শিরোনাম
◈ চট্টগ্রামে জলাবদ্ধতা নিরসনে ৭৫ শতাংশ অগ্রগতি: প্রধান উপদেষ্টার কাছে রিপোর্ট পেশ ◈ বিএনপি প্রার্থীকে গুলির ঘটনায় নিন্দা ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি মির্জা ফখরুলের ◈ প্রাথমিকে ১০ হাজার ২১৯ পদে শিক্ষক নিয়োগ, আবেদন শুরু ৮ নভেম্বর ◈ মনোনয়ন বঞ্চিতদের মূল্যায়ন করার আশ্বাস বিএনপির ◈ গণসংযোগের সময় চট্টগ্রাম-৮ আসনের বিএনপি প্রার্থী এরশাদ উল্লাহ গুলিবিদ্ধ ◈ বিশ্বের প্রথম মুসলিম দেশ হিসেবে তামাক নিষিদ্ধে যে ইতিহাস গড়ল মালদ্বীপ ◈ ব্যাটিং ব্যর্থতায় আফগা‌নিস্তা‌নের কা‌ছে ১০২ রা‌নে হে‌রে গে‌লো বাংলা‌দে‌শের যুবারা ◈ হন্ডুরাস‌কে ৭ গোলে হারা‌লো ব্রাজিল ◈ তিন দফা দাবিতে ৮ নভেম্বর আন্দোলনে নামছেন প্রাথমিক শিক্ষকরা ◈ দেশে ডেঙ্গুর প্রকোপ কমছেই না: একদিনে ১০ জনের মৃত্যু, ১০৬৯ জন ভর্তি

প্রকাশিত : ০৫ নভেম্বর, ২০২৫, ০৭:৩১ বিকাল
আপডেট : ০৫ নভেম্বর, ২০২৫, ০৯:০০ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

কর আদায়ে স্থবিরতা, নাগরিক সুবিধাহীন মোরেলগঞ্জ পৌরসভা ঝুঁকিতে উন্নয়ন প্রকল্প

এস. এম সাইফুল ইসলাম কবির,বাগেরহাট জেলা প্রতিনিধি: দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বিশ্বের সর্ববৃহৎ ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চলসুন্দরবনের উপকূলে অবস্থিত বাগেরহাট জেলার বৃহত্তম উপজেলা মোরেলগঞ্জ। ১৯৯৮ সালে মোরেলগঞ্জ সদর, হোগলাবুনিয়া, বারইখালী ও বলইবুনিয়া ইউনিয়নের কিছু অংশ নিয়ে গঠিত হয় মোরেলগঞ্জ পৌরসভা। প্রতিষ্ঠার ২৭ বছর পেরিয়ে গেলেও নাগরিকরা এখনো ন্যূনতম নাগরিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত।

পৌরসভার তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে জনসংখ্যা প্রায় ৩০ হাজার, হোল্ডিং সংখ্যা ৬ হাজার ৩২০টি। ১৯৯৮ সালে ‘সি’ গ্রেডের পৌরসভা হিসেবে যাত্রা শুরু করা এ পৌরসভা ২০১৮সালে উন্নীত হয় ‘এ’ গ্রেডে। তবে কর আদায়ে ব্যর্থতা, অব্যবস্থাপনা ও জনঅসন্তোষের কারণে এখন এর ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।

অভিযোগ রয়েছে, দীর্ঘ ওই ২৭ বছরে পৌরসভার বাসিন্দারা ন্যূনতম নাগিরিক সুবিধা পাননি। নাগরিকদের নিকট থেকে পৌরসভা শুধু নিয়েছে। পৌর মেয়রের খামখেয়ালীপনার কারনে কর পরিশোধ করেননি প্রায় দুই তৃতীয়াংশ বাসিন্দা। ফলে প্রায় ৭০ লাখ টাকার কর বকেয়া পড়েছে। কর আদায়ের ব্যর্থতায় এখানে জনবল নিয়োগ করতে পারছেন না কর্তৃপক্ষ। উন্নয়ন বরাদ্দ কমেছে। কর আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হলে গ্রেড পতনসহ বাতিল হতে পারে কয়েকটি চলমান প্রকল্পের কাজও।

