চলতি বছর অনলাইন শপিং ব্যবসা ঘিরে ফিশিং ও ভুয়া অফারের প্রবণতা বেড়েছে উল্লেখযোগ্য হারে। নিরাপত্তা সংস্থার সর্বশেষ প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানা গেছে। এ বছরের জানুয়ারি থেকে অক্টোবর সময়ে ব্যাংক, অনলাইন স্টোর ও পেমেন্ট সিস্টেম সেজে তৈরি করা ৬৪ লাখের বেশি ফিশিং প্রচেষ্টা ব্লক করা হয়েছে, যার প্রায় অর্ধেকই অনলাইন ক্রেতার উদ্দেশে তৈরি।
একই সময়ে সব ধরনের গেমিং প্ল্যাটফর্ম ছিল সাইবার আক্রমণের বড় লক্ষ্য। ক্যাসপারস্কি সিকিউরিটি নেটওয়ার্ক (কেওএসএন) সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত অনলাইন স্টোর, ব্যাংক ও পেমেন্ট সিস্টেমের ছদ্মবেশে তৈরি করা ৬৩ লাখ ৯৪ হাজার ফিশিং প্রচেষ্টা ব্লক করা হয়েছে, যার মধ্যে ৪৮ শতাংশই ছিল অনলাইন ক্রেতাকে লক্ষ্য করে। একই সময়ে গেমিং প্ল্যাটফর্মে হামলার চেষ্টার সংখ্যা দুই কোটি ছাড়িয়েছে। এর মধ্যে শুধু ডিসকর্ডকেই ব্যবহার করে এক কোটি ৮৫ লাখের বেশি হামলা শনাক্ত করা হয়।
ব্ল্যাক ফ্রাইডে ঘিরে অনেক স্প্যাম ইমেইল ছড়ানো হয়েছে। নভেম্বরের প্রথম দুই সপ্তাহেই এক লাখ ৪৬ হাজার স্প্যাম ইমেইল শনাক্ত করেছে নিরাপত্তা সংস্থা।
এর মধ্যে ২ হাজার ৫৭২টি এসেছে সিঙ্গেলস ডে উদযাপন থেকে। শনাক্ত ইমেইলের বহু অংশই আগের বছরের টেমপ্লেট পুনর্ব্যবহার করে তৈরি।
অ্যামাজন, ওয়ালমার্ট, আলিবাবা ছাড়াও কয়েকটি পরিচিত ব্র্যান্ডের নামে পাঠানো হয়েছে। বিনোদন প্ল্যাটফর্মকেও ছাড় দেয়নি সাইবার চক্র। চলতি বছর আট লাখের বেশি নেটফ্লিক্স আর পাঁচ লাখের বেশি স্পটিফাই ফিশিং প্রচেষ্টা শনাক্ত করেছে সংস্থাটি।
ই-কমার্স ছাড়াও সাইবার চক্র গেমিং সিস্টেম, যেমন– স্টিম, প্লেস্টেশন, এক্সবক্সকেও টার্গেট করেছে। যেখানে ২০ লাখ ৫৪ হাজারের বেশি ফিশিং প্রচেষ্টা ধরা পড়ে।
গেমিং সফটওয়্যার সেজে ছড়িয়ে পড়া ম্যালওয়ারও উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। এর মধ্যে মোট দুই কোটি ১৮ হাজার ম্যালওয়ার শনাক্ত হয়। যার মধ্যে ডিসকর্ড থেকেই শনাক্ত হওয়া ম্যালওয়ার চেষ্টার সংখ্যা এক কোটি ৮৫ লাখ ৫৬ হাজার ছাড়িয়েছে, যা ২০২৪ সালের তুলনায় ১৪ গুণ বেশি।
ওয়েব কনটেন্ট অ্যানালিস্ট ওলগা অলতুখোভা বলেন, চলতি বছরের হিসাব বলছে, সাইবার চক্র এখন পুরো ডিজিটাল দুনিয়াজুড়েই সক্রিয়। তারা স্ট্রিমিং, অনলাইন শপিং, গেমিং ও যোগাযোগ প্ল্যাটফর্ম– সব জায়গায় গ্রাহক চলাচল লক্ষ্য করে নিজের কৌশল বদলে পরিচিত পরিবেশের ভেতরে লুকিয়ে থাকে। সে ক্ষেত্রে অনলাইন কেনাকাটায় বিশেষ সতর্ক থাকা ও বেসিক নিরাপত্তা অভ্যাস মেনে চলা আবশ্যক।
সূত্র: সমকাল