এম এম লিংকন: শুক্রবার সূর্যের নতুন আলোর সঙ্গে সঙ্গে এসেছে নতুন বছর, বঙ্গাব্দ ১৪৩০। পুরোনো সব জঞ্জালকে মুছে ফেলে মঙ্গলের প্রত্যয়ে বরণ করা হয়েছে বাংলা নতুন বছরকে। হাজার বছর ধরে গ্রামে-গঞ্জে বৈশাখী মেলার আয়োজন হলেও ইদানিং শহর-নগরেও এ মেলার আয়োজন দেখা যায়। এর মধ্যে রাজধানীর বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে সকাল থেকেই জমজমাটভাবে শুরু হয় বৈশাখী মেলা। নারায়ণগঞ্জের সোনাগাঁওয়ে ১৬ দিনব্যাপি মেলা শুরু হয়েছে।
বাংলা একাডেমীর মেলায় ৮৮টি স্টল বসছে। এর মধ্যে চামড়াজাত ও পাটজাত পণ্যের ১৩টি, ফ্যাশন ও বুটিকস পণ্যের ৪৮টি, খাদ্যজাত পণ্যের ১০টি, বাঁশ, বেত ও হস্তশিল্পের ৫টি, বিসিক মধুর দুটি এবং কারুশিল্পীদের ১০টি স্টল রয়েছে।
এ সব স্টলে রয়েছে জামদানি, নকশি কাঁথা ও নকশি পণ্য, হস্ত ও কারুশিল্প পণ্য, পাটজাত পণ্য, চামড়াজাত পণ্য, বাঁশ ও বেতের পণ্য, মৃৎশিল্প পণ্য, শতরঞ্জি, শীতলপাটিসহ হরেক রকমের স্বদেশি পণ্য। এছাড়াও রয়েছে মধু ও খাদ্যজাত পণ্য এবং শিশু কিশোরদের জন্য বিনোদন ব্যবস্থা। মূলত এই মেলা উপভোগ করছে শিশুরা।
বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি নুরুল হুদা বলেন, একে ঘিরে জাতি-ধর্ম-বর্ণ কিংবা ধনী- গরিব নির্বিশেষে সব মানুষের মধ্যে এক ধরনের সম্মিলন ও ঐক্য গড়ে ওঠে।
নারায়নগঞ্জের সোনারগাঁও জাদুঘরে ৩০ টি স্টল নিয়ে শুরু হয়েছে বৈশাখী মেলা। বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন এই মেলার আয়োজন করেছেন। মেলায় ঘুরতে আসা ইকবাল হোসেন জানান, বৈশাখী মেলা আমাদের প্রাণের ঐতিহ্য। পুরোনো সব দুঃখ কষ্ট ভুলে মঙ্গল কামনা করি আমরা। এই মেলায় বাচ্চারা অনেক আনন্দ করছে। এর মাধ্যমে বাচ্চারা বাঙালিদের বিভিন্ন সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচিত হচ্ছে।
প্রতিনিধিরা জানান, দিনাজপুরের বিরামপুর ও কিশোরগঞ্জের বাজিতপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে চলছে প্রাণের বৈশাখী মেলা।
দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলার মির্জাপুরে ৩১৮ বছরের পুরোনো জামলেশ্বর মণ্ডপে চলছে মেলা। রাজা ভৈরব চন্দ্র বাংলা ১১১১ সন থেকে মির্জাপুরে চৈত্রসংক্রান্তির পূজা-অর্চনা ও মেলার সূচনা করেন। সেই থেকে প্রতি বছর এখানে হরেক রকমের মিষ্টি-মিষ্টান্ন, মৌসুমি ফলমূল, মাটির তৈজসপত্র, বাঁশ বেতের আসবাবপত্র, লোহার সামগ্রী ও বিভিন্ন রকমের গৃহস্থালি সামগ্রী নিয়ে বিভিন্ন জেলা থেকে ব্যবসায়ীরা আসেন এই মেলায়।
কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর বাজার বাঁশ মহলে দেড় শতাধিক বছর ধরে বসছে বৈশাখী মেলা। এই মেলার সবচেয়ে আকর্ষণীয় দিকটি হচ্ছে ঘুড়ি উড়িয়ে কাটাকাটি উৎসব। সম্পাদনা: সালেহ্ বিপ্লব