শিরোনাম
◈ নিয়ন্ত্রণরেখায় ফের ভারত-পাকিস্তান সেনাদের গোলাগুলি ◈ পাকিস্তান যদি পাল্টা আঘাত হানে, তখন তা ঘোষণার কোনও দরকার হবে না: জেনারেল আহমেদ শরিফ ◈ অনিশ্চয়তার মাঝেও পি‌সি‌বি চায় বাংলাদেশ দল পাকিস্তান সফরে আসুক ◈ এই প্রথম হ‌কি বিশ্বকাপে আম্পায়া‌রিং করবেন  বাংলা‌দে‌শের সে‌লিম ও শাহবাজ  ◈ পারভেজ হত্যায় গ্রেফতার অভিযুক্ত টিনা ◈ রাফালের ধ্বংসাবশেষ সরানোর প্রমাণ পেয়েছে বিবিসি ভেরিফাই! ◈ যুদ্ধক্ষেত্রের ‘সাইলেন্ট কিলার’ হারোপ ড্রোনের বিশেষত্ব কী? (ভিডিও) ◈ এখানে আরেকটা বেয়াদব আছে, সে শহীদ ফ্যামিলিকে ননসেন্স বলেছে: সংবাদ সম্মেলনেই শহীদ ইয়ামিনের বাবা(ভিডিও) ◈ দুপুরের মধ্যে সব রাজনৈতিক দলকে ডেকে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করার দাবি, জানিয়েছেন জামায়াতের ঢাকা দক্ষিণের সেক্রেটারি ◈ ভরসার বিনিময়ে পেয়েছি অশ্বডিম্ব, সব দোষ এখন ছাত্র উপদেষ্টা নন্দঘোষ: উপদেষ্টা মাহফুজ

প্রকাশিত : ২৯ মার্চ, ২০২৩, ০৫:৩৫ সকাল
আপডেট : ২৯ মার্চ, ২০২৩, ০৫:৩৫ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

রমজানে সালাতুত তাহাজ্জুদ

প্রতীকী ছবি

মুফতি আনিসুর রহমান রিজভি: পাঁচ ওয়াক্ত সালাতের পর নফল সালাতের মধ্যে সর্বোত্তম মর্যাদাপূর্ণ এবং বরকতময় সালাত হলো সালাতুত তাহাজ্জুদ। মাহে রমজানে সালাতুত তাহাজ্জুদের সাওয়াব এবং ফজিলত অন্যান্য মাসের নফল সালাতের চেয়ে বহুগুণ বেশি এবং মর্যাদাপূর্ণ। সালাতুত তাহাজ্জুদ পাঁচ ওয়াক্ত সালাত ফরজ হওয়ার আগে নবী সা:-এর ওপর ফরজ ছিল। পাঁচ ওয়াক্ত সালাত ফরজ হলে সালাতুত তাহাজ্জুদের ফরজিয়্যাত বিলুপ্ত হয়ে যায়। মাহে রমজানে তাহাজ্জুদের সালাত আদায় করার একটি স্পেশাল সুযোগ থাকে মু’মিনদের। আর এই সুযোগটাকে কাজে লাগানোই হবে মু’মিনদের প্রধান কাজ।

সালাতুত তাহাজ্জুদ আদায় করা সুন্নাতে রাসূল। সালাতুত তাহাজ্জুদ অত্যন্ত বরকত ও ফজিলতপূর্ণ সালাত। এর মাধ্যমে মানুষ আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি অর্জন এবং নৈকট্য লাভ করতে পারে।

কুরআনুল কারিমে আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন- ‘হে রাসূল! আপনি রাতের কিছু অংশ তাহাজ্জুদ পড়–ন। এটি আপনার জন্য অতিরিক্ত দায়িত্ব। আশা করা যায় আপনার প্রতিপালক আপনাকে প্রতিষ্ঠিত করবেন প্রশংসিত স্থানে। (সূরা বনি ইসরাঈল-৭৯)
নবীজী সা: সালাতুত তাহাজ্জুদে দীর্ঘ সময় অতিবাহিত করতেন : হজরত মুগিরা রা: থেকে বর্ণিত- তিনি বলেন, নবীজী সা: সালাতুত তাহাজ্জুদে এত দীর্ঘক্ষণ যাবৎ দাঁড়ালেন যে তাঁর পা দু’টি ফুলে গেল। যখন তাকে বলা হলো আপনি এরূপ কেন করেন? আল্লাহ তায়ালা তো আপনার পূর্বাপর সব গুনাহ মাফ করে দিয়েছেন। উত্তরে তিনি বললেন, আমি কি আল্লাহর কৃতজ্ঞ বান্দা হবো না? (বুখারি ও মুসলিম, মিশকাত-১১৪৯)

