শিরোনাম
◈ যুদ্ধ বন্ধের শর্তেই ইসরায়েলি জিম্মিদের ছাড়বে হামাস ◈ হরলিক্স আর স্বাস্থ্যকর পানীয় নয়  ◈ বাংলাদেশে চিকিৎসা সুবিধায় থাইল্যান্ডের বিনিয়োগ চান প্রধানমন্ত্রী ◈ থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে  প্রধানমন্ত্রীকে উষ্ণ আন্তরিক অভ্যর্থনা ◈ যে কোনো ভিসাধারী পবিত্র ওমরাহ পালন করতে পারবেন  ◈ পাটগ্রাম সীমান্তে বিএসএফে'র গুলিতে বাংলাদেশি নিহত ◈  কমবে তাপমাত্রা, মে মাসেই কালবৈশাখী ঝড় ও বৃষ্টির সম্ভাবনা ◈ রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কথা বলতে পারবেন না ইমরান ও বুশরা ◈ বাংলাদেশ-চীন সামরিক মহড়া মে মাসে, নজর রাখবে ভারত ◈ দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যু: চুয়েটে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন স্থগিত, যান চলাচল শুরু

প্রকাশিত : ২৯ মার্চ, ২০২৩, ০১:৫৯ রাত
আপডেট : ২৯ মার্চ, ২০২৩, ০১:৫৯ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

আমরা কি আসলেই একটা রুচির দুর্ভিক্ষের মধ্যে পড়িনি?

শরিফুল হাসান

শরিফুল হাসান: আমরা কি আসলেই একটা রুচির দুর্ভিক্ষের মধ্যে পড়িনি? মামুনুর রশীদ কি আসলেই ভুল বলেছেন? এই যে তিনি বলেছেন, ‘আমাদের রাজনীতিও তো রুচিহীন হয়ে গেছে। ওই জায়গা থেকে ফিরিয়ে আনা কঠিন। রাজনীতি যদি সুস্থ হতো, দুর্নীতিপরায়ণ সমাজ যদি না হতো, তাহলে কিছু একটা হতো,’ এই কথাগুলো কি একেবারে মিথ্যা? এককভাবে কারো নাম বলাটা অবশ্যই ঠিক হয়নি, কিন্তু মামুনুর রশিদ যে রুচির দুর্ভিক্ষের কথা বলেছেন, সেটা কি বেঠিক? আপনার কী মনে হয়? আমি কিন্তু অনেকগুলো কথার সঙ্গে একমত। 

মামুনুর রশীদ বলেছেন, কুরুচি, কুশিক্ষা ও অপসংস্কৃতির এই উত্থান যেমন রাজনৈতিক সমস্যা, তেমনি আমাদের সাংস্কৃতিক সমস্যাও।’ তাহলে এ ধরনের সংকট থেকে উত্তরণের উপায় কী? তিনি বলেছেন, ‘উত্তরণের উপায় খুব কঠিন। কারণ আমাদের রাজনীতিও তো রুচিহীন হয়ে গেছে। ওই জায়গা থেকে ফিরিয়ে আনা কঠিন। রাজনীতি যদি সুস্থ হতো, দুর্নীতিপরায়ন সমাজ যদি না হতো, তাহলে কিছু একটা হতো’।

এই কথাগুলোর সঙ্গে দ্বিমত করতে পারছি না। কথায় কথায় মামুনুর রশীদ এটাও বললেন, ‘আমাদের রাষ্ট্র তো কোনোভাবে রুচির উন্নয়নে কাজ করছে না। তাই এখন আমার আর রাজনীতির কাছে, রাষ্ট্রের কাছে, সংস্কৃতির কাছে, কোথাও আবেদন-নিবেদন নেই। আমার আবেদন, যে মানুষগুলো সামাজিক কাজের প্রতি দায়বদ্ধ, তাঁদের প্রতি। তাঁদের বলতে চাই, আপনারা এগিয়ে আসুন। তাঁরাই যদি আওয়াজ তোলেন, সারা দেশে মানুষ যদি প্রশ্ন করতে শুরু করে, মানুষ যদি সব ধরনের অন্যায়ে বাধা দেয়, বলতে থাকে, এটা ঠিক হচ্ছে না; এটা করতে পারবে না, তাহলেই হবে। কিন্তু আমাদের দেশের মানুষ তো বাধা দেওয়াও ভুলে গেছে। কথার কথা, কাল মুরগির দাম ছিল ১০০ টাকা, আজ হয়ে গেছে ১৫০ টাকা। তারপরও কিন্তু মানুষ কিনছে’।

দেশের বাইরের উদাহরণ টেনে এনে মামুনুর রশীদ বললেন, ‘পৃথিবীর অন্যান্য দেশে তো সাধারণ মানুষ বাধা দেয়। অস্ট্রেলিয়াতে একবার দেখেছি, একদিন সকালে হঠাৎ কলার দাম বেড়ে গেলো। ওদের প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে সব রাষ্ট্রব্যবস্থা এ নিয়ে তোলপাড়। শেষমেশ দাম কমাতে বাধ্য হলো। বাইরে থেকে আমদানি করা শুরু করলো, তখন ব্যবসায়ীরাও বিপদে পড়ে গেলেন। আর আমাদের এখানে রাষ্ট্র কোনো ধরনের ব্যবস্থা নেয় না, আর মানুষও এতোবেশি দাম সত্ত্বেও সবকিছু মনে নিচ্ছে। মেনে নিচ্ছে বলেই ব্যবসায়ীরা যা খুশি করছেন। বাংলাদেশ একটা ব্যবসায়ীদের রাষ্ট্র হয়ে গেছে, আ স্টেট অব বিজনেসম্যান’।
আমি কথাগুলোর সঙ্গে একমত। ক্ষোভ থেকে মামুনুর রশিদ বলেন, ‘আজ থেকে ৫০-৬০ বছর আগে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন বলেছিলেন, দেশে একটা রুচির দুর্ভিক্ষ চলছে। আমরা সেই রুচির দুর্ভিক্ষের মধ্যে পড়ে গেছি। আজ আমাদের অবকাঠামোগত অনেক উন্নয়ন হচ্ছে। কী সুন্দর রাস্তাঘাট হচ্ছে, মেট্রোরেল হচ্ছে, আমরা খুব মুগ্ধ। দেশের মানুষের কষ্টের অবসান হবে। কিন্তু দেশের মানুষের সংস্কৃতি ও রুচিই যদি ঠিক না করা যায়, এসব কে ব্যবহার করবে, তাই সংস্কৃতি ও রুচির উন্নয়নে কাজ করতে হবে।’

আমি এই কথাগুলোর সাথেও একমত। তবে আমি রুচির জায়গায় মূল্যবোধ যোগ করবো। আমি বলবো আমাদের চারপাশে অবকাঠামোগত অনেক উন্নয়ন হচ্ছে, অধিকাংশ মানুষ টাকার পেছনে ছুটছে।  কিন্তু দিনকে দিন মূল্যবোধের চরম অবক্ষয় ঘটছে। সুশাসনের ভয়াবহ অভাব। এই মূল্যবোধ আর সুশাসন ছাড়া একটা দেশের উন্নয়ন টেকসই হয় না। কাজেই আমি চাই আমাদের সবার মধ্যে বোধ ফিরুক। মূল্যবোধ ফিরুক। মানবতা জাগুক। সুশাসন প্রতিষ্ঠা হোক। লেখক: অভিবাসন কর্মসূচি প্রধান, ব্র্যাক

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়