চুল প্রত্যেকের জন্য সৌন্দর্যের একটি অনন্য উপাদান। অনেকের কাছে লম্বা, মজবুত এবং ঘন চুল কেবল সৌন্দর্যের লক্ষ্য নয় বরং স্বাস্থ্য এবং প্রাণশক্তির প্রতীকও বটে। অনেকের অল্প বয়সে চুল পেকে যায়। কম বয়সে চুল পাকার কারণ হিসেবে ধরা হয় ভিটামিন বি১২ এবং ভিটামিন ডি-এর অভাব। ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি পূরণ করতে রোদে বসে থাকা শুরু করুন। এ ছাড়া আপনার খাদ্যতালিকায় দুধ, দই, পনির, মাশরুম, ডিম ও চর্বিযুক্ত মাছ অন্তর্ভুক্ত করুন।
আপনি যদি চুলের বৃদ্ধি বাড়াতে এবং অকালে পেকে যাওয়া রোধ করার জন্য ব্যবহারিক ও কার্যকর উপায় খোঁজেন তবে আপনার জন্য কিছু পরামর্শ-
১. ভেতর থেকে পুষ্টি: চুলের স্বাস্থ্য শুরু হয় আপনার শরীরকে খাওয়ানো পুষ্টি দিয়ে। চুলের ফলিকলগুলো ভালোভাবে কাজ করার জন্য ভিটামিন এবং খনিজের ধারাবাহিক সরবরাহের ওপর নির্ভর করে। চুল পেকে যাওয়ার সমস্যা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অক্সিডেটিভ স্ট্রেস এবং নির্দিষ্ট পুষ্টির অভাবের ফলে ঘটে, বিশেষ করে ভিটামিন বি১২, কপার এবং ফোলেট।
প্রধান পুষ্টির মধ্যে রয়েছে:
* ভিটামিন বি১২: চুলের ফলিকলের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সাহায্য করে এবং পেকে যাওয়া বিলম্বিত করে।
* কপার: মেলানিন উৎপাদনে সহায়তা করে, যা চুলকে তার রঙ দেয়।
* অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট: বেরি, শাক-সবজি এবং বাদামে পাওয়া যায়, যা অক্সিডেটিভ স্ট্রেসকে নিউট্রালাইজ করতে সাহায্য করে।
* হাইড্রেশন: এটিও গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিদিন ৮-১০ গ্লাস পানি পান করলে মাথার ত্বক সুস্থ থাকে এবং চুলের গোড়া শক্তিশালী থাকে।
২. মানসিক চাপ দূর করুন
অকাল চুল পেকে যাওয়ার পেছনে নীরব অপরাধীদের মধ্যে একটি হলো দীর্ঘস্থায়ী মানসিক চাপ। এটি মেলানোসাইট - মেলানিন তৈরি করে এমন কোষগুলোকে প্রভাবিত করে, যা চুলের রঙের জন্য দায়ী রঙ্গক।
মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণের উপায়:
* প্রতিদিন ধ্যান বা গভীর শ্বাস-প্রশ্বাস।
* নিয়মিত শারীরিক কার্যকলাপ যেমন হাঁটা বা যোগব্যায়াম।
* ঘুম এবং বিশ্রামকে অগ্রাধিকার দেওয়া।
* মানসিক চাপ কমানো কেবল চুল পেকে যাওয়া রোধ করে না বরং সুস্থ চুলের বৃদ্ধিতেও সাহায্য করে।
৩. প্রাকৃতিক তেল দিয়ে ম্যাসাজ করুন
মাথার ম্যাসাজ কেবল চুলের বৃদ্ধির জন্য রক্ত সঞ্চালন বাড়ায় না বরং প্রাকৃতিক রঙ সংরক্ষণের জন্য মাথার ত্বককে পুষ্টি জোগাতেও সাহায্য করে। কিছু তেল চুল পাকার সমস্যা দূর করতে পরিচিত।
ব্যবহারের জন্য সেরা তেল:
* আমলকির তেল: ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ আমলকি রঙ্গক ধরে রাখতে কাজ করে।
* কালোজিরার তেল: কালোজিরার তেলে থাইমোকুইনোন থাকে, যা চুলের ফলিকল রঙ্গককে রক্ষা করে।
* কারি পাতার তেল: এটি চুলের রঙ সংরক্ষণের জন্য ব্যবহৃত হয়।
* সপ্তাহে কয়েকবার বৃত্তাকার গতিতে আলতো করে ম্যাসাজ করুন এবং তেলটি কয়েক ঘণ্টা বা সারারাত রেখে পরদিন ধুয়ে নিন।
৪. যেসব ভিটামিন চুলকে কালো রং দেয়: ভিটামিন এ, ভিটামিন বি৩, ভিটামিন সি, ভিটামিন ই, ভিটামিন বি১২ চুল কালো করে। চুল কালো করতে আপনার খাদ্যতালিকায় ভিটামিন এ, ভিটামিন বি৩, ভিটামিন সি এবং ভিটামিন ই অন্তর্ভুক্ত করুন।
৫. যেসব ফল চুল কালো করে: কমলা, লেবু, আমলকী, কিউইজাতীয় ফল খেলে চুল কালো হতে পারে। এই ফলের মধ্যে ভিটামিন সি, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এবং ফলিক এসিডের মতো পুষ্টি উপাদান পাওয়া যায়।