শিরোনাম
◈ একক দলকেই প্রাধান্য, জাতীয় ঐকমত্য উপেক্ষিত—মুহাম্মদ ইউনূস-তারেক রহমান বৈঠকের সমালোচনায় এনসিপি ◈ গণতান্ত্রিক রূপান্তর ও শিক্ষা-অর্থনীতির চ্যালেঞ্জে একমত ড. ইউনূস ও গর্ডন ব্রাউন ◈ টেস্ট চ‌্যা‌ম্পিয়ন‌শিপ ফাইনাল জিত‌তে আফ্রিকাকে ২৮২ রানের লক্ষ্য দিলো অস্ট্রেলিয়া ◈ অ‌ধিনায়ক মেহে‌দী মিরাজ বললেন, আমা‌দের দলে প্রতিভার অভাব নেই ◈ ‌ডি ব্রুইনা আর ম‍্যানসিটিতে খেল‌বেন না, যোগ দি‌লেন নাপোলিতে  ◈ ইরানে ইসরায়েলের হামলার তীব্র নিন্দা বাংলাদেশের ◈ ইসরাইলের ২০০ যুদ্ধবিমানের একযোগে হামলা: ইরানে নিহত ৭০ ছাড়িয়েছে, আহত তিন শতাধিক ◈ প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে তারেক রহমানের বৈঠক একটি টার্নিং পয়েন্ট: মির্জা ফখরুল (ভিডিও) ◈ গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে প্রাণ গেল ৫ জনের ◈ ইরান-ইসরায়েল উত্তেজনা: সামরিক সক্ষমতায় কে এগিয়ে

প্রকাশিত : ১০ জুন, ২০২৫, ০২:২৪ দুপুর
আপডেট : ১৩ জুন, ২০২৫, ১০:০০ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

জিনদেরকে আমরা দেখতে পাই না কেন? (ভিডিও)

মানুষের মতোই, আল্লাহর আরেক বিশেষ সৃষ্টি হচ্ছে জিন জাতি। তাদেরও রয়েছে বিবেক ও বুদ্ধি, আছে স্বাধীন ইচ্ছাশক্তি এবং দায়-দায়িত্ব। আমাদের মতোই তাদের সমাজ, ধর্ম এবং বিয়ের সম্পর্ক বিদ্যমান। তবে মানুষ ও জিনের মধ্যে মূল পার্থক্য—তাদের সৃষ্টির প্রকৃতি। মহান আল্লাহ পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেন:

“আমি মানুষকে সৃষ্টি করেছি শুকনো ঠনঠনে কাদামাটি থেকে। আর জিনকে সৃষ্টি করেছি প্রজ্জ্বলিত অগ্নিশিখা থেকে।”

এই অগ্নিসদৃশ সৃষ্টি হলেও, প্রশ্ন থেকেই যায়—আমরা জিনদের দেখতে পাই না কেন?

কোরআন ও হাদিসে জিনদের ব্যাখ্যা

পবিত্র কোরআনের বিভিন্ন আয়াতে জিনদের অদৃশ্য অস্তিত্বের কথা বলা হয়েছে। এক আয়াতে আল্লাহ বলেন:

“নিশ্চয় সে (শয়তান বা জিন) এবং তার দলবল তোমাদের এমন স্থান থেকে দেখে, যেখান থেকে তোমরা তাদের দেখতে পাও না।”

অর্থাৎ, তারা আমাদেরকে দেখতে পায়, কিন্তু আমরা তাদের দেখতে সক্ষম নই। নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর জীবনে একাধিকবার জিনদের সঙ্গে সাক্ষাৎ, নামাজ আদায়, কোরআন তেলাওয়াত এবং ইসলামের দাওয়াত দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনার বিবরণ কোরআন ও হাদিসে উল্লেখ আছে। এমনকি সাহাবীদের মধ্যেও কেউ কেউ বিশেষ পরিস্থিতিতে জিনদের দেখতে পেয়েছেন বলে হাদিসে জানা যায়। তবে স্বাভাবিক অবস্থায় মানুষ তাদের দেখতে পায় না, কারণ মানুষের ইন্দ্রিয়শক্তি সীমিত।

বিজ্ঞান কী বলে?

