গাজী নাসিরউদ্দিন আহমেদ: তখন আমরা স্কুল পাস করে ফেলেছি। এর আগে একা দূরে কোথাও যাইনি। বন্ধু খোরশেদের বড় ভাই রাশেদ ভাই সেই রামগঞ্জে সড়ক নির্মাণের ঠিকা নিয়েছেন। বেশ কদিন বাড়ির সঙ্গে যোগাযোগ নেই। খালাম্মা চিন্তিত। খোরশেদ যাবে রাশেদ ভাইয়ের খোঁজ নিতে। সঙ্গে আমিও যাবো। সেকি উত্তেজনা। কদমতলী বাস স্টেশন খুব চেনা জায়গা। কিন্তু সেখান থেকে গাড়ি চড়ে অন্য একটা জেলায় যাওয়া চ্যালেঞ্জ। ঢাকায় আসা যাওয়ার কারণে রাস্তা অনেকখানি চেনা। মহিপাল থেকে গাড়ি মোড় নিয়ে নোয়াখালীর পথ ধরল। একদম অচেনা রাস্তা। দু’পাশে সারি সারি গাছ।
বেশ সকালে রওয়ানা দিছিলাম আমরা। তারপরও শেষের সারিতে মনে হয় জায়গা পেয়েছিলাম। গাছের আড়ালে সূর্য ঢেকে যাচ্ছে, আবার উঁকি দিচ্ছে। তবে প্রথম নোয়াখালী যাবার স্মৃতিটা মনে আছে অন্য কারণে। টানা একটা গান বাজছিল। ‘কারে দেখাবো মনের দুঃখ গো আমি বুক চিরিয়া....’। এন্ড্রু কিশোর এত দরদ ঢেলে গাইছিলেন যে, আমার কিশোর মনেই তার বিচ্ছেদ জ্বালা টের পাচ্ছিলাম। বাড়িতে ফুপুরা রেডিওতে এন্ড্রু কিশোরের গান শুনতো। সে থেকে তার গলা চিনি। রাস্তা-ঘাটে এখানে-ওখানে শুনতে শুনতে গলাটা এত পরিচিত ছিল। বলাবাহুল্য ভদ্রলোকদের বাড়িতে তার গান ক্যাসেট বাজিয়ে শোনা হতো না। কিন্তু মেস কালচার উপেক্ষা করা অসম্ভব। বাংলাদেশের জনসংস্কৃতিতে এন্ড্রু কিশোর প্রধান আইকন। সম্ভবত সবচেয়ে জনপ্রিয় বাংলাদেশি গায়ক। তার চিকিৎসায় প্রধানমন্ত্রীর সহায়তা করা নিয়ে ফেসবুক সমাজের প্রতিক্রিয়া দেখে বিবমিষা জেগেছিল। বাঙালি তার আত্মার সঙ্গে বেঈমানি করে।
আপনার মতামত লিখুন :