ফরহাদ হোসেন, ভোলা প্রতিনিধি: বঙ্গোপসাগরে জাল ফেলে বিপুল পরিমাণ ইলিশ পেয়ে খুশিতে বাড়ি ফিরছিলেন ভোলার সদর উপজেলার কোড়ালিয়া শান্তিরহাট গ্রামের সফিজল বেপারীসহ (সফিজল মাঝি) ১৯ জেলে। মোবাইল ফোনে পরিবারকে জানানো হয় তারা বাড়ি আসছেন। কিন্তু এরপর ৫ দিন আর তাদের খোঁজ ছিল না। কয়েক দিন আগে স্বজনরা জানতে পারেন ওই ১৯ জন ভারতের আলীপুর কারাগারে আছেন। এর পর থেকে সফিজল মাঝির বাড়িতে ভিড় জমান ভারতে আটক জেলেদের স্বজনরা।
বন্দী জেলেরা হলেন-সফিজল বেপারী (মাঝি), শাহে আলম, ছিডু মুন্সি, রাজীব চন্দ্র দাস, ট্রলারচালক আক্তার হোসেন, মিন্টু হাওলাদার, ফরিদ, আলমগীর, মোহাম্মদ ফরিদ, ইউনুছ, বাবুল সরদার, নীরব হোসেন, ইসমাইল, শাহে আলম হাওলাদার, গৌতম চন্দ্র দাস, জাকির হোসেন, সগির সিকদার, টুটুল ও শহীদুল ইসলাম। প্রত্যেকের বাড়ি ভোলা সদর উপজেলার দক্ষিণ দিঘলদী ইউনিয়নের ৭ ও ৮নং ওয়ার্ডে।
সফিজল মাঝির স্ত্রী জানান, দীর্ঘদিন পর সাগরে ইলিশ ধরা পড়ছে-এমন সংবাদে গত ৫ সেপ্টেম্বর ভোরে ১৮ জন জেলে নিয়ে তার স্বামী সাগরে মাছ ধরতে যান। সেই মাছ নিয়ে ফেরার পথে স্রোতে ও ঝড়ো বতাসে দিগান্ত হন তারা। এ সময় ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ সুন্দরবন টাইগার রিজার্ভ বেল্ট এলাকা থেকে তাদের আটক করে। ভারতের সংরক্ষিত সুন্দরবন এলাকায় প্রবেশ করায় ফিশিং বোট, জাল, মাছসহ তাদের আটক করা হয় বলে বিএসএফের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। এদিকে ১৯ জেলে ভারতের কারাগারে আছেন-এমন খবর শুনে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন স্বজনরা। কী করবেন, কার কাছে যাবেন, কেমন করে ছাড়িয়ে আনবেন-এই চিন্তায় স্বজনদের ঘুম নেই। তাদের পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী না থাকায় অনেকের ঘরে হাঁড়ি চড়েনা। শিশু সন্তানদের নিয়ে না খেয়ে আছেন তারা।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মেহেদী হাসান বলেন, জেলেদের উদ্ধারে সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোয় চিঠি পাঠানো হবে। ভোলার জেলা প্রশাসক আজাদ জাহান বলেন, প্রকৃতভাবে মাছ ধরতে যাওয়া জেলে হলে অবশ্যই তাদের উদ্ধারে সরকার চেষ্টা করবে।