রাশিদ রিয়াজ : ভারতে মৃত এক ব্যক্তির অঙ্গপ্রত্যঙ্গ দানে আরো চারজন মানুষ বাঁচছেন। একটি লরির সঙ্গে বাইকের ধাক্কায় মারাত্মক আহত হন বাইকের পিছনে বসা বর্ধমান জেলার মেমারির বাসিন্দা বছর ৩৬-এর চিন্ময়। গত বুধবার তাকে বর্ধমান মেডিকেল কলেজে নিয়ে যাওয়ার পর তার অবস্থার অবনতি হলে চিন্ময়কে নিয়ে আসা হয় কলকাতার একটি বেসরকারি নার্সিং হোমে। সেখানেই সোমবার বিকেলে জানানো হয়, মস্তিষ্কের মৃত্যু হয়েছে চিন্ময়ের। হাসপাতালের এক মুখপাত্র জানান, এই মৃত্যুর পরেই চিন্ময়ের পরিবার তার অঙ্গ দান করার সিদ্ধান্ত নেয়।
মৃত চিন্ময়ের দেহাংশে বাঁচতে পারছেন আরো চারজন। এ ব্যাপারে চিকিৎসকরা বলছেন, শরীরের মধ্যে মাথা যদি কাজ বন্ধও করে দেয়, মস্তিষ্কের যদি মৃত্যুও হয় তবু শরীর পুরো মরে না। সেই শরীরের অংশেই প্রাণ ফিরে পেতে পারেন আরও মুমূর্ষু মানুষ। বাইক দুর্ঘটনায় মৃত চিন্ময় ঘোষও এই পথেরই পথিক হয়েছেন। তার হৃৎপি-, দু’টি কিডনি এবং লিভার নিয়ে বেঁচে রইলেন আরও চারজন।
চিন্ময়ের হৃদয় পেয়েছেন ডানকুনির বাসিন্দা ২৫ বছর বয়সী যুবক সুরজিত পাত্র। কলকাতা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজে চিকিৎসা চলছে তার। চিন্ময়ের দু’টি কিডনির একটি প্রতিস্থাপিত করা হয়েছে ১৯ বছর বয়সী তরুণী রুমা কুমারী ধানুর শরীরে। শহরেরই একবালপুর এলাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন রুমা। অন্য কিডনিটি দান করা হয়েছে কলকাতারই বছর ৫৬-র এক ব্যক্তিকে। দীর্ঘদিন ধরেই কিডনির সমস্যায় ভুগছিলেন তিনি। ইএম বাইপাস সংলগ্ন একটি বেসরকারি হাসপাতালে ওই কিডনি প্রতিস্থাপিত হবে।
মৃত চিন্ময়ের লিভার প্রতিস্থাপিত করা হয়েছে এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি থাকা ৫৪ বছর বয়সী বনগাঁর বাসিন্দা বিধান অধিকারীর দেহে। চিন্ময়ের ত্বক সংরক্ষিত করে রাখা হয়েছে স্কিন ব্যাঙ্কে। চোখের কর্নিয়া দিশা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
কলকাতা পুলিশ দ্রুত পরিবহনের জন্য পৃথক গ্রিন করিডোর তৈরি করে তাড়াতাড়ি সমস্ত প্রত্যঙ্গ পাঠিয়ে দেয় এসএসকেএম হাসপাতাল, কলকাতা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল এবং শহরের দু'টি বেসরকারি হাসপাতালে। মৃত চিন্ময়ের ভাই বলেন, আমরা আমার ভাইয়ের অঙ্গ দান করতে পেরে খুবই খুশি। আমাদের বিশ্বাস, ভাই এভাবেই বেঁচে থাকবেন। ও নেই তো কী আছে, ওর শরীরের অংশেই এতগুলো মানুষ নতুন জীবন পেয়েছেন। এনডিটিভি
আপনার মতামত লিখুন :