ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র এসমাইল বাকেয়ি জানিয়েছেন, দেশটির পার্লামেন্ট পরমাণু অস্ত্র বিস্তার প্রতিরোধ চুক্তি বা নন-প্রলিফারেশন ট্রিটি (এনপিটি) থেকে বেরিয়ে যাওয়ার জন্য একটি আইন প্রণয়নের কাজ করছে। খবর: আল জাজিরা; বিবিসি
তবে তিনি একইসঙ্গে এ-ও বলেন, তেহরান গণবিধ্বংসী অস্ত্র (ডব্লিউএমডি) তৈরির বিরুদ্ধেই আছে।
এনপিটি চুক্তি ১৯৬৮ সালে স্বাক্ষর হয়, কার্যকর হয় ১৯৭০ সালে। ১৯০টি দেশ এনপিটিতে স্বাক্ষর করেছে।
এ চুক্তি অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, চীন, ব্রিটেন ও ফ্রান্স ছাড়া স্বাক্ষরকারী অন্য দেশগুলোর জন্য পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন নিষিদ্ধ। বাকি দেশগুলোকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক কর্মসূচি পরিচালনার অধিকার দেওয়া হয়েছে, যার তদারকি করে জাতিসংঘ।
২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরান পারমাণবিক চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর থেকে ইরান ধীরে ধীরে এনপিটি চুক্তির অধীনে দেওয়া অঙ্গীকার থেকে সরে আসতে শুরু করে। ট্রাম্প প্রশাসনের পুনরায় আরোপ করা কঠোর নিষেধাজ্ঞাগুলো ইরানের অর্থনীতিতে মারাত্মক প্রভাব ফেলেছে।
জরুরি বৈঠকে বসছে আইএইএ
এদিকে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর ওপর ইসরায়েলের সামরিক হামলার প্রতিক্রিয়া নিয়ে আলোচনার জন্য আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (আইএইএ) বোর্ড অভ গভর্নরস আজ সংস্থাটির সদর দপ্তরে এক জরুরি বৈঠকে বসছে।
ইরান এই বিশেষ অধিবেশন আহ্বান করে। রাশিয়া, চীন ও ভেনেজুয়েলা এতে সমর্থন দিয়েছে।
ইরান প্রথমে ইসরায়েলি হামলার নিন্দা জানানোর জন্য প্রস্তাব উত্থাপন করতে চেয়েছিল। তবে কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানিয়েছে, ওই প্রস্তাব সংখ্যাগরিষ্ঠ সমর্থন পাবে না বলে আশঙ্কা করা হচ্ছিল।
ফলে ইরান এখন সাধারণ বিবৃতির পক্ষে সমর্থন জোগাড়ের চেষ্টা করছে। এতে ইসরায়েলি হামলার প্রতি নিন্দা জানানো হলেও তা সরাসরি কোনো প্রস্তাব নয়।
এই জরুরি অধিবেশন এমন এক সময়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে, যখন ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে পাল্টা-পাল্টি সামরিক হামলা চলছে। ইসরায়েল সম্প্রতি ইরানের নাতানজ ও ফরদো পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর ওপর হামলা চালিয়েছে।
এনপিটির কাঠামোর আওতায় পারমাণবিক উদ্বেগ মোকাবিলায় সামরিক পদক্ষেপ গ্রহণ কখনও অনুমোদিত পন্থা নয়। ইরান জোর দিয়ে বলছে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও আইএইএ বোর্ডকে অবশ্যই এই হামলার নিন্দা জানাতে হবে।
তবে বর্তমান ভূরাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে এমন একটি আনুষ্ঠানিক নিন্দা ঘোষণার সম্ভাবনা অত্যন্ত ক্ষীণ বলেই মনে করা হচ্ছে।