শিরোনাম
◈ জুলাই অভ্যুত্থানের সেই ঐক্য কোথায়? ◈ ব্রিটিশদের ‘নাকানিচুবানি’ দিতে ইরানের এক দশকের ‘ছায়া যুদ্ধ’: যেভাবে চলছে যুক্তরাজ্যের ভেতরে গোপন তৎপরতা ◈ চট্টগ্রাম কাস্টমস কমিশনার জাকির হোসেন বরখাস্ত, আরও কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা ◈ এবার অঝোরে কাঁদলেন মিসাইল ম্যান কিম জং উন (ভিডিও) ◈ জুলাই নিয়ে ‘আপত্তিকর’ ফেসবুক পোস্ট: পুলিশের বিরুদ্ধে ছাত্রদের অবরোধ-বিক্ষোভ ◈ নতুন উচ্চতায় রেমিট্যান্স: ২০২৪-২৫ অর্থবছরে প্রবাসী আয়ের সর্বোচ্চ প্রবাহ ◈ ডলারের দরপতনে রেকর্ড, ১৯৭৩ সালের পর সবচেয়ে বড় পতনে বিশ্ববাজারে আস্থার সংকট ◈ “৭১-এর মুক্তিযোদ্ধাদের মতোই চব্বিশের যোদ্ধাদেরও জাতি ভুলবে না” — তারেক রহমান ◈ গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে ঐক্য বজায় রাখার আহ্বান খালেদা জিয়ার ◈ শ্রীলঙ্কার বিরু‌দ্ধে বুধবার  সি‌রি‌জের প্রথম ওয়ানডে ম‌্যা‌চে  মু‌খোমু‌খি  বাংলাদেশ

প্রকাশিত : ২২ আগস্ট, ২০২০, ০১:২১ রাত
আপডেট : ২২ আগস্ট, ২০২০, ০১:২১ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

আমি আল-আমিনের মাঝেই বেঁচে থাকতে চাই

কাজী ওয়াজেদ আলী, ফেসবুক থেকে: গাড়ী থেকে নামতেই দৌড়ে এসে সৈনিক কায়দায় স্যালুট করে পকেট থেকে কিছু খুচরা টাকা বের করে সামনে ধরে বললো, নাও। বললাম, কেন? বললো, এই টাকা দিয়ে কিছু কিনে খেও। বারবার না বলাতে সামনে টাকাগুলো ফেলে দিয়েই ভো দৌড়! ডেকে নিয়ে এসে বললাম, টাকাগুলো ওঠাও।

পরিচিত কাউকে দেখলে নিজ পকেট থেকে এভাবে টাকা বের করে দেওয়া ছেলেটির নাম আল-আমিন। সবকিছু গুছিয়ে বলতে না পারা এই ছেলেটির দীর্ঘদিন যাবত বিচরন বৃহত্তর মিরপুরের বিভিন্ন থানার আশপাশ এলাকা। পিতামাতাহীন কিছুটা বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ছেলেটি নাকি কোন এককালে কুমিল্লার বাসিন্দা ছিল। এক হাত ভাংগা আল-আমিন কবে কিভাবে ঢাকায় এসেছে খুব ভাল বলতে পারে না। এখন থানা এবং থানার আশপাশ এলাকা-ই তার ঘর সংসার।

মৃতদেহের মায়া সে ছাড়তে পারে না। তাই সে প্রায়ই থানার টহল গাড়ীতে জোর পূর্বক উঠে পড়ে। নামিয়ে দিতে চাইলে যেতে চায় না। বাধ্য হয়েই মায়াবি এই ছেলেটির মধুর অত্যাচারের কাছে পরাজিত হতে হয়। মাঝে মাঝে পাওয়া মৃতদেহের দিকে অপলক দৃষ্টিতে চেয়ে থাকে। খুজতে থাকে আপন কাউকে, স্বার্থহীনভাবে কখনো কখনো পাহারা দেয় সারারাত। ডিউটির ঝুকিতে আহত পুলিশ সদস্যদের বিপদে আল-আমিন কাঁদে। আল-আমিন মনে রাখতে পারে অনেককিছু। প্রায় আট বছর পরে দেখা হওয়ার পরও আমার নামটা ভোলেনি। অনেক পুলিশ অফিসারের ফোন নম্বর আছে ওর কাছে। পুলিশই যেন ওর আত্মীয়। বিনা ডাকেই আল-আমিন টাকা নিয়ে হাজির। আল-আমিনের একেবারেই কোন চাহিদা নেই। পেট ভরা থাকলেই ও খুশি। সবচেয়ে মজার বিষয় হলো ও অপরিচিত কারো কাছ থেকে কখনো কিছু নেয় না, এমন কি জোর করলেও না। বরং জোর করলে দৌড়ে পালিয়ে যায়।

আল-আমিনেরও একটা নীতি আছে। পরিচিত কেউ একবার তাকে অবহেলা করলে তার ধারে কাছে যায় না আর কখনো। আল-আমিনের ব্যক্তিত্ব আছে, আছে মিনিমাম সন্মানবোধ। ও জানে সন্মান দিতে। জানে আত্মা থেকে ভালবাসতে। আল-আমিনের মানবিক আচরন আমাকে বিমোহিত করে। ওর মানবিকতা আমাকে আপ্লূত করে। ওর মায়াবী চেহারায় আমি মুগ্ধ হই। মনে হয় আল-আমিন আমার খুউব আপন কেউ।

আল-আমিন আমার দেশের জনগোষ্ঠীরই অংশ। আমার কাছে আল-আমিনের গুরুত্ব মোটেও কম নয়। ওর ভালবাসা আমার কাছে খুবই গুরুত্ব বহন করে। যখন সবাই আমাকে অবহেলা করে, ঢালাওভাবে আমার সমালোচনা করে তখন আমি আল-আমিনে ঢুবে থাকি। তখন শুধু ভাবি আমি মোটেও ফেলে দেওয়ার পাত্র নই, আমার একজন অতি ভালবাসার আল-আমিন আছে। লেখক : ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, পল্লবী থানা. ডিএমপি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়