থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়া নতুন করে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে এখন পর্যন্ত কোনো পক্ষই স্বাধীনভাবে এ তথ্য নিশ্চিত করেনি। এই ঘোষণাটি এসেছে দুই দেশের সীমান্তে পাঁচ দিন ধরে চলা রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের মধ্যে, যেখানে অন্তত ২০ জন নিহত এবং উভয়পক্ষের প্রায় পাঁচ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।
শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) থাই প্রধানমন্ত্রী অনুতিন চার্নভিরাকুল ও কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন মানেতের সঙ্গে ফোনালাপের পর ট্রাম্প সামাজিকমাধ্যম ট্রুথ সোশালে লিখেছেন, ‘তারা আজ সন্ধ্যা থেকে সব ধরনের গুলিবর্ষণ বন্ধ করতে এবং মূল শান্তিচুক্তিতে ফিরে যেতে সম্মত হয়েছে। মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের সহযোগিতায় চুক্তিটি হয়েছিল।’
যদিও ট্রাম্প যুদ্ধবিরতির দাবি করেছেন, থাইল্যান্ড বা কম্বোডিয়া কেউই তা সরকারি ভাবে নিশ্চিত করেনি। এর আগে থাই প্রধানমন্ত্রী অনুতিন জানান, তিনি ট্রাম্পকে বলেছেন যে সংঘর্ষ বন্ধের দায়িত্ব কম্বোডিয়ার।
ওয়াশিংটন ডিসি থেকে আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, ট্রাম্প এই ঘোষণার মাধ্যমে নিজেকে আবারও বৈশ্বিক ‘শান্তিদূত’ হিসেবে উপস্থাপন করতে চাইছেন। প্রতিবেদনের ভাষায়, তিনি প্রায়ই দাবি করেন- তিনি ‘আটটি যুদ্ধ সমাধান করেছেন’ এবং শান্তি স্থাপনে নিজের ভূমিকা তুলে ধরতে আগ্রহী।
উল্লেখ্য, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দুই প্রতিবেশীর মধ্যে জুলাইয়ে একটি যুদ্ধবিরতি হয়েছিল, যা মালয়েশিয়ার মধ্যস্থতায় হয় এবং ট্রাম্পের চাপের ফলেই এগোয়। অক্টোবরের আঞ্চলিক বৈঠকে চুক্তিটি আরও বিস্তারিতভাবে আনুষ্ঠানিক রূপ পায়। তবে নভেম্বরে সীমান্তে ল্যান্ডমাইনে থাই সেনারা আহত হলে ব্যাংকক যুদ্ধবিরতি স্থগিত করে।
দুই দেশই দীর্ঘদিন ধরে সীমান্তের ঐতিহাসিক বিরোধ নিয়ে পরস্পরকে দোষারোপ করে আসছে। ৮০০ কিমি দীর্ঘ সীমান্তের অবস্থান নিয়ে উপনিবেশিক আমলের মানচিত্র ও ১৯৬২ সালের আন্তর্জাতিক আদালতের রায়ে তৈরি উত্তেজনা এখনো বহাল।
এই সীমান্তবিরোধের শিকড় রয়েছে ১৯০৭ সালের ফরাসি উপনিবেশিক যুগের একটি মানচিত্রে, যা থাইল্যান্ড ভুল বলে দাবি করে। ১৯৬২ সালে আন্তর্জাতিক আদালত কম্বোডিয়াকে কিছু অংশের সার্বভৌমত্ব দিলে তা বহু থাই নাগরিকের মধ্যে ক্ষোভ উসকে দেয়। সূত্র: আল-জাজিরা