শিরোনাম
◈ জুলাই অভ্যুত্থানের সেই ঐক্য কোথায়? ◈ ব্রিটিশদের ‘নাকানিচুবানি’ দিতে ইরানের এক দশকের ‘ছায়া যুদ্ধ’: যেভাবে চলছে যুক্তরাজ্যের ভেতরে গোপন তৎপরতা ◈ চট্টগ্রাম কাস্টমস কমিশনার জাকির হোসেন বরখাস্ত, আরও কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা ◈ এবার অঝোরে কাঁদলেন মিসাইল ম্যান কিম জং উন (ভিডিও) ◈ জুলাই নিয়ে ‘আপত্তিকর’ ফেসবুক পোস্ট: পুলিশের বিরুদ্ধে ছাত্রদের অবরোধ-বিক্ষোভ ◈ নতুন উচ্চতায় রেমিট্যান্স: ২০২৪-২৫ অর্থবছরে প্রবাসী আয়ের সর্বোচ্চ প্রবাহ ◈ ডলারের দরপতনে রেকর্ড, ১৯৭৩ সালের পর সবচেয়ে বড় পতনে বিশ্ববাজারে আস্থার সংকট ◈ “৭১-এর মুক্তিযোদ্ধাদের মতোই চব্বিশের যোদ্ধাদেরও জাতি ভুলবে না” — তারেক রহমান ◈ গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে ঐক্য বজায় রাখার আহ্বান খালেদা জিয়ার ◈ শ্রীলঙ্কার বিরু‌দ্ধে বুধবার  সি‌রি‌জের প্রথম ওয়ানডে ম‌্যা‌চে  মু‌খোমু‌খি  বাংলাদেশ

প্রকাশিত : ২৪ নভেম্বর, ২০২২, ০৬:০১ বিকাল
আপডেট : ২৪ নভেম্বর, ২০২২, ০৬:০১ বিকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

সাংস্কৃতিক আন্দোলনের অনুপস্থিতিতে রাজনৈতিক আন্দোলন ব্যর্থ হয় 

আবু জুবায়ের

 

আবু জুবায়ের : ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে চলমান যেকোন রাজনৈতিক আন্দোলনের ফলাফল নিশ্চিত করেছে সাংস্কৃতিক আন্দোলন। জাতিসত্ত্বার উন্মেষ সৃষ্টিতে কৃষ্টি এবং সাংস্কৃতিক আন্দোলন মুখ্য ভূমিকা পালন করে থাকে। ব্রিটিশ আমলে বিভিন্ন কৃষ্টি আন্দোলনের কথা আমরা জানি। স্থানীয় কর প্রথার বিপক্ষে আমরা গ্রামীণ কবিদের গান বাধা, পুথিপাঠ, যাত্রা , নাটকে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে দেখা যায়। পাকিস্তান বিরোধী সাংস্কৃতিক আন্দোলন পরবর্তীতে বাংলাদেশ নির্মাণে প্রধান উদ্দীপক হিসাবে কাজ করেছে। 

ভাষা আন্দোলন , রবীন্দ্র সংগীত নিষেধাজ্ঞার প্রতিবাদে সাংস্কৃতিক কর্মীদের অবস্থান, ১৯৫৭ সালে কাগমারী আন্তর্জাতিক কৃষ্টি ও সাংস্কৃতিক সম্মেলন। যেই আন্তর্জাতিক সাংস্কৃতিক সম্মেলন থেকেই পাকিস্তানকে " আসসালামু আলাইকুম " বলে ভাসানী পশ্চিম পাকিস্তানের শাসকদেরকে বিদায় বার্তা দেন। ষাটের পুরোটা জুড়ে নানা পর্যায়ে সাংস্কৃতিক কর্মসূচী জনগণকে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার সাহস জুগিয়েছে। 

এরপর সত্তরের দশকে সাংস্কৃতিক কর্মীরাই দেশের অরাজক পরিস্থিতির কটাহ তুলে নিয়ে আসেন। এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে পুরোভাগে ছিল কবি , শিল্পী ও সাংস্কৃতিক কর্মীরা। বিএনপির আমলে আওয়ামী লীগকে আমরা সাংস্কৃতিক কর্মীদেরকে ব্যবহার হতে দেখি।  তবে এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম বিএনপি। বিএনপির সাংস্কৃতিক নেতৃত্ব অত্যন্ত দুর্বল কিংবা সাংস্কৃতিক কর্মীদের কোন স্থান আমি দেখতে পাইনা। 

বিএনপির সাংস্কৃতিক কর্মীদের মধ্যে সিংহভাগই বাণিজ্যিক শিল্পী। এদের মধ্যে খুব একটা বেশি রাজনৈতিক দর্শন এর প্রভাব দেখা যায় না। আর পুরো বছর জুড়ে জাতীয়তাবাদী রাজনীতি নিয়ে যে চর্চা হওয়া উচিত ছিল সেই বিষয়টি একেবারেই নেই। অর্থাৎ বিএনপি কখনওই সাংস্কৃতিক আন্দোলনের বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে থাকে না। এর ফলে বিএনপির নিজস্ব দর্শন মতবাদ সম্পন্ন নেতা কর্মীদের অভাব দেখা যায়। 

জন সমর্থন থাকলেও সাংস্কৃতিক বন্ধন তৈরি  হয়না, যার প্রভাব পড়ে যেকোন কর্মসূচীতে। একটি গণতান্ত্রিক আন্দোলনে সাংস্কৃতিক কর্মীদেরকে যুক্ত করতে না পারাটা রাজনৈতিক  ব্যর্থতা। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় সাংস্কৃতিক আন্দোলনের মাধ্যমেও রাজনৈতিক কর্মসূচী সফল হতে পারে। তবে কোন রাজনৈতিক কর্মসূচীতে সাংস্কৃতিক কর্মীদের সম্পৃক্ততা না থাকলে সেখানে গণঅভ্যুত্থানের আবহ তৈরি হয়না। 

পরিশীলিত সমাজ গঠনে সাংস্কৃতিক কর্মসূচী নিয়ামক শক্তি। শুধুমাত্র কয়েকটি গান পরিবেশন কিংবা নৃত্যানুষ্ঠান করলেই সেখানে সাংস্কৃতিক চর্চা হচ্ছে বলে ধরে নেওয়া যায় না। সাংস্কৃতিক আন্দোলন একটি চলমান প্রক্রিয়া। সেখানে রাজনীতি ঘনিষ্টভাবে যুক্ত থাকে। রাজনৈতিক উদ্দেশ্য ব্যতীত সাংস্কৃতিক কর্মসূচী যেমন মুখ থুবড়ে পড়ে, ঠিক তেমনি যেকোন গণআন্দোলনে  সাংস্কৃতিক কর্মসূচী না থাকলে সেই আন্দোলন মুখ থুবড়ে পড়ে।

 লেখক:  ফ্রান্স প্রবাসী কবি, লেখক ও গবেষক।

এএ

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়