শিরোনাম
◈ আমদানি-রপ্তানিতে এনবিআরের নতুন নিয়ম: বাধ্যতামূলক অনলাইন সিএলপি দাখিল ◈ জুলাই স্মরণে শহীদ মিনারে ছাত্রদলের মোমবাতি প্রজ্বলন (ভিডিও) ◈ জুলাই বিদ্রোহ: কোটা সংস্কার থেকে গণঅভ্যুত্থান ◈ ভারতের বাংলাদেশ সফর নিয়ে যা বললেন আমিনুল ইসলাম বুলবুল ◈ ৪৪তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফল প্রকাশ, ক্যাডার পদে মনোনয়ন পেলেন ১৬৯০ জন ◈ ১৮ জুলাই নতুন দিবস ঘোষণা ◈ ডিসি-এসপি কমিটি ও ইভিএম বাদ, ভোটকেন্দ্র স্থাপনে নতুন নীতিমালা জারি করলো ইসি ◈ বাংলাদেশে আগ্নেয়াস্ত্র লাইসেন্স: কীভাবে পাবেন, কী কী শর্ত মানতে হবে? ◈ এবার থাইল্যান্ড থেকে ভারতগামী বিমানে ১৬ টি সাপ, এরপর যা ঘটল ◈ প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ফোনালাপ নিয়ে এবার মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের বার্তা

প্রকাশিত : ০১ আগস্ট, ২০২৪, ০৪:৫৩ দুপুর
আপডেট : ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ০৭:০০ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

খুবিতে শিক্ষকদের মৌন মিছিল, কুয়েটে মানববন্ধন

জাফর ইকবাল, খুলনা: শিক্ষার্থীসহ নিরাপরাধ জনসাধারণ হত্যা ও নিপীড়নের প্রতিবাদ এবং বিচারের দাবিতে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মৌনমিছিল এবং খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধীনতার স্তম্ভ ‘দুর্বার বাংলা’ পাদদেশে সাধারণ শিক্ষকবৃন্দের ব্যানারে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। 

কুয়েটের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. হেলাল আন-নাহিয়ানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ মানববন্ধনে বক্তব্যে দেন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রফেসর ড. মো. শাহাজান আলী, ইলেকট্রনিক্স কমিউনিকেশন এন্ড কমিউনিকেশন কৌশল বিভাগের অধ্যাপক শেখ শরীফুল আলম, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর মীর আব্দুল কুদ্দুস ও মানবিক বিভাগের প্রফেসর রাজিয়া।

এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- ইসি ডিপার্টমেন্টের প্রফেসর ড. শেখ মো. রবিউল ইসলাম, ম্যাথমেটিক্স বিভাগের প্রফেসর ড. বিএম ইকরামুল হক, মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রফেসর ড. আশরাফুল ইসলাম, একই বিভাগের অধ্যাপক মহিউদ্দিন অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর ফাহিম ইসলাম অনিকসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষকবৃন্দ।

মানববন্ধনে শিক্ষকবৃন্দরা বলেন, আমাদের শিক্ষার্থীদের তুলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, তাদেরকে নির্যাতন করা হচ্ছে এসবের প্রতিবাদে আজ আমরা দাঁড়িয়েছি কুয়েটের সাধারণ শিক্ষকদের পক্ষ থেকে। আমাদের সকলের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছে। আমরা প্রত্যেকে আমাদের শিক্ষার্থীদের অভিভাবক। অনেকে আমরা ছাত্র-ছাত্রীদের বাবা। সেই জায়গা থেকে আমাদের নিরপরাধ শিক্ষার্থীদের যেভাবে বিভিন্ন মিডিয়ায় দেখছি গুলি করে হত্যা করা হয়েছে, রাজপথে হত্যা করা হয়েছে, তার তীব্র প্রতিবাদ আমরা জানাচ্ছি। আমরা বিচার দাবি করছি এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি। 

আমাদের শিক্ষার্থীদের যেভাবে তুলে নেওয়া হচ্ছে থানায়, এটা কোনভাবেই কোন কল্যাণকর রাষ্ট্রের চরিত্র হতে পারে না। সরকারের কাছে আমাদের দাবি, কোন শিক্ষার্থী এবং শিক্ষককে নিপীড়ন করা যাবে না। আমরা আর কোন নির্যাতন দেখতে চাই না। একটা ছাত্রকে আর হত্যা না করা হয়, একটা নিরীহ জনগণ যাতে আর হত্যা না হয়, প্রত্যেকটি ছাত্র হত্যার বিচার করতে হবে, তাদেরকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। অন্যথায় শিক্ষকরা এই আন্দোলন থেকে সরবে না।

