোসেন কাস্টমস হাউসের সব কর্মকর্তা/কর্মচারীকে ঢাকায় এনবিআরের চলমান আন্দোলনে পাঠিয়ে দেন। তিনি নিজেও চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের সব কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়ে ঢাকায় আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন। তার একক সিদ্ধান্তে দেশের অর্থনীতির ব্যাপক ক্ষতিসাধন হয়েছে এবং  ১৮ কোটি জনগণের ওপর এর সরাসরি প্রভাব পড়েছে।

চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউস চট্টগ্রাম বন্দরের সঙ্গে সরাসরি সংযুক্ত, এটি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় কাস্টমস হাউস এবং দেশের মোট আমদানি-রপ্তানির প্রায় ৯০ শতাংশের বেশি এখান দিয়েই পরিচালিত হয়। আমদানির জন্য প্রতিদিন প্রায় ৩,০০০-৪,৫০০ কনটেইনার (TEUs) চট্টগ্রাম বন্দরে খালাস হয়। মূল্য হিসেবে গড় ১,০০০-১,৫০০ কোটি টাকা সমমানের পণ্য আমদানি হয় (বিশেষ করে চাল, গম, ভোজ্যতেল, যন্ত্রাংশ, কাঁচামাল ইত্যাদি)।

রপ্তানি পর্যায়ে প্রতিদিন গড়ে ২,০০০-৩,০০০ কনটেইনার রপ্তানি হয়; যার গড় মূল্য প্রায় ৫০০-৮০০ কোটি টাকা সমমান (বস্ত্র, চামড়া, হিমায়িত মাছ, কৃষি পণ্য ইত্যাদি)।

চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউস থেকে সরকার প্রতিবছর প্রায় ৭০,০০০ কোটি টাকা রাজস্ব আয় করে। বন্দরের মাধ্যমে প্রতিদিন ৫০ হাজারের বেশি মেট্রিক টন পণ্য লোড/আনলোড হয়।

উল্লেখ্য, এনবিআর সংস্কারের নামে সরকারের বিরুদ্ধে অব্স্থান নিয়ে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ গত দুই মাস ব্যাপী আন্দোলন অব্যাহত রাখে। এই সময়ে তারা কলম বিরতি ও অবস্থান কর্মসূচি এমনকি শাটডাউনের মতো কর্মসূচিতে চলে যান।মূলত তাদের উদ্দেশ্য ছিল দাবি আদায় নয়, সরকারকে বেকায়দায় ফেলা। দেশি-বিদেশি কুচক্রী মহলের ফাঁদে পা দিয়ে তা প্রকারন্তরে সাধারণ কর্মকর্তাদের ও সরকারকে জিম্মি করে ভিন্ন উদ্দেশ্য হাসিল করতে চেয়েছিলেন তারা। কিন্তু সর্বশেষ সরকার হার্ডলাইনে চলে গেলে তারা সব কর্মসূচি প্রত্যাহার করতে বাধ্য হয়। 

এদিকে একটি সূত্র জানায়, এই আন্দোলনে প্রকাশ্যে ও নেপথ্যে থেকে যারা ইন্ধন জুগিয়েছেন তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে সরকার আইনানুগ কঠোর ব্যবস্থা নেবে। এরই অংশ হিসেবে  চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের কমিশনার (চলতি দায়িত্ব) মো. জাকির হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো এবং আজ বুধ ও আগামীকাল বৃহস্পতিবার আরও বেশ কয়েকজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এদের মধ্যে যারা দুর্নীতিগ্রস্ত তাদের বিরুদ্ধে দুদক পৃথকভাবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। ইতোমধ্যে এ বিষয়ে একটি তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে। এদের কেউ যাতে দেশত্যাগ করতে না পারেন সে ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। উৎস: যুগান্তর।

 

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়