শিরোনাম
◈ নির্বাচনের আগেও নয়, ভবিষ্যতেও আওয়ামী লীগের নিষেধাজ্ঞা উঠছে না: আসিফ নজরুল ◈ ভাষাসৈনিক আহমদ রফিক লাইফ সাপোর্টে ◈ দুবাই শেখ সেক্স পার্টনার খুঁজছেন, তোমার কি কোনো ভালো বন্ধু আছে? চাঞ্চল্যকর হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট ফাঁস ◈ ডোনাল্ড ট্রাম্প হ‌বেন গাজার অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ◈ ডোনাল্ড ট্রাম্পের জন্য কারাগারই সবচেয়ে উপযুক্ত জায়গা :  কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট ◈ ‌নেপা‌লের কা‌ছে হোয়াইটওয়াশ হওয়ার পর ওয়েস্ট ইন্ডিজের কেন্দ্রীয় চুক্তি থেকে বাদ বেশকিছু অভিজ্ঞ ক্রিকেটার ◈ টি-‌টো‌য়ে‌ন্টি ক্রিকেট লি‌গে বরিশালকে সহজেই হারালো চট্টগ্রাম ◈ আমি এবং আমার দল বিএনপি বিশ্বাস করি, ধর্ম যার যার, রাষ্ট্র সবার: তারেক রহমান ◈ জাপায় ফের অস্থিরতা, প্রতীকের দাবি নিয়ে আবারও লড়াই ◈ প্রথমবার দ্বিপা‌ক্ষিক সি‌রিজ খে‌লে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হোয়াইটওয়াশ কর‌লো নেপাল 

প্রকাশিত : ০১ অক্টোবর, ২০২৫, ০৭:০৫ বিকাল
আপডেট : ০২ অক্টোবর, ২০২৫, ১২:০০ রাত

প্রতিবেদক : মহসিন কবির

জাপায় ফের অস্থিরতা, প্রতীকের দাবি নিয়ে আবারও লড়াই

মহসিন কবির: জাতীয় পার্টির (জাপা) নির্বাচনী প্রতীক লাঙ্গল নিয়ে আবার টানাটানি শুরু হয়েছে। ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদের নেতৃত্বাধীন জাপাও লাঙ্গলের দাবি জানিয়েছে। তার দাবি, কাউন্সিলে নির্বাচিত হওয়ায় তিনিই বৈধ নেতা। তাই জি এম কাদের নয়, তার নেতৃত্বাধীন জাপায় লাঙ্গল প্রতীক পাবে। এ বিষয়ে ইসির সিদ্ধান্ত আগামী সপ্তাহে পাওয়া যাবে বলে জানা গেছে।

জিএম কাদের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টি থেকে ইসিকে জানানো হয়- দলের নেতৃত্ব অন্য কারও দাবি করার কোনো সুযোগ নেই। যারা নিজেদের জাপার চেয়ারম্যান ও মহাসচিব দাবি করছেন তারা দলের গঠনতন্ত্র মেনে করেননি। এই দুই পক্ষের দাবি-দাওয়ার বিষয়ে দলটির প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের স্ত্রী বেগম রওশন এরশাদ মনে করেন নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত জিএম কাদেরের পক্ষে আসবে।

এ পর্যন্ত জাতীয় পার্টিতে বেশ কয়েকবার ভাঙন দেখা গেছে। বর্তমানে দলটি ৬ ভাগে বিভক্ত। জেপি, বিজেপি ও বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি এই তিনটির নিবন্ধন ও প্রতীক রয়েছে। কিন্তু রওশন এরশাদ-কাজী মামুনুর রশীদ, বিদিশা-এরিক এবং আনিসুল-হাওলাদার এই তিন অংশ এখনও ইসির নিবন্ধন পায়নি। আবার তারা কেউই আলাদা করে নিবন্ধনও চাচ্ছে না। তিন অংশই নিজেদের দলীয় প্রতীক ও নিবন্ধনসহ মূল জাতীয় পার্টির নেতৃত্বের অধিকারী হতে চায়। আনিসুল ইসলাম ও হাওলাদারের দাবি, তারাই মূল জাতীয় পার্টির (জাপার) নেতা। এই দাবিতেই নির্বাচন কমিশনে তাদের তথ্য জমা দিয়েছেন। নির্বাচন কমিশনের বর্তমান রেকর্ড অনুযায়ী লাঙল প্রতীক আছে কেবল জিএম কাদের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টিতেই (জাপা)। এর আগে দেখা গেছে, যতবার জাতীয় পার্টির ভাঙন হয়েছে বা ততবারই দলের নিবন্ধন ও প্রতীকের অধিকার (মালিকানা) নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

গত ৭ জুলাই জাপা থেকে বহিষ্কৃত হন আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, রুহুল আমিন হাওলাদার ও মজিবুল হক চুন্নুসহ বিভিন্ন পর্যায়ের বেশ বেশ কয়েকজন নেতাকে। পরে আইনের মারপ্যাঁচে পড়েন জিএম কাদের। তার কার্যক্রম সাময়িক বন্ধ করে রাখা হয়। এ সময় ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম নিজেকে দলের সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান দাবি করে দলের দশম জাতীয় কাউন্সিলের ডাক দেন। ৯ আগস্ট কাউন্সিলের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব ঘোষণা দেন। এর পর থেকে তারা নিজেদের জাতীয় পার্টির মূল নেতৃত্ব দাবি করেন।

