ডেস্ক রিপোর্ট : অনন্ত জলিলের ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হতেই নানা ধরনের আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়। তার ভিডিও বার্তা নিয়ে এরইমধ্যে দুটি পক্ষ সৃষ্টি হয়েছে। একপক্ষ অনন্ত জলিলের কথার সমর্থন করেছেন। আবার অনেকে এ চিত্রনায়কের বক্তব্যের বিরোধিতা করছেন। ঢাকাই সিনেমার চিত্রনায়ক অনন্ত জলিলের ইন্টারভিউ নিতে গিয়ে যে ফ্যাসাদে পড়ে ছিলেন লেখক, গীতিকার, নির্মাতা ও সাংবাদিক ইশতিয়াক আহমেদ। তা জানতে হলে আপনাকে তার স্ট্যাটাসটি পড়তেই হবে। তাহলে আর দেরি কেন, পড়ে ফেলুন তার স্ট্যাটাসটি, বুঝতে পাড়বেন অনন্ত জলিল কোন লেভেলের খেলোয়ার!
“আমার অনন্ত জলিল দর্শন।
সাল ঠিক মনে নাই। আমার সাবেক এক সম্পাদক বেশ অর্ডারের সুরে জানিয়ে দিলেন, অনন্ত জলিলের একটা ইন্টারভিউ দেখতে চাই।
মহাবিপদে পড়ে গেলাম।
জলিল সাহেব তখন আকাশের চাঁদ। কিন্তু আমি কোনওদিন কোথাও ঠেকিনি। আল্লাহ কোথাও না কোথাও উপায় রেখে দিয়েছেন।
এক বড় ভাইয়ের কথা মাথায় এলো। তিনি সেই মই নিয়ে বসে আছেন। যাতে চড়ে জলিলকে ধরা যাবে।
বড় ভাই দয়ার সাগর। বলা মাত্রই জলিলের পিএসকে কল দিয়ে বললেন, আমি যাবো।যাতে বলে রাখে।
গেলাম তার ফ্যাক্টরি। এজে গ্রুপে।
নাম পরিচয় দেওয়ার পর ব্যাপক আতিথেয়তা। পিএসের নাম ছিলো সম্ভবত সজীব।
কিন্তু প্রশ্নের শুরুতে ক্ষেপে গেলেন জলিল সাহেব।
জানতে চাইলাম, এই যে দেশের অর্ধেক মানুষ আপনাকে পছন্দ করে আর অর্ধেক করে না সেটা কেমন লাগে?
তিনি মানতে নারাজ। তার পরিসংখ্যান মতে, ১ পারসেন্ট মূর্খ লোক তাকে অপছন্দ করে।
জলিল সাহেবের এখানে এসেছি তর্ক বেশি করা যাবে না। বের করে দিতে পারেন। তাই সহমত জানালাম।
তারপর শুরু হলো সিনেমার গল্প। তিনি দেশের সিনেমাকে এমন এক জায়গায় নিতে চান যা আর কেউ পারবে না।
বলে তিনি একটা সিনেমার নাম বললেন। এমন সিনেমা বানাতে চান। স্লাম ডগ মিলিওনিয়ার।
কিন্তু এটার উচ্চারন এমনভাবে করলেন, আমার মাথা ঝিম খেয়ে গেলো।
অডিওটা রেকর্ড আছে বোধ হয়।
সেই নামের উচ্চারন শুনলে হুজুররা ক্ষেপে যাবে।
যাই হোক।
এরপর যত প্রশ্নই করি, তিনি একমত হন না। কারণ তিনি জেনে গেছেন তার ছবিই সেরা।
যতই অন্য উদাহরন টানি, তিনি বিরক্ত হন। আর বারবার বলেন, এই জন্য সাংবাদিকদের ইন্টারভিউ দিতে চাই না।
এবং বলে তিনি, তার পিএস সজীবকে বললেন, সামনে কেউ ইন্টারভিউ নিতে চাইলে এক কোটি টাকা দিতে হবে বলবা।
আমি আকাশ থেকে পড়লাম, বলে কী এই লোক?
এটা কেমন অ্যামাউন্ট?
সবশেষে তিনি বিরক্ত হয়ে গেলেন যেখানে, জানতে চাইলাম ম্যানচেস্টারে কোথায় পড়তেন?
তিনি উঠে দাঁড়ালেন।
এটা কেমন প্রশ্ন?
সাংবাদিকরা এমন প্রশ্ন কেনো করবে?
অ্যাই আপনার সাথে আর কথা বলবো না।
বলে চলে গেলেন।
আমি এবং ফটোগ্রাফার আসাদ বসে রইলাম।
কী করবো?
হঠাৎ এক লোক এসে বলল, দ্রুত নীচে যান। স্যার ডাকে।
গেলাম।
গিয়ে দেখলাম, একদল এলাকাবাসীর মাঝে জলিল সাহেব দাঁড়িয়ে আছেন আমাকে এটা প্রমাণ করতে যে, কত মানুষ তাকে ভালোবাসে।
আমি লোকটার বুদ্ধির প্রশংসা করলাম।
তিনি চলে গেলেন।
আমি আর আসাদ আবারও হতাশায় ডুবে গেলাম।
যাই হোক, এসে ইন্টারভিউ লিখলাম সেই কথা, দেশ আজ দুই ভাগে বিভক্ত। দেশের অর্ধেক মানুষ আপনাকে পছন্দ করে আর অর্ধেক করে না।
ছাপা হলো। ফোন দিলাম সজীবকে। আপনার স্যার পড়েছে?
সে বলে, এসব কী লিখেছেন? স্যার আপনার উপর বিরক্ত।
আমি তাকে বললাম, এই বিরক্ত ধুয়ে কী আমি পানি খাবো?
যা লিখছি ঠিকই আছে।
জলিল সাহেব চিরকালই অদ্ভুত ধারণা নিয়ে ছিলেন।
তার নিজের সম্পর্কে।
তার জনপ্রিয়তা সম্পর্কে।
তার সিনেমা সম্পর্কে।
আর এখন পোশাক সম্পর্ক।
অথবা হয়তো তাকে কেউ ভুল বুঝিয়েছে...”