সম্প্রতি ভারতের ডেটিং অ্যাপ কোয়াককোয়াকের এক জরিপে দেখা গেছে, প্রতি তিনজন মিলেনিয়াল প্রজন্মের (১৯৮১ থেকে ১৯৯৬ সালের মধ্যে জন্মগ্রহণকারী) একজন মনে করেন, আগামী দশকে বিয়ে ও সম্পর্কের ধারণা একেবারে বদলে যাবে।
ভালোবাসা, রোমান্স ও অঙ্গীকার—এ তিন বিষয় নিয়ে আধুনিক ধারণাগুলোর ভেতর সূক্ষ্ম পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে; যা ভবিষ্যতের সম্পর্ক ও ঘনিষ্ঠতার ধরনকে নতুনভাবে গড়ছে।
ডেটিং অ্যাপটি ভারতের শহর, উপশহর ও গ্রামীণ এলাকার ২২ থেকে ৩৫ বছর বয়সী ১০ হাজার ৩৪০ জন সক্রিয় ব্যবহারকারীর ওপর এই জরিপ চালায়। অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে আইটি বিশেষজ্ঞ, স্বাস্থ্যকর্মী, ব্যাংক ও আর্থিক খাতের কর্মী, বিক্রয় ও বিপণন কর্মকর্তা, শিক্ষক, প্রশিক্ষক, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কনটেন্ট নির্মাতাসহ নানা পেশার মানুষ রয়েছেন।
জরিপের উদ্দেশ্য—ডিজিটাল যুগে মানুষ কীভাবে আবেগ, সংযোগ ও ঘনিষ্ঠতাকে নতুনভাবে সংজ্ঞায়িত করছে, তা বোঝা।
অ্যাপটির প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) রবি মিত্তাল বলেন, সম্পর্ক গড়তে ডেটিং অ্যাপ ব্যবহারকারীদের প্রতি পাঁচজনের চারজনই এখন নিজেদের সম্পর্কে গভীরভাবে সচেতন। তাঁদের অগ্রাধিকার বদলে যাচ্ছে। তাঁরা বিয়ে বা অঙ্গীকারের বিরুদ্ধে নন; বরং তাঁরা শুধু নিজের জন্য যেটি সবচেয়ে ভালো, সেটি বেছে নেওয়ার স্বাধীনতা চান—সমাজের নির্ধারিত সময়সূচি বা প্রত্যাশা মেনে নয়।
ব্যক্তিগত পছন্দে পরিণত হচ্ছে বিয়ে
যে বিয়ে একসময় ছিল জীবনের বাধ্যতামূলক বা প্রত্যাশিত পরিণতি, সেটিই এখন পরিণত হচ্ছে ব্যক্তিগত পছন্দে।
জরিপ অনুযায়ী, শহর ও উপশহরের ২৮ বছরের বেশি বয়সী ডেটিং অ্যাপটি ব্যবহারকারীদের মধ্যে ৩৯ শতাংশের বেশি মনে করে, বিয়ে আর জীবনের কোনো গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক নয়; এটি এখন ঐচ্ছিক।
ভার্চুয়াল ডেটিংয়ের প্রসারই প্রমাণ করে—মানুষ এখন যেকোনো পরিস্থিতিতেই ভালোবাসতে ও সম্পর্ক গড়তে সক্ষম।
শহরের প্রতি চারজন নারী ব্যবহারকারীর মধ্যে দুজন জানান, এটি আসলে পরিবর্তিত সামাজিক ও অর্থনৈতিক বাস্তবতা এবং আধুনিক জীবনধারারই প্রতিফলন। এখন আর সম্পর্কের জন্য শারীরিক উপস্থিতি বা আইনি কাগজের প্রয়োজন হয় না।
উদাহরণ হিসেবে অবিনাশের কথা বলা যায়। ২৯ বছর বয়সী এই ব্যক্তি চাকরি করেন। তিনিও এই অ্যাপ ব্যবহার করেন।
অবিনাশ বলেন, ‘আমার কাছে বিয়ে শেষ লক্ষ্য নয়। আমার প্রোফাইলেই এটা স্পষ্ট করে দিয়েছি। আমি খুঁজি আসল সংযোগ আর আন্তরিক অঙ্গীকার। কারণ, সবাই যেমন ভাবে, বিয়ে মানেই নিশ্চয়তা, তা কিন্তু নয়।’