আকবরশাহে পাহাড় কেটে রাস্তা কে করলো? সিডিএ করলো। আপনি পরিবেশের দিকে আঙুল দেওয়ার আগে নিজের দিকে দেখবেন। যে আপনি কি করেন—চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) চেয়ারম্যান প্রকৌশলী নুরুল করিমের মন্তব্যের পর ক্ষোভ ঝারে এসব কথা বলেন পরিবেশ ও জলবায়ু উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
রোববার (১৯ জানুয়ারি) বিকালে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনকল্পে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় এমন মন্তব্য করেন পরিবেশ উপদেষ্টা।
সভার শেষ মুহূর্তে সিডিএ চেয়ারম্যান বলেন, ‘পাঁচ হাজার স্কয়ার মিটার পর্যন্ত পরিবেশ থেকে বলা হয়, পাহাড় কাটতে পরিবেশের ছাড়পত্র লাগে না।’
উত্তরে উপদেষ্টা রিজওয়ানা বলেন, ‘পুরোটাই ভুল ইনফরমেশন। আপনি পরিবেশের দিকে তাকাবেন না। দেশের আইন পাহাড় কাটা যাবে না। আপনি সিডিএ হিসেবে, আপনি আটকাবেন। পরিবেশ তার কাজ করলো না, ফেলে দিলাম পরিবেশকে। আপনি আপনার কাজ কতুটুকু করেন, সেটা আমাকে বলেন। আকবরশাহে পাহাড় কেটে রাস্তা কে করলো? সিডিএ করলো। আপনি পরিবেশের দিকে আঙুল দেওয়ার আগে নিজের দিকে দেখবেন যে, আপনি কি করেন।’
তিনি এ সময়ে ক্ষুদ্ধ হয়ে আরও বলেন, ‘বাড়ির অনুমতির জন্য পরিবেশ তো, পাহাড়ে বাড়ি বলছে না। যেই ল্যান্ড রেকর্ডের কথা বলছেন, ল্যান্ড রেকর্ডে তো পাহাড় নেই, ওটা বাস্তবে বিশাল পাহাড়।’
এর আগে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের তিন উপদেষ্টাসহ বিভিন্ন সংস্থা ও রাজনৈতিক ব্যক্তিরা জলাবদ্ধতা নিরসনে পরামর্শ ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলাদা বৈঠক করেন। পরে সাংবাদিকদের কাছে বৈঠকে সিদ্ধান্তগুলো তুলে ধরেন বন, পরিবেশ ও জলবায়ু উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
এদিকে পলিথিনের বিরুদ্ধে প্রথমে পর্যবেক্ষণ, এরপর কঠোর অভিযান চালানো হবে জানিয়ে পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা পলিথিনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু করলাম। এক মাস আমরা সুপারশপগুলোতে জোর দিব, এরপর কাঁচাবাজারে। আর এর পরেই আমরা পুরোপুরি অভিযানে চলে যাব, প্রোডাকশন যেখানে হয়। এক্সপোর্টের নামে প্রোডাকশন করে মার্কেটে ছাড়া, এটা করা যাবে না। পলিথিনের বিকল্প আমাদের সবার কাছেই আছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ঢাকা শহরের সুপার শপিং মলগুলো হতে ৯০ শতাংশ পলিথিন দূর করা গেছে। সেখানে কাপড়, কাগজ ও পাটের ব্যাগ ব্যবহার করা হচ্ছে। পলিথিন বন্ধে যুবকদের সংশ্লিষ্ট করা হচ্ছে। মার্কেট মনিটরিং এর জন্য কমিটি করা হয়েছে। পলিথিনের ক্ষতিকর প্রভাব আমাদের পরিবেশ, জীববৈচিত্র্য এবং স্বাস্থ্যকে হুমকির মুখে ফেলেছে। নিষিদ্ধ ঘোষিত পলিথিনের ব্যবহার বন্ধ করতে সরকার, ব্যবসায়ী, ভোক্তা এবং স্থানীয় জনগণের সমন্বিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন।’
সভা শেষে পরিবেশ উপদেষ্টা চট্টগ্রামের কাজির দেউড়ি কাঁচাবাজার পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি দোকানদার ও সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলেন এবং নিষিদ্ধ পলিথিনের ব্যবহার রোধে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য সবাইকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান।
আপনার মতামত লিখুন :