নবী সা: সালাতুত তাহাজ্জুদ নিয়মিত আদায় করতেন। কোনো কারণে তিনি এই সালাত আদায় করতে না পারলে ফজর ও জোহরের মধ্যবর্তী সময়ে এর পরিবর্তে বারো রাকাত সালাত পড়ে নিতেন। আয়েশা রা: থেকে বর্ণিত- রাসূল সা: ব্যথা বা অন্য কোনো কারণে যদি সালাতুত তাহাজ্জুদ আদায় করতে না পারতেন, তবে তিনি দিনে ১২ রাকাত সালাত আদায় করে নিতেন। (মুসলিম-১৬৪০)

আবু উমামা রা: থেকে বর্ণিত- তিনি বলেন, নবীজী সা: ইরশাদ করেন, ‘তোমরা রাতের (তাহাজ্জুদের) সালাতকে আবশ্যক করে নেবে। কেননা, এটি হচ্ছে তোমাদের আগেকার সৎলোকদের নিয়ম। তোমাদের জন্য প্রতিপালকের নৈকট্য লাভের পন্থা, গুনাহ মাফের উপায় এবং অপরাধ থেকে বাধাদানকারী।’ (তিরমিজি-৩৫৪৯, ইবনে খুজাইমা-১১৩৫)
আবু সাঈদ খুদরি রা: থেকে বর্ণিত- তিনি বলেন, রাসূলল্লাহ ইরশাদ করেন, ‘তিন ব্যক্তির ওপর আল্লাহ খুশি হন- ১. যখন সে রাতে (তাহাজ্জুদের) সালাত আদায় করার জন্য ওঠে; ২. মুসল্লিরা যখন সালাতের জন্য কাতার বাঁধে; ৩. সৈন্যদল যখন শত্রুর সাথে যুদ্ধ করার জন্য সারিবদ্ধ হয়।’ (শরহুস সুন্নাহ, মিশকাত-১১৫৭)

সালাতুত তাহাজ্জুদ যেহেতু শেষ রাতে ঘুম থেকে উঠে পড়া হয়, সেহেতু এর সাওয়াব অন্যান্য নফল সালাতের চেয়ে বহুগুণ বেশি। হজরত আবু হুরায়রা রা: থেকে বর্ণিত- তিনি বলেন, আমি রাসূল সা:-কে বলতে শুনেছি, ফরজ সালাতের পর সর্বাধিক শ্রেষ্ঠ সালাত রাতের সালাত। আর এখানে রাতের সালাত বলতে সালাতুত তাহাজ্জুদই উদ্দেশ্য। (তিরমিজি, মুখতাসারুল আহকাম-২/৩৯৩)

সালাতুত তাহাজ্জুদ আদায়কারীর জন্য আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে ক্ষমা ঘোষণা দেয়া হয়েছে। যেমন হজরত আবু উমামা রা: থেকে বর্ণিত- তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সা: ইরশাদ করেন, ‘তোমরা রাতের (তাহাজ্জুদের) সালাতকে আবশ্যক করে নাও। কেননা, এটি হচ্ছে তোমাদের আগেকার সৎলোকদের নিয়ম। তোমাদের জন্য প্রতিপালকের নৈকট্য লাভের পন্থা, গুনাহ মাফের উপায়।’ (ইমাম তাবরানি, আল-মুজামুল আওসাত-৩/৩১১)

তাহাজ্জুদ সালাত ৪, ৬, ৮, ১০, ১২ ইত্যাদি রাকাত আদায় করা যায়। নফল সালাতের রাকাত সংখ্যাও নির্দিষ্ট নেই। তাই যে যত বেশি এই নফল সালাত আদায় করতে পারবে।

মাহে রমজান বান্দার জন্য শ্রেষ্ঠ একটি মাস। এই মাসের ইবাদত-বন্দেগির সাওয়াব অন্য যেকোনো মাসের চেয়ে বহুগুণ বেশি। রমজানে নফল সালাত আদায় করলে অন্য মাসের ফরজের সমতুল্য সাওয়াব পাওয়া যায়। আর রমজান মাসে রোজাদাররা যেহেতু সাহরি গ্রহণ করার জন্য ওঠে, একটু আগেভাগেই উঠে এই ফজিলতপূর্ণ সালাত আদায় করে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন এবং ক্ষমা প্রার্থনার সুবর্ণ সুযোগটিকে কাজে লাগিয়ে অশেষ কল্যাণ লাভ করতে পারে।

লেখক : আরবি প্রভাষক, চরণদ্বীপ রজভীয়া ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসা, বোয়ালখালী, চট্টগ্রাম

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়