শিরোনাম
◈ ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে হাজার কোটি ডলারের গোপন আঁতাত কারা টিকিয়ে রেখেছে ◈ তুরিন আফরোজের ডক্টরেট ডিগ্রি ভুয়া: আপিল বিভাগে তথ্য-প্রমাণ দাখিল ◈ ‘মানবিক করিডর’ নিয়ে সরকার কোনো চুক্তি করেনি: ড. খলিলুর রহমান ◈ ‌‘ঐকমত্যের ভিত্তিতে জুলাই সনদ তৈরিতে সবাইকে একটু ছাড় দিতে হবে’ ◈ জোবাইদা রহমান বিএনপির নেতৃত্বে আসবেন, নাকি ফিরবেন পুরনো চিকিৎসা পেশায়? ◈ গোপনে পাকিস্তানি নারীকে বিয়ে, ভিসা লঙ্ঘনে চাকরি গেল ভারতীয় জওয়ানের! ◈ ৮০০ ডলারের নিচের পণ্যে শুল্ক বসাল ট্রাম্প, চাপে তেমু-শেয়েন, বিপাকে ডিজিটাল বিজ্ঞাপন বাজার ◈ "নির্বাচনে ব্যবহার না হলেও দেড় লাখ ইভিএমের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত, হস্তান্তর প্রক্রিয়াও ঝুলে আছে" ◈ এবার পা‌কিস্তা‌নে আই‌পিএল সম্প্রচার নি‌ষিদ্ধ ◈ ইং‌লিশ লি‌গে হে‌রেই গে‌লো আর্সেনাল

প্রকাশিত : ০৪ মে, ২০২৫, ১১:১১ দুপুর
আপডেট : ০৪ মে, ২০২৫, ০৩:০০ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

প্রতি কেজি ২৮ লাখ টাকা, রাজশাহীতে চাষ হচ্ছে ‘বিশ্বের সবচেয়ে দামী মরিচ

’ইফতেখার আলম বিশাল : রাজশাহীর এক ছাদবাগানে চাষ হলো বিশ্বের সবচেয়ে দামী মরিচ—চারাপিতা। অবিশ্বাস্য হলেও সত্য, এ মরিচের বাজারমূল্য কেজি প্রতি ২৩ হাজার মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ২৮ লাখ টাকা! এই বিস্ময়কর কীর্তির নায়ক নগরীর চন্দ্রিমা থানার দুরুলের মোড় এলাকার উদ্যমী বাগানপ্রেমী মো. মাসুম।

ছাদের অল্প জায়গায় বিদেশি গাছের এক রাজ্য গড়ে তোলা মাসুম আমেরিকার ফ্লোরিডা থেকে সংগ্রহ করেছেন এই দুর্লভ মরিচের বীজ। সাধারণ কৃষক যেখানে ধান বা সবজিতেই সীমাবদ্ধ, সেখানে মাসুম দেশের মাটিতে ফলিয়েছেন বিশ্বের দামি ও দুর্লভ মরিচ, যার উৎপত্তি পেরুর আমাজন রেইনফরেস্টে। এর ঝালমাত্রা ১ লক্ষ থেকে ৩.২৫ লক্ষ স্কোভিল হিট ইউনিট (SHU)। বিশ্বের শীর্ষ ঝাল মরিচগুলোর মধ্যে এটি অন্যতম।

মধ্যপ্রাচ্যে চারাপিতা’র চাহিদা আকাশচুম্বী প্রিমিয়াম রেস্টুরেন্ট ও খাবার প্রস্তুতকারকরা এই মরিচ ব্যবহার করে তৈরি করেন ঝাল সস, গুরমে কারি এবং সুগন্ধি তেল। বিরিয়ানি-পোলাও রান্নার সময় এই মরিচ ব্যবহারে ঘ্রাণ ও স্বাদে ভিন্নমাত্রা আসে—এমনটাই বলছে উপসাগরীয় অঞ্চলের রাঁধুনিদের অভিজ্ঞতা। মরিচটি সারা বিশ্বে পাউডার ও শুকনো রূপে বাজারজাত হয়, বিশেষ করে দুবাই, সৌদি আরব ও কাতারে উচ্চমূল্যে বিক্রি হয়।

রাজশাহীর খরাপ্রবণ ও অপেক্ষাকৃত শীতল জলবায়ুতে এ মরিচ চাষ সহজ নয়। কিন্তু মাসুমের নিষ্ঠা ও যত্নে তাঁর বাগানের ৩টি গাছে ধরেছে শত শত মরিচ। তাঁর ছাদে শুধু চারাপিতাই নয়, রয়েছে আরও দুটি বিদেশি মরিচ—সুইট চেরি (মিষ্টি মরিচ) ও পিকিউ মরিচ।

মাসুমের বাগানে রয়েছে আন্তর্জাতিক ফলের সমারোহ চাষ করছেন ২৬ প্রজাতির বিদেশি আনার—তিউনিশিয়ান, মেক্সিকান, ইরানি, থাই, ভুটানি, অস্ট্রেলিয়ান সহ নানা জাত।

সাথে রয়েছে: ইন্দোনেশিয়ান সীডলেস লিচু (১২ মাস ধরে ফল দেয়), ৬ জাতের আঙুর (সোনাকা, হেরিকা, রেড হার্ড ইত্যাদি)। থাই রেইনবো সুগারকেন ও ফিলিপাইনের কালো আঁখ। রয়েছে কালো ও সাদা ভুট্টা, স্পেনের আতা, ড্রাগন ফল, লাল তেঁতুল, জামরুল, কমলা ও মালটা।

মাসুম বলেন, আমি এখন পর্যন্ত ৩ লাখ টাকার বেশি গাছ বিক্রি করেছি। কিন্তু জায়গার অভাবে অনেক গাছ রাখতে পারছি না। যদি সরকার কৃষি জমি লিজ দেয়, আমি বিদেশি ফল ও উচ্চমূল্যের ফসল চাষ করে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বড় ভূমিকা রাখতে পারি,” বলেন মাসুম।

তাঁর দাবি, কৃষি কর্মকর্তারা তাঁর বাগান পরিদর্শন করলেও একটি রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে তিনি প্রাপ্য কৃষি পুরস্কার থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। সেই পুরস্কার চলে যায় রাসিকের সাবেক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের স্ত্রী রেনীর হাতে।

মাসুমের বাগান আজ কেবল একটি ছাদ নয়—এটি শহরভিত্তিক কৃষির এক মডেল, উদ্ভাবনী ও জৈব কৃষির বাস্তব উদাহরণ। তাঁর মতো উদ্যোক্তাদের সহায়তা করলে বাংলাদেশে বৈশ্বিক চাহিদাসম্পন্ন উচ্চমূল্য ফসল চাষ করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব বলে মনে করেন অনেকে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়