সারা দেশের সমগ্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষার পরিবেশ তৈরি করে দ্রুত খুলে দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শিক্ষার্থীদেরকে হত্যা, গ্রেপ্তার ও হয়রানির প্রতিবাদ জানিয়ে মানবন্ধনে শিক্ষকরা হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচারের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়সহ সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দ্রুত খুলে দেওয়ার দাবি জানান।

মানববন্ধন শেষে শিক্ষকবৃন্দ মৌন মিছিল সহকারে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রদক্ষিণ করে দুর্বার বাংলা পাদদেশে এসে কর্মসূচীর সমাপ্তি ঘোষণা করেন।

অপরদিকে চলমান কোটা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে খুলনা ও গোটা দেশে যে ন্যাক্কারজনক সহিংসতা চলছে তার বিরুদ্ধে বেলা সোয়া ১১টায় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের হাদী চত্বরে শিক্ষকরা মানববন্ধন করেন। এর আগে শিক্ষকরা মুখে ও মাথায় লাল পটি ধারণ করে পুরো ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করেন।

মানববন্ধনে শিক্ষকরা বলেন, কোটা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে চলমান সহিংসতা ও হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে আজকে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের এই মানববন্ধন। তরুণ প্রজন্ম এবং দেশের ভবিষ্যৎ ছাত্র-ছাত্রীদের উপর যে নৃশংসতা সংগঠিত হচ্ছে তাতে আমরা বাকরুদ্ধ, মর্মাহত ও ব্যথিত। এমন নারকীয়তা স্বাধীনতার পরে আর কখনো দৃশ্যমান হয়নি। মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল বৈষম্যের বিরুদ্ধে আজকের এই ছাত্র আন্দোলনও বৈষম্যের বিরুদ্ধে এজন্য এ আন্দোলনে যারা মৃত্যুবরণ করেছেন তাদেরকে আমরা শহীদ বলে চিহ্নিত করছি। এবং একই সাথে চলমান ছাত্র হয়রানি এবং এসব হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানাচ্ছি।

মানববন্ধনে আর্টিটেকচার ডিসিপ্লিনের ড. অনির্বাণ মুস্তাফা বলেন, এ প্রজন্মকে আমি স্যালুট জানাই। কারণ এই প্রজন্ম আমাকে শিখিয়েছে দাসত্বের শৃঙ্খল কিভাবে ভাঙতে হয়। এক্ষেত্রে আমার ছাত্ররাই আমার শিক্ষক ।আমি এখানে বিচারের দাবি নিয়ে আসিনি কারণ রাষ্ট্র যখন গুলি করে তখন বিচার পাওয়া যায় না।

মানববন্ধনে বক্তব্যকালে আরেক শিক্ষক বলেন, আন্দোলনে যারা শহীদ হয়েছেন তাদের আত্মার শান্তি কামনা করছি এবং এই হত্যাকাণ্ডের সাথে যারা জড়িত তাদের বিচারের জোর দাবি জানাচ্ছি। পাকিস্তান আমলে লুঙ্গি খুলে ধর্ম যাচাই করা হতো আর এখন মোবাইল দেখে রাজনৈতিক আদর্শ বিচার করা হচ্ছে। তাহলে পার্থক্য কোথায়? ছাত্রদের ম্যাচ ও বাসায় যেয়ে বিভিন্নভাবে হয়রানি করা হচ্ছে। ইঁদুরের মত ফাঁদ পেতে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। এসবের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

উল্লেখ্য, গতকালের (৩১ জুলাই) আন্দোলনে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ শিক্ষার্থীসহ খুলনার প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থীকে আটক করেছে পুলিশ। আন্দোলনে পুলিশের লাঠিচার্জ, টিয়ারগ্যাস নিক্ষেপ, রাবার বুলেট ও ফাঁকা গুলি ছোড়ার ঘটনায় অনেকে গুরুতর আহত হয়। 

এর আগে, মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) রাতে প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং রাজনৈতিক ব্যাক্তিবর্গের সাথে বৈঠকের পর আন্দোলন প্রত্যাহার ঘোষণা দেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের কিছু অংশ। কিন্তু পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা আন্দোলন প্রত্যাহার বিষয়ক প্রেস ব্রিফিংয়ে ‘জোরপূর্বক’ এবং ‘নোংরা রাজনীতির অংশ’ বলে প্রশ্নবিদ্ধ করে তা প্রত্যাখ্যান করে।

প্রতিনিধি/একে

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়