শিরোনাম
◈ আলোচনা চালাতে চান ইইউ পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা, 'আগ্রাসন' বন্ধের শর্ত ইরানের ◈ সৌদি আরবকে হজের কোটা নিয়ে যে অনুরোধ করলেন ধর্ম উপদেষ্টার ◈ সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশি আমানতের রেকর্ড: কারা পাচার করল, কীভাবে করল? ◈ যুদ্ধের মুখে ইসরায়েলের নাগরিকদের সুরক্ষা রাখে ‘মামাদ’ কৌশল ◈ গাজায় ‘মানবসৃষ্ট খরা’তে শিশুরা তৃষ্ণায় মৃত্যুর ঝুঁকিতে: ইউনিসেফের সতর্কবার্তা ◈ বাংলাদেশের এক বিভাগের চেয়েও ছোট আয়তনের ইসরায়েলের জনসংখ্যা কত? ◈ সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি ইকবাল বাহার ডিবি হেফাজতে, বেইলি রোড থেকে আটক ◈ এই ইসরায়েল হাসপাতালে ক্ষতির অভিযোগ করেছে, অথচ তারা গাজায় ৭০০ হাসপাতালে হামলা করেছে: এরদোয়ান ◈ তারেক রহমানের দেশে ফেরা নিয়ে প্রস্তুতি চলছে, শিগগিরই ফিরবেন: আমীর খসরু ◈ জাতিসংঘ মহাসচিবের হুঁশিয়ারি: সংঘাত ছড়িয়ে পড়লে এমন আগুন জ্বলবে, যা কেউ থামাতে পারবে না

প্রকাশিত : ২০ জুন, ২০২৫, ১১:২৪ দুপুর
আপডেট : ২১ জুন, ২০২৫, ০৯:০০ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ইশরাক স্বেচ্ছায় না সরলে ঢাকার দুই সিটিতে নতুন নির্বাচন: বিএনপিকে সরকারের বার্তা

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে মেয়রের দায়িত্ব পালনের দাবিতে নগর ভবন অবরুদ্ধ করে রাখা বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন স্বেচ্ছায় না সরলে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনে নতুন নির্বাচনের পথে হাঁটবে সরকার। বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) রাতে প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন ‘যমুনা’তে উপদেষ্টা পরিষদের অনানুষ্ঠানিক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়। সেখানে উপস্থিত একাধিক উপদেষ্টা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। সূত্র: সমকাল

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে সরকারের ৯ জন উপদেষ্টা অংশ নেন। বৈঠকে ইশরাকের কর্মকাণ্ড নিয়ে বিস্তর আলোচনা হয়। বিশেষ করে শপথ না নিয়েই মেয়রের ‘দায়িত্ব’ পালন এবং নগর ভবন অচল করে রাখায় উপদেষ্টারা ক্ষোভ ও বিরক্তি প্রকাশ করেন। অনেকে সরকারপ্রধানকে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ারও পরামর্শ দেন।

বৈঠকে উপদেষ্টারা জানান, সরকার ইতোমধ্যেই ইশরাকের কর্মকাণ্ডে ভীষণভাবে বিরক্ত। একাধিক উপদেষ্টা বলেন, নাগরিক সেবা বন্ধ করে রেখে তিনি নগরবাসীর দুর্ভোগ বাড়িয়েছেন। সেইসঙ্গে সরকারের কর্তৃত্বকেও প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন। এজন্য তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও উঠে আসে।

তবে বিএনপির সঙ্গে সরকারের সাম্প্রতিক আস্থার সম্পর্ক এবং লন্ডনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠকের কারণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ব্যবহার এখনই না করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এতে আশঙ্কা করা হয়, ইশরাকের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিলে তিনি রাজনৈতিকভাবে সহানুভূতি পেতে পারেন।

উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত দক্ষিণ সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের শেখ ফজলে নূর তাপস বিজয়ী হন। বিএনপির প্রার্থী ইশরাক হোসেন নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ এনে ফল বাতিল চেয়ে মামলা করেন। গত ২৭ মার্চ নির্বাচনী ট্রাইব্যুনাল ইশরাককে বিজয়ী ঘোষণা করে। এরপর ইসির গেজেট প্রকাশ এবং হাইকোর্ট ও আপিল বিভাগে মামলার রায় ইশরাকের পক্ষে গেলেও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় শপথ পড়াতে অস্বীকৃতি জানায়।

গত ১৪ মে থেকে ইশরাকের সমর্থকরা ‘ঢাকাবাসী’ ব্যানারে নগর ভবন ঘেরাও করে রাখে। বিভিন্ন কক্ষে তালা দিয়ে নাগরিক সেবা কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়। এরপর তারা তিন দিন ধরে যমুনা বাসভবনও ঘেরাও করে রাখেন। ইশরাক নিজেও বিভিন্ন দপ্তরে গিয়ে সভা করেন, যেখানে তাকে ‘মাননীয় মেয়র’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়।

নির্বাচনের মেয়াদ শেষ হয়েছে গত ১ জুন। এরপরও ইশরাক মেয়র দাবি করে নগর ভবনে সক্রিয় আছেন। এসব ঘটনাকে কেন্দ্র করে জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, এনসিপিসহ আরও কয়েকটি দল সরকারের সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।

এ পরিস্থিতিতে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, ইশরাক যদি স্বেচ্ছায় সরে না দাঁড়ান এবং নগর ভবনের অচলাবস্থা না সরান, তাহলে সরকার নতুন করে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের পথে এগোবে। ইতোমধ্যে বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল স্থানীয় সরকারের নতুন নির্বাচনের পক্ষে মত দিয়েছে।

এদিকে বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেন, এখন আর চুপ করে থাকার সময় নেই। সরকার জানে, কী ঘটছে। সবকিছু সমন্বয়ের মাধ্যমেই হচ্ছে। তিনি বলেন, নাগরিক সেবা ব্যাহত হচ্ছে ঠিকই, তবে বাইরে থেকেও যতটা সম্ভব সেবা চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চলছে।

স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক তোফায়েল আহমেদ বলেন, এ পরিস্থিতিতে সরকার, বিএনপি ও ইশরাক—সবপক্ষই বাড়াবাড়ি করছে। তার মতে, আইন অনুযায়ী এখন ইশরাকের মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালনের সুযোগ নেই। তবে রাজনৈতিক সমঝোতার মাধ্যমে চাইলে তাকে প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া যেতে পারে। তিনি ইশরাকের বর্তমান ভূমিকার সমালোচনা করে বলেন, এটি অনাকাঙ্ক্ষিত ও লজ্জাজনক।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়