২০০১ সাল থেকে এখানে পৌর কর ধার্য করা হয়। সে থেকে এ পর্যন্ত কর বকেয়া পড়েছে ৭০ লাখ টাকার। বর্তমানে কর আদায়ের হার শতকরা ৩৭ ভাগ। প্রথম শ্রেণির পৌরসভা হিসেবে শতকরা ৮৫ ভাগ কর আদায়ের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। কর আদায় না হওয়ায় এর গ্রেড পতনসহ চলমান থাকা কয়েকটি প্রকল্পের কাজ বন্ধ হয়ে যেতে পারে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। চলতি অর্থ বছরে উন্নয়ন বরাদ্দও কমেছে। নতুন প্রকল্প প্রস্তাব গৃহীত হচ্ছেনা, কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগও বন্ধ রয়েছে।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, খাবার পানি সরবরাহ না থাকা, বিদ্যুৎ সরবরাহ না থাকা, কার্যকর ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকা, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা না থাকা ও খেয়াল খুশি মতো উচ্চ মাত্রায় কর নির্ধারণ করার কারণে ক্ষুব্ধ পৌরবাসীর কর বকেয়া পড়েছে। ২০০৪ সাল থেকে নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেতা মনিরুল হক তালুকদার এখানে একটানা ১৫ বছর মেয়র ছিলেন। কর নির্ধারণের বেলায় মেয়রের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটতো শতভাগ। তার দল ও পছন্দের লোকদের কর নির্ধারণ হতো সর্বনিম্ন মাত্রায়। অন্যদের বেলায় হতো মাঝারি থেকে সর্বোচ্চ মাত্রায়। এ কারণে অনেকের করের বোঝা মাত্রাতিরিক্ত বেড়ে গেলেও তারা পরিশোধ করতে পারেননি। এখানে যাতায়াত ব্যবস্থা বিপর্যস্ত। বছরে ৬ মাস ডুবে থাকেন কয়েকটি ওয়ার্ডের বাসিন্দারা। পানি নিস্কাশনের ড্রেনেজ ব্যবস্থা নেই। নেই খাবার পানি সরবরাহের কোনো ব্যবস্থাও।

চলতি বছরের মাঝামাঝি কয়েকটি সড়ক উন্নয়নের কাজ শুরু হয়েছে। সড়কবাতি স্থাপনের কাজও চলছে। ২০২৯ সালের মধ্যে এ পৌর সভায় প্রায় ১০০ কেটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ দৃশ্যমান হবার কথা রয়েছে। তবে, সবকটি প্রকল্প শেষ করতে হলে পৌর কর ৮৫ শতাংশ আদায় হতে হবে। অন্যথায় কয়েকটি প্রকল্প মাঝ পথে বন্ধ হয়ে যেতে পারে বলে বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনায় জানা গেছে। একই সাথে ‘এ’ গ্রেড থেকে অবনতি হয়ে ‘বি’ বা ‘সি’ গ্রেডে নেমে যেতে পারে এর মান।

এসব সমস্যার বিষয়ে মোরেলগঞ্জ পৌর প্রশাসক মোঃ হাবিবুল্লাহ  বলেন, পৌরসভাটির মান ধরে রাখার জন্য চেষ্টা করা হচ্ছে। কর বকেয়ার কারণে উন্নয়ন বরাদ্দ কমেছে। প্রকল্প আসছেনা। কর্মচারী নিয়োগ দেওয়া যাচ্ছেনা। এমন নানাবিধ সমস্যা সমাধানের জন্য চেষ্টা চলছে। এ ক্ষেত্রে পৌরবাসীর বকেয়া কর পরিশোধ একটি জরুরি বিষয়ে পরিণত হয়েছে।

মোরেলগঞ্জ পৌর প্রশাসক আরও বলেন, পৌরসভাটির বর্তমান রুগ্ন চেহারা পাল্টাতে কিছুটা সময় লাগবে। উন্নয়নমূলক কাজ দৃশ্যমান হতে শুরু করেছে। ২০৩০ সালের মধ্যে অনেক প্রকল্পের কাজ শেষ হবে। নিশ্চিত হবে কাক্সিক্ষত নাগরিক সুবিধা। তবে, এ ক্ষেত্রে কর পরিশোধসহ সবার সহযোগিতার প্রয়োজন রয়েছে। তবে এর জন্য পৌরবাসীর সহযোগিতা অপরিহার্য।”

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়