শিরোনাম
◈ বিমানবন্দর থেকে পূর্বাচলে পথে তারেক রহমান (সরাসরি) ◈ ওসমান হাদি হত্যাকাণ্ড: ফায়ার কার্তুজ-বুলেট ব্যালিস্টিক পরীক্ষার নির্দেশ ◈ গাড়ি নেই বিমানবন্দর সড়কে, হেঁটে গন্তব্যে যাচ্ছেন মানুষজন ◈ সিলেট থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে উড্ডয়ন করেছে তারেক রহমানকে বহনকারী বিমান ◈ ভোটের আগেই বিজয়ী আওয়ামী লীগ, যেভাবে হয়েছিল ৫ জানুয়ারির নির্বাচন ◈ দীর্ঘ ৬ হাজার ৩১৪ দিন পর স্বপরিবারে প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশে ফিরলেন তারেক রহমান ◈ তারেক রহমানের সংবর্ধনায় আসার পথে দুর্ঘটনায় আহত ৩২ ◈ বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে অবিস্মরণীয় ঘটনা ঘটতে যাচ্ছে আজ: সালাহউদ্দিন আহমদ (ভিডিও) ◈ সিলেট পৌঁছেছেন তারেক রহমান ◈ আজ রাজধানীতে চলাচলে মানতে হবে যেসব নির্দেশনা

প্রকাশিত : ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৫, ১১:০৬ দুপুর
আপডেট : ২৪ ডিসেম্বর, ২০২৫, ০৬:০০ বিকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

গ্রিনল্যান্ড নিয়ে ডেনমার্কের সঙ্গে ট্রাম্পের নতুন বিরোধ: নিয়োগ দিলেন বিশেষ দূত

গ্রিনল্যান্ডের জন্য একজন বিশেষ দূত নিয়োগ দিয়ে ডেনমার্কের সঙ্গে নতুন করে বিরোধের সূত্রপাত করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আর্কটিকের বিশাল দ্বীপটি যুক্তরাষ্ট্রের 'লাগবে' উল্লেখ করে সেটিকে নিজেদের অংশ হিসেবে যুক্ত করার কথা পুনরায় বলেছেন তিনি।

লুইজিয়ানার রিপাবলিকান গভর্নর জেফ ল্যান্ড্রির ভূমিকা নিয়ে বিবিসির করা এক প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেন, জাতীয় সুরক্ষার জন্য আমেরিকার গ্রিনল্যান্ডের প্রয়োজন এবং আমাদের এটি পেতেই হবে।

তিনি বলেন, ডেনমার্ক রাজ্যের একটি আধা-স্বায়ত্তশাসিত অংশ গ্রিনল্যান্ডে বিশেষ দূত হিসেবে দায়িত্বের নেতৃত্ব দেবেন ল্যান্ড্রি। ট্রাম্পের এই পদক্ষেপে ক্ষুব্ধ হয়েছে কোপেনহেগেন। তারা জানিয়েছে, এ পদক্ষেপের 'ব্যাখ্যা' চেয়ে মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে তলব করবে দেশটির কর্তৃপক্ষ। 

গ্রিনল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এই দ্বীপটি নিজেরাই নিজেদের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে এবং এর আঞ্চলিক অখণ্ডতাকে সম্মান করতে হবে।

এদিকে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ দেওয়া এক পোস্টে গভর্নর ল্যান্ড্রি বলেছেন, গ্রিনল্যান্ডকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অংশ হিসেবে যুক্ত করার জন্য স্বেচ্ছাসেবক পদে কাজ করা সম্মানের।

জানুয়ারিতে দ্বিতীয় মেয়াদে হোয়াইট হাউসে ফিরে আসার পর থেকেই, গ্রিনল্যান্ডের কৌশলগত অবস্থান এবং খনিজ সম্পদের কথা উল্লেখ করে, সেটিকে নিয়ন্ত্রণে নেয়ার তার দীর্ঘদিনের পুরনো ইচ্ছার বিষয়টি আবারও সামনে আনেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।  

এমনকি দ্বীপটির নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার জন্য শক্তি প্রয়োগের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন ট্রাম্প। যদিও তারা এমন অবস্থান হতবাক করেছে ডেনমার্ককে। কারণ ন্যাটোর এই মিত্র দেশটি ঐতিহ্যগতভাবে ওয়াশিংটনের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কই বজায় রেখে চলেছে।

ট্রাম্প বলেছেন, আমাদের এটা সমাধান করতে হবে। আমাদের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য গ্রিনল্যান্ড দরকার, খনিজ সম্পদের জন্য নয়। ট্রাম্প বিশেষভাবে নিকটবর্তী সমুদ্রে সম্ভাব্য হুমকি হিসেবে চীনা এবং রাশিয়ান জাহাজের কথা উল্লেখ করেছেন।