মানুষের চোখের দৃষ্টিসীমা একটি নির্দিষ্ট তরঙ্গদৈর্ঘ্যে সীমাবদ্ধ, যাকে বলে ভিজিবল স্পেকট্রাম। আমরা দেখতে পাই কেবল ৪০০ থেকে ৭০০ ন্যানোমিটার তরঙ্গদৈর্ঘ্যের আলো। এর নিচের আল্ট্রাভায়োলেট আর উপরের ইনফ্রারেড আলো আমাদের চোখে পড়ে না। একইভাবে, শ্রবণক্ষমতা ২০ হার্টজ থেকে ২০,০০০ হার্টজের মধ্যে সীমিত। এর নিচে ইনফ্রাসাউন্ড আর উপরে আল্ট্রাসাউন্ড—যা হাতি, তিমি ও বাদুরের মতো প্রাণীরা উৎপন্ন করলেও আমরা শুনতে পাই না।

এছাড়া মহাবিশ্বে রয়েছে এমন কিছু উপাদান যেমন—ডার্ক ম্যাটার এবং ডার্ক এনার্জি, যেগুলোর অস্তিত্ব নিশ্চিতভাবে জানলেও আমরা দেখতে পাই না। বিজ্ঞান বলছে, গোটা মহাবিশ্বের মাত্র ৫ শতাংশ আমরা দেখতে পাই; বাকি ৯৫ শতাংশ আমাদের দৃষ্টিসীমার বাইরে। তাই এমন অনেক অস্তিত্ব পৃথিবীতে রয়েছে যাদের আমরা উপলব্ধি করতে পারি না।

জিনদের অদৃশ্যতা: বিজ্ঞান ও ঈমানের যৌথ ব্যাখ্যা

জিনরা যেহেতু প্রজ্জ্বলিত অগ্নিশিখা থেকে তৈরি, হতে পারে তারা এমন এক ধরনের আগুন বা শক্তির উৎস যা আমাদের দৃশ্যমান সীমার বাইরে পড়ে। সাধারণ আগুনের আলো আমরা দেখতে পাই, কারণ তা দৃশ্যমান তরঙ্গদৈর্ঘ্যের ভেতর। কিন্তু জিনদের উপাদান আল্লাহ বিশেষভাবে এমনভাবে সৃষ্টি করে থাকতে পারেন যা আমাদের চোখে ধরা পড়ে না।

এজন্যই জিনদের অদৃশ্য থাকা শুধু ধর্মীয় বিশ্বাসে নয়, বৈজ্ঞানিকভাবেও যথার্থ।

জিন ও মানুষের সম্পর্ক
অনেক সময় দেখা যায় কেউ অস্বাভাবিক আচরণ করছে, যাকে ক’জন সুস্থ মানুষ মিলে সামাল দিতেও হিমশিম খায়। তখন বলা হয় তাকে ‘জিনে ধরেছে’—অর্থাৎ তার উপর জিনের প্রভাব পড়েছে। এ থেকেই বোঝা যায়, জিনরা মানুষের ওপর প্রভাব বিস্তার করতে পারে। এতে তাদের অস্তিত্ব যেমন স্পষ্ট, তেমনি তাদের অদৃশ্যতা নিয়েও আর কোনো সংশয়ের অবকাশ নেই।

জিনদের অস্তিত্বে বিশ্বাস করা ঈমানের অংশ। কোরআন, হাদিস এবং বিজ্ঞান—তিন দিক থেকেই আমরা বুঝতে পারি, মানবজাতির বাইরে আরো জগত রয়েছে, যেখানে শুধু জিন নয়, থাকতে পারে নাম না জানা বহু সৃষ্টিজীব। তাই ঈমানের পথে চলতে হলে জিনের অস্তিত্ব ও তাদের অদৃশ্য সত্তাকে মেনে নেওয়াই শ্রেয়। সূত্র: নিউজ২৪ টিভি

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়