শাহীন খন্দকার: বিএসএমএমইউর সাবেক উপ-রেজিষ্ট্রাট ডা. মীর্জা নাহিদা হোসেন বন্যা বলেন, যতোই দিন যাচ্ছে ডেঙ্গুজ্বর আরো ভয়াবহ হচ্ছে। চলতি বছর অক্টোবরে এসেও এই রোগেটি ঊর্ধ্বমুখী রূপধারণ করেছে। রাজধানীর পাশাপাশি সারা দেশে বাড়ছে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা।
ডা. মীর্জা নাহিদা বলেন, হঠাৎ করেই প্লাটিলেট কমে যাওয়ায় বাড়ছে আতঙ্ক। আর এতে বেড়েছে রোগীর রক্ত দেয়ার হার।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এমআইএস’র পরিচালক অধ্যাপক ডা. মিজানুর রহমান বলেন, যেকোনো জ্বরেই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। কারণ ডেঙ্গু নিয়ে আগের ধারণা বদলেছে। আর তাই ডেঙ্গু এখন আর শহুরে রোগ নয়।
স্কোয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ১২ বছরের আদিরা, গ্রামের বাড়ি টাঙ্গাইলে। বাসা ধানমন্ডি সেখানে থেকেই এডিসের কামড়ে কাবু আদিরা। পরে অবস্থার অবনতি হলে স্কোয়ারে ভর্তি করা হয়।
বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনিস্টিটিউটের বিছানায় লড়ছে গাজীপুরের রিফাত। সবশেষ রিপোর্টে তার রক্তে প্লাটিলেট ১৫ হাজার, তাই উদ্বিগ্ন তার বাবা ও মা।
শিশু হাসপাতাল ও ইনিস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ডা. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, সাধারণত ডেঙ্গুর প্রকোপ সেপ্টেম্বর থেকে কমতে থাকে। তবে এবার অক্টোবরে এসেও জেঁকে বসেছে। পহেলা অক্টোবর ছিল মৌসুমের সর্বোচ্চ রোগী। গত পাঁচ দিনের তিন দিনেই রোগী ছিল ৫০০ ওপরে।
তিনি বলেন, শরীরে র্যাশ কিছুটা কম থাকলেও তীব্র মাথাব্যথা আর শরীর ব্যথা দেখা দিচ্ছে আক্রান্ত রোগীর। রোগীর ক্ষেত্রে চতুর্থ দিনেই কমছে রোগীর প্লাটিলেট। আবার হঠাৎ করেই নেমে আসছে ৩০ হাজারের নিচে। সে ক্ষেত্রে জ্বর হলেই নিতে হবে চিকিৎসকের পরামর্শ।
শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অধ্যাপক ডা. রাসেল হোসেন বলেন, ইদানীং ডায়রিয়া বা বমি হওয়াটা অনেক কমে এসেছে। কিন্তু অল্প সময়ের মধ্যেই অর্থাৎ প্রথম ৪ থেকে ৫ দিনের মধ্যেই প্লাটিলেট কমে যাচ্ছে। তিনি বলেন, জ্বর হলে একেবারে অবহেলা করা যাবে না। চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। তবে প্লাটিলেট কমলেও গাইডলাইন মেনে চিকিৎসা দিলে ভয়ের কিছু নেই, বলছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
চলতি বছর ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ১৭ হাজার ২৯৫ জন, ৩৬০ জন ডেঙ্গু রোগী। হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা সেবা নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন, ১৫ হাজার ২৭ জন। এদিকে রোববার পর্যন্ত ভর্তি আছে ২ হাজার ২১০জন, মৃত্যুর সংখ্যা ৫৮। সম্পাদনা: মাজহারুল ইসলাম