জাহিদুল হক চন্দন,মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি: মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ায় আটকে রেখে এক তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে দুই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। উপজেলা ডাকবাংলোর একটি কক্ষে দুই দিন আটকে রেখে দুই পুলিশ কর্মকর্তা ইয়াবা খাইয়ে তাকে একাধিকবার ধর্ষণ করেছে বলে অভিযোগ করেছেন ওই তরুণী।
এঘটনায় অভিযুক্ত সাটুরিয়া থানার উপ-পরিদর্শ (এসআই) সেকেন্দার হোসেন ও সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মাজহারুল ইসলামকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে।
গত রোববার নির্যাতনের শিকার ওই তরুণী মানিকগঞ্জ পুলিশ সুপার রিফাত রহমানের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগে তিনি জানান, সাভারের আশুলিয়া এলাকার তার এক খালা সাটুরিয়া থানার এসআই সেকেন্দারের কাছে প্রায় ৩ লাখ টাকা পাবেন। পাওনা টাকা আদায়ের জন্য বুধবার বিকেলে তিনি তার খালার সাথে সাটুরিয়া থানায় যান।
এ সময় এসআই সেকেন্দার তাদের দু’জনকে নিয়ে থানা সংলগ্ন সাটুরিয়া ডাকবাংলোতে যান। কিছুক্ষণ পর সেখানে থানার এএসআই মাজহারুল ইসলাম হাজির হন। এসময় তাকে এবং তার খালাকে ওই পুলিশ কর্মকর্তারা আলাদা রুমে আটকে রাখেন। এরপর ভয়ভীতি দেখিয়ে ওই দুই পুলিশ কর্মকর্তা তাকে (তরুণীকে) ইয়াবা সেবন করিয়ে একাধিকবার ধর্ষণ করেন। ২ রাত ২ দিন পর শুক্রবার সকালে তাদের হাতে ৫ হাজার টাকা তুলে দিয়ে সেকেন্দার তাদের সাটুরিয়া থেকে চলে যেতে বলেন। ধর্ষণের ঘটনা কাউকে জানালে তাকে ক্রসফায়ারের ভয় দেখানো হয়।
এদিকে, নির্যাতনের শিকার ওই তরুণী সাভারে ফিরে বিষয়টি তার এক পরিচিত সাংবাদিকের কাছে জানান। সংবাদকর্মীদের মাধ্যমে মৌখিকভাবে এ ঘটনা জানার পর মানিকগঞ্জ পুলিশ সুপার শনিবার রাতেই অভিযুক্ত এসআই সেকেন্দার ও মাজহারুলকে থানা থেকে প্রত্যাহারের নির্দেশ দেন।
রোববার ওই তরুণী মানিকগঞ্জ পুলিশ সুপারের কাছে উপস্থিত হয়ে ঘটনার বর্ণনা দেন এবং দুই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দেন।
অভিযুক্ত এসআই সেকেন্দার হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, আশুলিয়া এলাকার রহিমা বেগম তার কাছে পাওনা টাকার জন্য সাটুরিয়ায় এসেছিলেন। রহিমাকে কিছু টাকাও তিনি দিয়েছেন। তবে তরুণীকে আটকে রেখে ধর্ষণের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তিনি।
তাহলে কেন তাকে প্রত্যাহার করা হলো এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘ এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না।’
সোমবার বেলা ৩ টায় পুলিশ সুপার সাংবাদিকদের জানান, এঘটনায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মানিকগঞ্জ সদর সার্কেল) হাফিজুর রহমান ও সহকারী পুলিশ সুপার (ডিএসবি) হামিদুর রহমানকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তদন্ত বিষয়টি প্রমাণিত হলে ওই দুজনের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পুলিশ সদস্য হিসেবে তাদেরকে কোন রকম ছাড় দেওয়া হবেনা।
আপনার মতামত লিখুন :