কিবরিয়া চৌধুরী, হবিগঞ্জ প্রতিনিধি : সিলেট থেকে নবীগঞ্জ ফেরার পথে চলন্ত বাসে এক কলেজ ছাত্রীকে পালাক্রমে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। ভয়াবহ এই ঘটনায় সেনাবাহিনী ও পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে বাস চালককে আটক এবং ভুক্তভোগী কিশোরীকে উদ্ধার করেছে। রবিবার (১৫ জুন) দিবাগত রাত আনুমানিক ১২টার দিকে নবীগঞ্জ-আউশকান্দি সড়কের ছালামতপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে বাসচালককে আটক এবং ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ জানায়, ধর্ষণের শিকার কিশোরী বানিয়াচং উপজেলার বড় বাজার এলাকার বাসিন্দা এবং ঢাকার ফার্মগেটের একটি কলেজে একাদশ শ্রেণিতে অধ্যয়নরত। ওই দিন তিনি ঢাকার ফার্মগেট থেকে ‘বিলাশ পরিবহন’ নামের একটি বাসে করে বাড়ি ফিরছিলেন। তার শায়েস্তাগঞ্জে নামার কথা থাকলেও ঘুমিয়ে পড়ায় বাসটি সিলেট পর্যন্ত চলে যায়। সিলেটে পৌঁছার পর ঘুম ভাঙলে ওই কিশোরী নবীগঞ্জ হয়ে আজমিরীগঞ্জ যাওয়ার উদ্দেশ্যে সিলেট-নবীগঞ্জ রুটে চলাচলকারী ‘মা এন্টারপ্রাইজ’ নামের একটি বাসে ওঠেন। বাসটি বিভিন্ন স্টপেজ থেকে যাত্রী উঠানো-নামানোর সময় ধীরে ধীরে ফাঁকা হয়ে পড়ে। শেরপুর এলাকায় পৌঁছার পর অন্যান্য যাত্রীরা নেমে গেলে বাসে ওই কিশোরী একা হয়ে পড়েন। এরপর চলন্ত অবস্থায় বাসের হেলপার লিটন মিয়া এবং পরে চালক শাহ্ সাব্বির মিয়া পালাক্রমে তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। বাসটি নবীগঞ্জ উপজেলার আউশকান্দি এলাকায় পৌঁছালে কিশোরী জোরে চিৎকার শুরু করেন। তার চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন দ্রুত সেনাবাহিনী ও পুলিশকে খবর দেন।
খবর পেয়ে নবীগঞ্জ থানা পুলিশ ও সেনাবাহিনীর একটি দল ছালামতপুর এলাকায় অবস্থান নেয়। পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় বাসের গতিরোধ করে বাসচালক শাহ্ সাব্বির মিয়াকে আটক এবং ভুক্তভোগী কিশোরীকে উদ্ধার করা হয়। তবে অভিযুক্ত হেলপার লিটন মিয়া আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতি টের পেয়ে বাস থেকে পালিয়ে যায় এবং এখনও পলাতক রয়েছে।
এ বিষয়ে নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মো. কামরুজ্জামান বলেন, “স্থানীয়দের সহযোগিতায় সেনাবাহিনী ও পুলিশ বাস চালককে আটক করেছে এবং ভিকটিমকে উদ্ধার করেছে। আটক ব্যক্তির পরিচয় যাচাই-বাছাই চলছে, পরে বিস্তারিত জানানো হবে। এ ঘটনায় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন।” এ ঘটনায় এলাকায় চরম চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে এবং অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে স্থানীয়রা।