আর্থ ডট কম: নকল বা জাল টাকা বিশ্বজুড়ে বড় একটি সমস্যা। নকল বা জাল টাকা নিয়ে বিপত্তির মুখে পড়েন অনেকেই। এ সমস্যা সমাধানে বিজ্ঞান কল্পকাহিনীর আদলে কোয়ান্টাম মুদ্রা চালুর জন্য কাজ করছেন বিজ্ঞানীরা। নতুন এক গবেষণায় দেখা গেছে, কোয়ান্টাম তথ্যের একটি ক্ষুদ্র আধার ডেবিট কার্ডের মতো কাজ করতে পারে। ফলে কোনো নকল, জাল বা জালিয়াতির সুযোগ না রেখেই এই মুদ্রা ব্যবহার করা যাবে।
বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, কোয়ান্টাম মুদ্রা কাগজের নোট বা ডিজিটাল কোডের ওপর নির্ভর করে না। কোয়ান্টাম মুদ্রা তথ্য সঞ্চয় করে কোয়ান্টাম অবস্থায়। কোয়ান্টাম মুদ্রা মূলত একটি ইলেকট্রনের স্পিন বা একটি ফোটনের পোলারাইজেশন বা মেরুকরণ অবস্থায় তথ্য সংরক্ষণ করে। কোয়ান্টাম মুদ্রার মূল ধারণা স্টিফেন উইজনারের ১৯৮৩ সালের কনজুগেট কোডিং হিসেবে প্রস্তাব করেন। কোয়ান্টাম অবস্থার নিখুঁত অনুলিপি করা যায় না বলে কোয়ান্টাম মুদ্রা ক্লোন করার চেষ্টা করলে সহজেই শনাক্ত করা যাবে।
ফ্রান্সের প্যারিসের সোরবোন ইউনিভার্সিটি ও সিএনআরএসের কাস্টলার ব্রোসেল গবেষণাগারে বিজ্ঞানী জুলিয়েন লরাটের নেতৃত্বে কোয়ান্টাম মুদ্রা ব্যবস্থার কার্যকারিতা নিয়ে পরীক্ষা করা হয়েছে। এ সময় বিজ্ঞানীরা খুব দুর্বল আলোর স্পন্দনে গড়ে একক ফোটন প্রেরণ করেন, যা কিউবিট নামক একটি বিটসদৃশ কোয়ান্টাম অবস্থা বহন করে। এই অবস্থা আলোর পোলারাইজেশন হিসেবে বিদ্যমান থাকে। একটি কোয়ান্টাম মেমোরিতে এসব অবস্থা লোড করা হয়।
সায়েন্স অ্যাডভান্সেস সাময়িকীতে প্রকাশিত গবেষণা ফলাফলে বলা হয়েছে, কোয়ান্টাম মুদ্রা নিয়ে এই গবেষণায় নো-ক্লোনিং ভাবনাকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। এটি কোয়ান্টাম পদার্থবিজ্ঞানের এমন একটি ধারণা যেখানে অজানা একটি কোয়ান্টাম অবস্থার নিখুঁত অনুলিপি তৈরি করার সুযোগ নেই বলে মনে করা হয়। বিজ্ঞানীরা আর্থিক লেনদেনের সঙ্গে এই নিয়মকে নিরাপদ সঞ্চয়ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত করেছেন। অনুবাদ: প্রথম আলো