মাজহারুল ইসলাম : [২] এ শিল্প টিকিয়ে রাখতে সরকারের সহযোগিতা প্রয়োজন। বাঙালীর ঐতিহ্য পুতুল নাচ সম্পর্কে এমনই আক্ষেপের কথা বললেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ‘বাণী বীণা’ পতুল নাচ দলের কর্ণধার খেলু মিয়া। জনকণ্ঠ
[৩] তিনি বলেন, আমার রক্তের সঙ্গে মিশে গেছে পতুল নাচ, তাই আমি এটা ছাড়তে পারছি না। যতোদিন বাঁচি ধরে রাখবো। আগে বাঘের খেলা, সাপের খেলাসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে পুতুল খেলা দেখাতাম। এখন আর সেসব নেই। সরকার যদি আমাদের একটা পথ দেখিয়ে দিতো, তাহলে বাঁচতাম। আমাদের তেমন কোন পৃষ্ঠপোষক নেই।
[৪] পুতুল নাচ লোকনাট্যের অন্যতম প্রতীক। বিদেশে একে বলে ‘পাপেট’। পহেলা বৈশাখে গ্রামীণ জনপদে যেসব মেলা হতো, সেসব মেলার অন্যতম আকর্ষণ ছিলো পুতুল নাচ। সামাজিক বিভিন্ন বিষয়, পালাগান, পৌরাণিক কাহিনী ফুটিয়ে তোলা হতো পুতুল নাচের মাধ্যমে।
[৫] গ্রামীণ জনপদে আবালবৃদ্ধবনিতা ও শিশুদের বিনোদনে পুতুল নাচ একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে। গ্রাম বাংলার জনপ্রিয় ও জৌলুসপূর্ণ বিনোদনের এ মাধ্যম আজ নানা কারণে হারিয়ে যাচ্ছে। আগের মতো পুতুল নাচে জৌলুস না থাকায় এ শিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা অন্য পেশায় চলে যাচ্ছে। ফলে খুব দ্রæত এ লোকনাট্যের অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যাচ্ছে বলে আশঙ্কা করছেন শিল্প সংশ্লিষ্টরা।
[৬] নাট্যতাত্তি¡ক গর্ডন ক্রেইম বলেছেন, পুতুল নাচ নাটকের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ইনসাইক্লোপিডিয়া ব্রিটিনিকায় বলা হয়েছে, পাপেট ক্যান প্রোভাইড এ ডিগ্রী অব এ্যাবস্ট্রেট্রেন এ্যান্ড স্টাইলিসেসন আনএ্যটেইনেবল বাই হিউমেন এ্যাক্টরস। নাট্যতাত্তি¡কদের এতো বড় উদাহারণ থাকার পরও দেশে পুতুল নাচ বেশি দূর এগোয়নি। উল্টো ধ্রæপদী শিল্পের এই বাহনকে দিনে দিনে কলুষিত করে পুতুল নাচের আড়ালে অশ্লীল নাচ পরিবেশন করতে দেখা যায় বিভিন্ন মেলায়।