মনজুর অনিক, নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি: নারায়ণগঞ্জে মৃত্যু স্ত্রীর সম্পত্তি দখল ও আত্মসাৎ করার জন্য দুই ছেলেকে পাগল আখ্যা দিয়ে এক বছর ধরে ঘরের ভেতর লোহার খাঁচায় বন্দি রাখার অভিযোগ উঠেছে তাদের বাবা ও সৎ মায়ের বিরুদ্ধে।
দিনের পর দিন মারধর শিকার ও খাবার না পেয়ে হেমায়েত হোসেন সুমন (৩৫) মারা যায়। সাফায়েত হোসেন রাজুকে বন্দিদশা থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ।
এ ঘটনায় পুলিশ এখন পর্যন্ত কাউকে আটক করেনি। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে ফতুল্লা থানার দক্ষিণ রসুলপুর এলাকায় হাবিবুল্লাহ ক্যাশিয়ারের বাড়িতে এ ঘটনাটি ঘটেছে।
নিহত হেমায়েত হোসেন সুমন হাবিবুল্লাহর বড় ছেলে এবং উদ্ধারকৃত সাফায়েত হোসেন রাজু দ্বিতীয় ছেলে। এদিকে হাবিবুল্লাহর দাবি করেন তার ওই দুই ছেলে মানসিক রোগী। তাই তাদের ঘরে বন্দি রেখে চিকিৎসা করানো হচ্ছে।
ফতুল্লা মডেল থানার ওসি আসলাম হোসেন জানান, লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে। মৃত্যু সুমন ও উদ্ধার হওয়ার রাজু প্রতিবন্ধী বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
নির্যাতিত রাজু জানায়, সে নোয়াখালী জেলার রামনগর কেএমসি হাই স্কুলে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ার সময় তার মা মোহসেনা বেগম মারা যায়। লেখাপড়া বন্ধ করে দিয়ে তাকে ফতুল্লায় নিয়ে আসে বাবা। খালা হিনু বেগমকে বিয়ে করে বাবা অল্পদিনের মধ্যে খালাও মারা যান।
পরে অন্য একজনকে বিয়ে করে। তিনিও তার বাবার সাথে বিবাহ বিচ্ছেদ করে। গত এক বছর পূর্বে হনুফা বেগম নামে আরেকজন মহিলাকে চতুর্থবার বিয়ে করেন। বিয়ের পর থেকে তাদের দুই ভাই সুমন ও রাজুর ওপর নির্মম নির্যাতন চালানো হয়। দুই ভাইকে দুইটি রুমে এক বছর যাবত তালাবদ্ধ করে রাখা হয়।
কখনো খাবার দেয়া হয় আবার কখনো লাঠি দিয়ে বাবা ও সৎ মা তাদের মারধর করে। রাজু অভিযোগ করে আরও জানান, কয়েক দিন আগে রাতে সুমনকে অনেক মারধর করে বাবা ও সৎ মা। এরপর সে সারারাত কান্নাকাটি করেছে। তখন আমি অনেক চিৎকার করে আশপাশের লোকজনদের ডাকাডাকি করেছি কিন্তু আমার বাবা ও সৎ মায়ের ভয়ে কেউ এগিয়ে আসেনি। রাজুর দাবি, আমি ও আমার ভাই পাগল না। আমার বাবার সম্পত্তি জমিজমার কাগজপত্রে অর্ধেক মালিকানা আমার মা মোহসেনা বেগমের নামে।
এই জমি একাই বাবা ও সৎ মা আত্মসাৎ করার জন্য তাদের দুই ভাইকে পাগল আখ্যা দিয়ে ঘরে আটক রেখে নির্যাতন করতেন। তার বড় ভাই সুমন নির্যাতনেই মারা গেছেন। সম্পাদনা: জেরিন