শিরোনাম
◈ আদমদীঘিতে ভাঙা রেললাইনে কম্বল গুঁজে ১৮ ঘন্টা ট্রেন চলাচল ◈ জুলাই আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়ন করতে হলে সব ধর্মের মানুষকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে : প্রধান উপদেষ্টা  ◈ ব্যক্তি বিবেচনায় এলএনজি কেনা হচ্ছে না, পিটার হাসের কোম্পানি প্রসঙ্গে অর্থ উপদেষ্টা ◈ বিসিএস পরীক্ষা: কর্মসূচির সময় পরিবর্তন করল জামায়াত ◈ চশমা ছাড়াই স্পষ্ট দেখা সম্ভব, কার্যকর আই ড্রপ উদ্ভাবন ◈ যেসব বিষয়ে গুরুত্ব পাচ্ছে নতুন বেতন কাঠামোতে  ◈ আন্তর্জাতিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা থেকে ইসরা‌য়েল‌কে বহিষ্কারের দাবি জানা‌লেন স্পেনের প্রধানমন্ত্রী ◈ কূটনৈতিক সংকট ছাপিয়ে বাণিজ্যে ভারত–বাংলাদেশের পারস্পরিক নির্ভরশীলতা বাড়ছে ◈ বিএনপিকে চাপে রাখতে জামায়াতের যুগপৎ আন্দোলন ◈ এই সরকারও পুরোনো পথে, প্রশাসনে পদ ছাড়াই পদোন্নতি

প্রকাশিত : ২২ আগস্ট, ২০২০, ০১:২১ রাত
আপডেট : ২২ আগস্ট, ২০২০, ০১:২১ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

আমি আল-আমিনের মাঝেই বেঁচে থাকতে চাই

কাজী ওয়াজেদ আলী, ফেসবুক থেকে: গাড়ী থেকে নামতেই দৌড়ে এসে সৈনিক কায়দায় স্যালুট করে পকেট থেকে কিছু খুচরা টাকা বের করে সামনে ধরে বললো, নাও। বললাম, কেন? বললো, এই টাকা দিয়ে কিছু কিনে খেও। বারবার না বলাতে সামনে টাকাগুলো ফেলে দিয়েই ভো দৌড়! ডেকে নিয়ে এসে বললাম, টাকাগুলো ওঠাও।

পরিচিত কাউকে দেখলে নিজ পকেট থেকে এভাবে টাকা বের করে দেওয়া ছেলেটির নাম আল-আমিন। সবকিছু গুছিয়ে বলতে না পারা এই ছেলেটির দীর্ঘদিন যাবত বিচরন বৃহত্তর মিরপুরের বিভিন্ন থানার আশপাশ এলাকা। পিতামাতাহীন কিছুটা বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ছেলেটি নাকি কোন এককালে কুমিল্লার বাসিন্দা ছিল। এক হাত ভাংগা আল-আমিন কবে কিভাবে ঢাকায় এসেছে খুব ভাল বলতে পারে না। এখন থানা এবং থানার আশপাশ এলাকা-ই তার ঘর সংসার।

মৃতদেহের মায়া সে ছাড়তে পারে না। তাই সে প্রায়ই থানার টহল গাড়ীতে জোর পূর্বক উঠে পড়ে। নামিয়ে দিতে চাইলে যেতে চায় না। বাধ্য হয়েই মায়াবি এই ছেলেটির মধুর অত্যাচারের কাছে পরাজিত হতে হয়। মাঝে মাঝে পাওয়া মৃতদেহের দিকে অপলক দৃষ্টিতে চেয়ে থাকে। খুজতে থাকে আপন কাউকে, স্বার্থহীনভাবে কখনো কখনো পাহারা দেয় সারারাত। ডিউটির ঝুকিতে আহত পুলিশ সদস্যদের বিপদে আল-আমিন কাঁদে। আল-আমিন মনে রাখতে পারে অনেককিছু। প্রায় আট বছর পরে দেখা হওয়ার পরও আমার নামটা ভোলেনি। অনেক পুলিশ অফিসারের ফোন নম্বর আছে ওর কাছে। পুলিশই যেন ওর আত্মীয়। বিনা ডাকেই আল-আমিন টাকা নিয়ে হাজির। আল-আমিনের একেবারেই কোন চাহিদা নেই। পেট ভরা থাকলেই ও খুশি। সবচেয়ে মজার বিষয় হলো ও অপরিচিত কারো কাছ থেকে কখনো কিছু নেয় না, এমন কি জোর করলেও না। বরং জোর করলে দৌড়ে পালিয়ে যায়।

আল-আমিনেরও একটা নীতি আছে। পরিচিত কেউ একবার তাকে অবহেলা করলে তার ধারে কাছে যায় না আর কখনো। আল-আমিনের ব্যক্তিত্ব আছে, আছে মিনিমাম সন্মানবোধ। ও জানে সন্মান দিতে। জানে আত্মা থেকে ভালবাসতে। আল-আমিনের মানবিক আচরন আমাকে বিমোহিত করে। ওর মানবিকতা আমাকে আপ্লূত করে। ওর মায়াবী চেহারায় আমি মুগ্ধ হই। মনে হয় আল-আমিন আমার খুউব আপন কেউ।

আল-আমিন আমার দেশের জনগোষ্ঠীরই অংশ। আমার কাছে আল-আমিনের গুরুত্ব মোটেও কম নয়। ওর ভালবাসা আমার কাছে খুবই গুরুত্ব বহন করে। যখন সবাই আমাকে অবহেলা করে, ঢালাওভাবে আমার সমালোচনা করে তখন আমি আল-আমিনে ঢুবে থাকি। তখন শুধু ভাবি আমি মোটেও ফেলে দেওয়ার পাত্র নই, আমার একজন অতি ভালবাসার আল-আমিন আছে। লেখক : ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, পল্লবী থানা. ডিএমপি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়