ফরিদ আহমেদ: মানুষ কারও কাছ থেকে কিছু অনৈতিক সুবিধা পেলে তার ভক্ত হয়ে যায়। এটা রাজনীতিতে খুব বেশি দেখা যায়। যে কারণে ক্ষমতাসীন দলের একটা ভক্তশ্রেণি থাকে। এরা মূলত সুবিধাভোগী। ধুরন্ধর লোক এরা। সময় বিপরীত দিকে গেলে কিংবা সুবিধায় টান পড়লেই এদের ভক্তিবাদেও টান পড়ে।
আরেকটা অংশ থাকে, যারা কোনো সুবিধা পায় না। কিন্তু তারপরেও ভক্তি করে মনপ্রাণ দিয়ে। এরা বোকাশ্রেণীর লোক। ভক্তিবাদ এদের মগজে ইনবিল্ট অবস্থায় থাকে। ফলে গরলও এদের কাছে জলবৎ তরল লাগে। বৃন্দাবন দাসের একটা নাটক আছে। সেটার নাম ‘হাড়কিপ্টে’। হাড়কিপ্টেতে দেখা যায়, গ্রামের এক মহা কিপ্টে লোক নজর আলীর তিন ছেলে রয়েছে, ফজর, বহর আর নহর। ফজর আর নহর তাদের জীবন নিয়ে অসুখী। বাবা তাদের ঠিকমতো খাবার দেয় না, ঠিকমতো কাপড় দেয় না, বয়স পেরিয়ে গেলেও টাকা খরচের ভয়ে বিয়ে দেয় না, ইত্যাকার নানা অভিযোগ প্রতিনিয়ত করে তারা। এইসব অভিযোগ মিথ্যে অভিযোগ নয়।
অন্যদিকে, বহরের কোনো অভিযোগ নেই। এমন না যে হাড়কিপ্টে নজর আলী তার এই পুত্রকে অতিরিক্ত সুবিধা দেয়। সেও ছেড়া গেঞ্জি পরে, ছেড়া লুঙ্গি পরনে থাকে, আধপেটা খায়, গরমে সিদ্ধ হয়। একই রকমভাবে কষ্ট করার পরেও অন্য দুই ভাইয়ের মতো অভিযোগের ডালা খোলে নাই সে। এই বঞ্চনা, কষ্টেও সে সুখী। বরং অন্য দুই ভাই অভিযোগের জন্য মুখ খুললেই বহর পাগলা ষাড়ের মতো ছুটে যায় তাদের দিকে। তেড়েফুড়ে মারার জন্য হাত উঠায় সে। বহরের ভয়ে বাকি দুই ভাই সিঁটকে থাকে। কোনো অভিযোগ করার আগে চারপাশ আগে ভালো করে দেখে নেয় তারা। বহর আশেপাশে না থাকলেও গলা নামিয়ে ফিসফিস করে কথা বলে তারা। বহর শুনলে শুধু নিজেই মারতে আসবে না, বাবার কাছে বলে আরও কঠোর শাস্তির ব্যবস্থাও করবে। বাবার চেয়েও বহরকে নিয়েই বেশি ভয়ে থাকে তারা। ফেসবুক থেকে
আপনার মতামত লিখুন :