সনত চক্র বর্ত্তী,ফরিদপুর :ফরিদপুরে খেজুরের রস দিয়ে গুড় তৈরিতে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন গাছিরা। শীত আসলেই শুরু হয় খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ শেষে গুড় তৈরির প্রস্তুতি। শীতের আমেজের সাথে যেন খেজুরের গুড়ের কদর বেড়ে যায়। তাই শীতের শুরু থেকেই গাছিরা প্রস্তুত করতে শুরু করেছেন খেজুর রসের গুড়। তাদের তৈরি ভেজালমুক্ত ও সুস্বাদু গুড় জেলার চাহিদা মিটিয়ে যাচ্ছে পাশ্ববর্তী জেলাগুলোতে। মান ঠিক রাখতে গাছি ও তরুণ উদ্যোক্তাদের পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে কৃষি বিভাগ।
জানা যায়, কাকডাকা ভোরে খেজুরের রস সংগ্রহে বেরিয়ে পড়েন গাছিরা। গাছ থেকে নামিয়ে আনেন রস ভর্তি হাঁড়ি। এরপর তা নিয়ে ছোটেন চুলার কাছে। টিনের বড় পাত্রে রস ঢেলে জ্বাল দিয়ে শুরু হয় গুড় তৈরির প্রক্রিয়া। আস্তে আস্তে রস শুকিয়ে রূপ নেয় সুস্বাদু গুড়ে। ফরিদপুরের তাম্বুলখানাজুড়ে দেখা মেলে এ কর্মযজ্ঞ।
গাছিরা বলেন, আগের দিন বিকেলে গাছ কেটে হাঁড়ি বসানো হয়। পরের দিন ভোরবেলা রস সংগ্রহ করে গুড় তৈরির প্রক্রিয়া শুরু হয়। উৎপাদিত গুড় বাজারে বিক্রির পাশাপাশি স্থানীয়দের কাছেও বিক্রি করা হয়।
ফরিদপুরের খেজুরের গুড় ও পাটালির কদর দেশজুড়ে। এটি কিনতে ভিড় করেন অন্য এলাকার মানুষও। জেলার চাহিদা মিটিয়ে এ গুড় যাচ্ছে পাশ্ববর্তী জেলার বিভিন্ন স্থানে। প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬শ টাকা দরে। ক্রেতারা বলেন, ভেজালমুক্ত রস ও গুড় নেয়ার জন্য গাছি ও উৎপাদনকারীদের কাছে ছুটে আসা।
খেজুর গুড়ের ঐতিহ্য ধরে রাখতে নিজ উদ্যোগে ৬শ গাছ কিনেছেন তরুণ উদ্যোক্তা এনামুল হাসান গিয়াস। তিনি জানান, রাজশাহী ও যশোরসহ বিভিন্ন অঞ্চল থেকে গাছিদের আনতে হয়। এতে বেড়ে যায় খরচ।
কৃষি বিভাগ বলছে, নতুন করে খেজুর গাছ লাগানোর পাশাপাশি উদ্যোক্তাদের সহযোগিতা দেয়া হচ্ছে। ফরিদপুর সদরের কৃষি কর্মকর্তা মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, দেশের অনেক জায়গাতেই ভেজাল গুড় তৈরি হয়। তবে ফরিদপুরের তরুণ উদ্যোক্তাদের মধ্যে এ প্রবণতা নেই। তাই খেজুর গাছ লাগানোর পাশাপাশি তাদের নানা বিষয়ে পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।
উল্লেখ,জেলায় কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, ছোট-বড় দেড় লাখের বেশি খেজুর গাছ রয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :