সোহেল রহমান: অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনের প্রবৃদ্ধির হার (জিডিপি) নিয়ে গত বৃহস্পতিবার বিশ্বব্যাংক যে পূর্বাভাস দিয়েছে, তা বাংলাদেশের অথনীতির বর্তমান উত্তরণের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। শুক্রবার (৯ অক্টোবর) অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দেশের বাইরে থাকা অর্থমন্ত্রীর এ বিবৃতি গণমাধ্যমে পাঠানো হয়।
[৩] বিবৃতিতে অর্থমন্ত্রী বলেন, বিশ্বব্যাংক একটি আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান। তারা যখন কোন দেশ সম্পর্কে বা কোন বিষয় নিয়ে তথ্য উপস্থাপন করে, সঙ্গত কারণেই এটি সবাইকে প্রভাবিত করতে পারে। কিন্তু আমাদের জিডিপি সম্পর্কে এবার যে নাম্বারগুলো বলেছে, তারা সেগুলো করোনার প্রভাবে অর্থনীতির স্বাভাবিক গতি শ্লথ হওয়ার শুরু থেকেই বলে আসছে এবং সেই একই জায়গাতেই তারা এখনো আছে।
[৪] তিনি বলেন, আমাদের অর্থবছরের তিন মাস পার হয়ে গিয়েছে এখনও নয় মাস সময় রয়েছে। করোনার প্রভাবে যে শ্লথ গতি অর্থনীতিতে তৈরি হয়েছিল সেটি অনেকটা স্বাভাবিক। স্বাস্থ্য ও মহামারি পরিচালন ব্যবস্থার ওপর উল্লেখযোগ্য চাপ সত্ত্বেও সরকারের উপযুক্ত অর্থনৈতিক প্রণোদনা ও সামাজিক সুরক্ষা ব্যবস্থা অর্থনীতিকে সুসংহত করেছে, দরিদ্র ও দুর্বলদের জন্য মৌলিক সেবা ও পণ্যাদি নিশ্চিত করেছে। অভ্যন্তরীণ বেসরকারি ও সরকারি ব্যয়, বিনিয়োগ, রপ্তানি এবং রেমিট্যান্সসহ অর্থনীতির প্রায় সকল খাত বেশ সক্ষম অবস্থানে রয়েছে।
উল্লেখ্য , গত বৃহস্পতিবার (৮/১০/২০) প্রকাশিত বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া ইকনোমিক ফোকাস রিপোর্টে চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ১.৬ শতাংশ হবে বলে পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। ২০২১-২২ অর্থবছরে বাংলাদেশে জিডিপি প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৩.৪ শতাংশ। করোনা মহামারির প্রভাবে দক্ষিণ এশিয়া নজিরবিহীন অর্থনৈতিক মন্দা পরিস্থিতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে বলেও উল্লেখ করা হয় ওই প্রতিবেদনে।
অর্থমন্ত্রী আরো বলেন, বিশ্বব্যাংকের প্রক্ষেপনের বৈশিষ্ট্যই হলো অত্যন্ত রক্ষণশীল পদ্ধতি। বিশ্ব ব্যাংকের এ যাবৎকালের সকল প্রক্ষেপণ যদি কেউ একটি তালিকা করে তাহলে দেখা যাবে যে, তারা যে প্রক্ষেপণগুলো করে তা বাস্তবতা হতে অনেক দূরে! আমরা বিশ্বাস করি তারা এবারো সেই গতানুতিক ধারার একটি বিবৃতি প্রকাশ করেছেন। আমরা আমাদের সক্ষমতার নিরিখে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করি এবং তা অর্জন করি। অর্জন করে বার বার প্রমাণ করতে হয় আমরা সঠিক। এবারও আমরা কাঙ্খিত প্রবৃদ্ধি অর্জন করে প্রমাণ করব যে আমাদের লক্ষ্যমাত্রাই সঠিক।
দেশের জনগণের উদ্দেশ্য অর্থমন্ত্রী বলেন, বার বার আমরা বলেছি এদেশের মানুষ এদেশের অর্থনীতির প্রাণশক্তি। তারাই আবার প্রমাণ করবে যে, বিশ্বব্যাংক যে প্রক্ষেপণ করেছে, তা সামঞ্জস্যহীন। সাহসী বাঙ্গালী জাতি অতীতেও বার বার প্রমাণ করেছেন, এবারেও পারবেন। গত ১০ বছর বাংলাদেশ জিডিপি প্রবৃদ্ধিতে সকলের ওপরে ছিল, আমরা আত্মপ্রত্যয়ী যে ভবিষ্যতেও সে ধারা বজায় থাকবে।