সরকারি চাকরিজীবীদের টার্গেট করে একের পর এক বিয়ে এবং দ্রুতই যৌতুক ও ধর্ষণ মামলা দায়েরের এক অভিনব প্রতারণার ঘটনা সামনে এসেছে। এই প্রতারণার শিকার হয়েছেন খোদ একজন বিচারক।
চ্যানেল 24-এর প্রতিবেদনে ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালে মদিনা মনসুর (Medina Monsur) নামে এক নারীর খোঁজ মিলেছে, যার বিরুদ্ধে মোট তিনটি মামলা বিচারাধীন রয়েছে।
প্রতারণার কৌশল ও শিকার:
টার্গেট: মদিনা মনসুর পরপর সাতটি বিয়ে করেছেন এবং তার শিকার সবাই সরকারি চাকুরিজীবী।
প্যাটার্ন: বিচারকের আইনজীবী জানান, মদিনা অপেক্ষাকৃত কম বয়সী এবং সরকারি চাকরিজীবীদের লক্ষ্য করেন। কারণ, তারা চাকরি বাঁচানোর জন্য ধর্ষণ মামলা উঠানোর খাতিরে ২০ থেকে ৪০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আপোষ করতে বাধ্য হন।
ভুক্তভোগী বিচারক: মদিনা মনসুর সবশেষ যাকে বিয়ে করেছেন, তিনি নিজেও একজন বিচারক এবং বর্তমানে ওএসডি (OSD) হয়ে আইন মন্ত্রণালয়ে সংযুক্ত আছেন। হাইকোর্টে মামলা করতে এসে ভুক্তভোগী বিচারক জানান, বিয়ের মাত্র সাত দিনের মাথায় তার বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা দায়ের করা হয়।
আইনজীবী ও মদিনার বক্তব্য:
মদিনার স্বীকারোক্তি: অভিযোগ অস্বীকার করলেও মদিনা মনসুর বিচারককে বিয়ে করার কথা স্বীকার করেছেন। তবে বিষয়টি বিচারাধীন হওয়ায় তিনি এই মুহূর্তে কোনো বক্তব্য দিতে রাজি হননি।
প্রমাণের ভিত্তি: বিচারকের আইনজীবী জানান, তাদের কাছে মদিনা মনসুরের বিভিন্ন কাবিননামা, মামলার মাধ্যমে আপোষ হওয়ার সার্টিফাইড কপি এবং প্রতারণার নানা প্রমাণ রয়েছে। এসব প্রমাণের ভিত্তিতে মদিনার সর্বোচ্চ সাত বছর (৪৯৫ ধারা) এবং তিন বছরের (৪১৭ ধারা) সাজা হতে পারে।
সাবেক আইনজীবীর মন্তব্য: মদিনার একজন সাবেক আইনজীবী মামলা ছেড়ে দিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, তার মক্কেল আইনকে ব্যবহার করে অর্থ আদায়ের একটি প্রক্রিয়া পরিচালনা করছেন, যা তার ব্যক্তিগত নীতিবোধের পরিপন্থী।
ওএসডিতে থাকা বিচারক এই ঘটনায় হাইকোর্টে রিট করবেন বলে তার আইনজীবী জানিয়েছেন।