স্বপ্না চক্রবর্তী : উজবেকিস্তানে সফররত বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, বাংলাদেশ তৈরী পোশাক রপ্তানিতে পৃথিবীর মধ্যে দ্বিতীয় স্থান দখল করে আছে। বিশ্ববাজারে দিনদিন তৈরী পোশাক রপ্তানি বাড়ছে। বাংলাদেশের কারখানাগুলোতে নিরাপদ ও কর্মবান্ধব পরিবেশে শ্রমিকরা কাজ করছে। দেশে একের পর এক গ্রীণ ফ্যাক্টরি গড়ে উঠছে। বাংলাদেশ উজবেকিস্তানসহ সিআইএসভুক্ত ভুক্তদেশ-আজারবাইজান, বেলারুশ, কাজাখাস্তান, কিরগিস্তান, আরমেনিয়া, মলডোভা, রাশিয়া, তাজিকিস্তান এবং উজবেকিস্তান) দেশসমূহে বাংলাদেশী পণ্যের রপ্তানি বৃদ্ধি করার উদ্যোগ গ্রহন করেছে।
বুধবার বাণিজ্যমন্ত্রণালয় কর্তৃক পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি উজবেকিস্তানের রাজধানী তাসখন্দে গত মঙ্গলবার উজবেকিস্তান টেক্সটাইল এন্ড গার্মেন্ট ইন্ডাস্ট্রি এসোসিয়েশন আয়োজিত “উজবেকিস্তান টেক্সটাইল কনফারেন্স এবং ৫ দিনব্যপী গ্লোবাল টেক্সটাইল ডে” এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য প্রদানের সময় এসব কথা বলেন। সভায় আরো বক্তব্য রাখেন উজবেকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী ইলিয়রগানিয়েভ, তুরস্কের রাস্ট্রদূত, আইএলও, আইএফসি প্রতিনিধিরা। আয়োজক সংস্থার পক্ষ থেকে কনফারেন্সের মূল প্রতিপাদ্য উপস্থাপনায় তৈরি পোশাক খাতের বিশ্ববাণিজ্য পরিস্থিতির হাল নাগাদ চিত্র তুলে ধরা হয় এবং তাতে বাংলাদেশের ভূমিকা গুরুত্বের সাথে উল্লেখ করা হয়।
টিপু মুনশি ১৯৭৩ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রাশিয়া সফরের আগে তাসখন্দ সফরের কথা স্মরণ করে বলেন, উজবেকিস্তানে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, পাট ও পাটজাত পণ্য এবং ফার্মাসিউটিক্যালস্ ইত্যাদির প্রচুর চাহিদা রয়েছে। কিছু জটিলতার কারনে প্রত্যাশা মোতাবেক পণ্য উজবেকিস্তানে বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানি হচ্ছে না। জটিলতা নিরসনে উজবেকিস্তানের সহযোগিতা চায় বাংলাদেশ। তিনি বলেন, সিআইএস ভুক্ত দেশসমুহের সাথে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সহযোগিতা এবং রপ্তানি বৃদ্ধির লক্ষ্যে গত মে মাসে ইউরেশিয়ান ইকনোমিক কমিশনের সাথে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করা হয়েছে।
এর আগে গত সোমবার উজবেকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী ইলিয়রগানিয়েভ-এর সাথে দ্বি-পাক্ষিক সভায় বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, উজবেকিস্তান বাংলাদেশের ঘনিষ্ট বন্ধুরাষ্ট্র। বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বৃদ্ধি এবং বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে স্থাপতি স্পেশাল ইকনোমিক জোনে বিদেশি বিনিয়োগের জন্য বিশেষ উদ্যোগ গ্রহন করা হয়েছে। বিনিয়োগকারীদের বিশেষ সুযোগ-সুবিধা প্রদান করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে অনেক দেশ বাংলাদেশের স্পেশাল ইকনোমিক জোনে বিনিয়োগ শুরু করেছে। এসময় দেশটির উপ-প্রধানমন্ত্রী ইলিয়রগানিয়েভ বাংলাদেশের সাথে বাণিজ্যবৃদ্ধি করার কথা বলেন। তিনি বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক, চামড়া ও চামড়াজাতপণ্য, পাট ও পাটজাত পণ্য এবং ফার্মাসিউটিক্যালস্ ইত্যাদি আমদানি বাড়ানোর বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেন। এ সময় বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলের অন্যান্য সদস্য এবং উজবেকিস্তান সরকারের বিনিয়োগ ও পররাষ্ট্র বিষয়ক উপমন্ত্রী এবং কৃষি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী উপস্থিত ছিলেন।
বাণিজ্যমন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, ২০১৭-২০১৮ অর্থ বছরে বাংলাদেশ উজবেকিস্তানে রপ্তানি করেছে ২৯.২৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য, একই সময়ে আমদানি করা হয়েছে ১৯৩.৬০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য।
আপনার মতামত লিখুন :