রাশেদা রওনক খান : এবারের মা দিবসের শুভেচ্ছা সকল স্বাস্থ্যকর্মী (ডাক্তার, নার্স, পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা কর্মী) মায়েদের জন্য, যাদের অনেকেই ছোট ছোট শিশুদের মৃত্যু ঝুঁকিতে রেখে প্রতিদিন হাসপাতালে গিয়ে কাজ করছেন, সন্তানদের মাতৃস্নেহ হতে প্রতিটা দিন বঞ্চিত করছেন, অবুঝ সন্তানদের থেকে আলাদা থাকছেন।
এবারের মা দিবসের আমি শুভেচ্ছা, সেই সকল বাঙালি মায়েদের যারা জন্মের পর হতে নিজে না খেয়ে সন্তানকে খাওয়াতে ভালোবাসেন, সকল ভালোবাসা আর মমত্ব দিয়ে যেকোনো বিপদ আপদ থেকে সন্তানদের নিজের জীবন দিয়ে রক্ষা করেন, কিন্তু করোনার ভয়ে সন্তানেরা বনে জঙ্গলে ফেলে আসে। আমি নিশ্চিত এই ধরণের নিগৃহীত হবার ঘটনা আরো ঘটছে, সব হয়তো পত্রিকায় আসছে না বলে আমরা জানতেও পারছিনা।
এবারের মা দিবসের শুভেচ্ছা বৃদ্ধাশ্রমের মায়েদের জন্য, কেননা আমাদের সহজ সরল বোকা মায়েরা সন্তান লালন পালন করে, সন্তান বড় হবার পর মা'কে পাঠিয়ে দেয় বৃদ্ধাশ্রমে!
এবারের মা দিবসে শুভেচ্ছা দিতে চাই সেইসব মায়েদের যারা জানেনা ফেসবুক কি, দুনিয়া কি, স্বামী সন্তানের লালন পালনই যার একমাত্র দুনিয়া। যে জীবনে নেই কোনো ধন্যবাদ, নেই কোনো কিছু পাওয়ার দৃশ্য, কেবল আছে প্রতি মুহূর্তে না পাওয়ার বঞ্চনা। তবুও এই বঞ্চনার মাঝে একমাত্র পাওয়া তাঁর সন্তান!
এবারের মা দিবসে আমি শুভেচ্ছা জানাই সেইসব লড়াকু মায়েদের যারা সন্তানের মুখে একটু খাবার গুঁজে দেবার আশায় রাস্তায় রাস্তায় মরিয়া হয়ে ঘুরছেন একটু ত্রাণের আশায় মনে এইটুকু আশা নিয়ে যে, এই বুঝি কেউ তাঁকে তাঁর সন্তানের জন্য একটু খাবার দেবে।
এবারের মা দিবসে শুভেচ্ছা আমার মা সহ জগতের সকল মায়েদের জন্য, যাদের কারণে আজ আমরা বেঁচে আছি, নিশ্বাস নেই প্রাণ ভরে। যাদের মা বেঁচে নেই, তারা মাত্রই জানেন মা আসলে কি। বেঁচে থাকতে হয়তো আমরা সেই মূল্য অনুধাবন করতে পারিনা|
আচ্ছা, মায়ের কাছে আমরা তাদের বাঁচার শ্বাস-প্রশ্বাস হলেও আমাদের কাছে মা কেন তেমন ভাবে শ্বাস-প্রশ্বাসের মতো নয়? স্নেহ কেন নিম্নগামী কেবল, ঊর্ধ্ব ও নিম্ন গামী দুটো একসাথে হতে দোষ কোথায়? কেন মানুষ আমরা এতো স্বার্থপর? এই প্রশ্নের উত্তর কি আমাদের কারও কাছে আছে?
ফেসবুক থেকে