প্রায় ৫৭ হাজার জনসংখ্যার গ্রিনল্যান্ড ১৯৭৯ সাল থেকেই স্বায়ত্তশাসন ভোগ করছে। তবে, প্রতিরক্ষা এবং পররাষ্ট্র নীতি বিষয়ক সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা এখনও ডেনিশদের হাতেই রয়েছে।

জনমত জরিপে দেখা গেছে, গ্রিনল্যান্ডের বেশিরভাগ বাসিন্দা ডেনমার্ক থেকে চূড়ান্ত স্বাধীনতার পক্ষে। একই সঙ্গে তারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অংশ হওয়ারও তীব্র বিরোধিতা করেছে।

ল্যান্ড্রির নিয়োগকে খুবই বিরক্তিকর বলে বর্ণনা করেছেন ডেনমার্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লার্স লোকে রাসমুসেন এবং ওয়াশিংটনকে ডেনিশ সার্বভৌমত্বের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতেও সতর্ক করেছেন তিনি।

ডেনিশ সম্প্রচারমাধ্যম টিভি টু-কে তিনি বলেছেন, যতক্ষণ পর্যন্ত আমাদের ডেনমার্ক, ফ্যারো দ্বীপপুঞ্জ এবং গ্রিনল্যান্ডের সমন্বয়ে একটি রাজ্য থাকবে, ততক্ষণ আমরা এমন কোনও পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারি না - যা আমাদের আঞ্চলিক অখণ্ডতাকে ক্ষুণ্ণ করে।

এ নিয়ে কড়া বার্তা দিয়েছেন গ্রিনল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জেন্স-ফ্রেডেরিক নিলসেন। তিনি বলেছেন, এই অঞ্চলটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্য দেশের সাথে সহযোগিতা করতে ইচ্ছুক, তবে কেবল পারস্পরিক শ্রদ্ধার ভিত্তিতে।

তিনি বলেন, একজন বিশেষ দূত নিয়োগে আমাদের কিছুই পরিবর্তন হবে না। আমরা নিজেরাই আমাদের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করি। গ্রিনল্যান্ড গ্রিনল্যান্ডবাসীর, এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতাকে সম্মান করতে হবে।

গ্রিনল্যান্ড ইস্যুতে সরব ইউরোপিয় ইউনিয়নও। সামাজিক মাধ্যম এক্স-এ করা একটি পোস্টে ইইউ কমিশনের সভাপতি উরসুলা ভন ডের লেইন বলেছেন, ইইউ ডেনমার্ক এবং গ্রিনল্যান্ডের জনগণের সাথে সম্পূর্ণ সংহতি প্রকাশ করে।

এর আগে সোশ্যাল মিডিয়ায় দেওয়া এক পোস্টে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেছিলেন, ল্যান্ড্রি বুঝতে পেরেছেন যে আমাদের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য গ্রিনল্যান্ড কতটা অপরিহার্য এবং তিনি মার্কিন স্বার্থকে এগিয়ে নেবেন।

যুক্তরাষ্ট্রের ধারণা, গ্রিনল্যান্ড ডেনমার্ক থেকে আলাদা এবং নতুন করে বিশেষ দূত নিয়োগের মাধ্যমে ধারণা করা হচ্ছে যে, তিনি দ্বীপটিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অংশ হতে সাহায্য করবেন।

রাষ্ট্রদূত নিয়োগের বিষয়টি সরকারি কূটনীতিকদের মতো নয়, এটি অনানুষ্ঠানিক এবং তাদের নিয়োগের জন্য আয়োজক দেশের অনুমোদনেরও প্রয়োজন হয় না। এ নিয়োগের মাধ্যমে এটি স্পষ্টভাবেই বোঝা যাচ্ছে যে, গ্রিনল্যান্ড নিয়ন্ত্রণে ট্রাম্পের উচ্চাকাঙ্ক্ষা এখনও অক্ষুণ্ণই রয়ে গেছে।

ভেনেজুয়েলার প্রতি তার বক্তব্য এবং সামরিক আগ্রাসনের মতো, এটিও ইঙ্গিত দেয় যে ট্রাম্প তার সাম্প্রতিক জাতীয় নিরাপত্তা কৌশল যেটি "পশ্চিম গোলার্ধ" নামে পরিচিত, সে অঞ্চলে আরও বেশি নিয়ন্ত্রণ পেতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।

এটি এমন একটি প্রভাব বলয় যা সমগ্র আমেরিকা জুড়ে থাকবে বলেই আশা করেন তিনি।

নিজের প্রথম রাষ্ট্রপতি মেয়াদে গ্রিনল্যান্ড কেনার চেষ্টা করেছিলেন ট্রাম্প। ডেনমার্ক এবং গ্রিনল্যান্ড সরকার উভয়ই ২০১৯ সালে ট্রাম্পের দেওয়া প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে বলেছিলেন, গ্রিনল্যান্ড বিক্রির জন্য নয়।

সূত্র: ইত্তেফাক

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়