তবে জিএম কাদের ও ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটেয়ারীর নেতৃত্ব জাতীয় পার্টি সচল আছে। তাদের ভাষ্য, জাপা থেকে অব্যাহতি পাওয়া নেতারা কাউন্সিল ডাকার এখতিয়ার রাখেন না। কাউন্সিলের আহ্বান এবং কাউন্সিল করা দুটোই দলের চেয়ারম্যানের এখতিয়ার।

এদিকে জাতীয় পার্টির একাংশের চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ গণমাধ্যমকে বলে, আইন ও গঠনতন্ত্র অনুযায়ী আমাদের নেতৃত্বই জাতীয় পার্টির একমাত্র বৈধ নেতৃত্ব এবং লাঙল প্রতীকের একমাত্র দাবিদার। গত ৯ আগস্ট জাতীয় পার্টির গঠনতন্ত্র এবং আরপিও অনুযায়ী দলের সর্বশেষ দশম জাতীয় কাউন্সিল যথাযথভাবে সম্পন্ন হয়েছে। তিনি বলেন, এই কাউন্সিলে আমি সর্বসম্মতিক্রমে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এবং এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার মহাসচিব হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। কাউন্সিলের পর কমিটি (সদস্যদের তালিকা) নির্বাচন কমিশনে জমা দিয়েছি। একই সঙ্গে কাউন্সিলের সব ডকুমেন্টও (নথি) জমা দিয়েছি।

নতুন কমিটি গঠনের পর জিএম কাদের আর কোনোভাবে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান পরিচয় দিতে পারে না দাবি করে আনিসুল ইসলাম আরও বলেন, লাঙল প্রতীক কোনো ব্যক্তির নয়। লাঙল প্রতীক নির্বাচনের কমিশনের নিবন্ধিত ১২ নম্বর জাতীয় পার্টির প্রতীক। তাই আইন ও গঠনতন্ত্র অনুযায়ী আমাদের নেতৃত্বই জাতীয় পার্টির একমাত্র বৈধ নেতৃত্ব এবং লাঙল প্রতীকের একমাত্র দাবিদার।

এদিকে জাপার নেতৃত্বের সমাধান চেয়ে গত সোমবার ইসিতে চিঠি দিয়েছেন আনিসুল-হাওলাদার অংশের দপ্তর সম্পাদক এমএ রাজ্জাক খান। জাপা প্রতিষ্ঠাতা হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের ভাই জিএম কাদের অংশ নিজেদের নিয়ন্ত্রণ বহাল রাখতে ইসির সঙ্গে সাক্ষাতের পরের দিন আনিসুল-হাওলাদার পক্ষ এই চিঠি দেয়। সিইসিকে লেখা চিঠিতে বলা হয়, একাধিকবার আবেদন ও অনুরোধ সত্ত্বেও এখনও নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত পাওয়া যায়নি এবং অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে পুরনো তথ্য প্রদর্শিত হচ্ছে। এর ফলে দলের সাংগঠনিক কার্যক্রম যথেষ্ট বিঘিœত হচ্ছে এবং তৃণমূলের নেতাকর্মীদের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হচ্ছে।

এ অবস্থায় জাতীয় পার্টির নিবন্ধন নম্বর ১২ এবং প্রতীক লাঙলসংবলিত নির্বাচন কমিশনের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ও মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদারের নাম যথাযথভাবে প্রতিস্থাপন করার জন্য চিঠিতে অনুরোধ জানানো হয়েছে।

আগামী দিনে নির্বাচন কমিশনের ডাকা সংলাপে জাতীয় পার্টিও থাকবে কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিনের ভাষ্য, জাতীয় পার্টি বললে আমি একটু কনফিউজড (বিভ্রান্ত) হই। কারণ, ওখানে অন্তত হাফ ডজনের মতো হবে এবং লাঙলের দাবিদারও একাধিক, এ জন্য আমি বুঝতে পারতেছি না।

দলীয় নিবন্ধন ও প্রতীকের দাবি প্রসেঙ্গ জানতে চাইলে জিএম কাদের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টির মহাসচিব ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী গণমাধ্যমকে বলেছেন, জাতীয় পার্টি একটা নিবন্ধিত দল। ইতোমধ্যে নিবন্ধন হয়ে আছে। এখানে লাঙল মার্কার অধিকারিক হিসেবে জিএম কাদের নাম এখনও নির্বাচন কমিশনে লিপিবদ্ধ আছে। যদি অন্য কেউ নতুন দলের নিবন্ধন চায়, চাইতে পারে। নতুন করে লাঙল মার্কা চাওয়ার বা জাতীয় পার্টি (জাপা) নামে নিবন্ধন চাওয়ার কোনো আইনগত সুযোগ কারও নাই।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়