নিউইয়র্কের কুইন্সে নিজ অ্যাপার্টমেন্টের কয়েক ব্লক দূরের একটি স্কুল জিমনেসিয়ামে সকালে স্ত্রীকে নিয়ে ভোট দিতে যান জোহরান মামদানি।
সিএনএন বলছে, এভাবেই নির্বাচনের দিনটি শুরু করেন তিনি এবং পরে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নিউইয়র্ক সিটির অর্থায়ন বন্ধের হুমকি নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।
ভোটকেন্দ্রে সাংবাদিকরা যখন জিজ্ঞেস করেন, দীর্ঘ প্রচারণা শেষে তার অনুভূতি কী, মামদানি হাসতে হাসতে বলেন, 'এখনো রাত ৯টা পর্যন্ত সময় আছে, ভাই।'
এরপর কয়েক ব্লক দূরে একটি খেলার মাঠে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হলে তাকে প্রশ্ন করা হয়—জয়ের ব্যবধান কত হতে পারে, বিশেষ করে ৫০ শতাংশ ভোট পাওয়া না পাওয়ার ওপরই তার 'জনমতের ম্যান্ডেট' নির্ভর করছে কি না?
মামদানির উত্তর ছিল, 'আমার বিশ্বাস, জয় নিজেই একটি ম্যান্ডেট।'
৩৪ বছরের জোহরানকে শহর চালানোর জন্য খুব অনভিজ্ঞ সন্দেহ-পোষণকারীদের প্রতি তার প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে মামদানি বলেন, 'আমি প্রতিদিনই একটু একটু করে বড় হচ্ছি। আমি নিউইয়র্কের মানুষের কথাই সবচেয়ে বেশি ভাবি, আমাদের পাঁচটি নগরের বাইরে কিছু নয়। যারা আমাকে ভোট দিয়েছেন তাদের আশা পূরণ এবং যারা অন্য কাউকে ভোট দিয়েছেন বা ভোটই দেননি—তাদের আস্থা অর্জন করতে মুখিয়ে আছি।'
পছন্দের প্রার্থী অ্যান্ড্রু কুয়োমো জয়ী না হলে নিউইয়র্কের অর্থায়ন বন্ধ করে দেবেন, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এমন হুমকির বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে মামদানির জবাব, 'আমি তার হুমকিকে হুমকি হিসেবেই ধরে নেব। এগুলো একজন প্রেসিডেন্টের কথা, আইনের কথা নয়। আমরা অনেক সময় তার প্রতিটি কথাকে কেবল তিনি প্রেসিডেন্ট বলেই আইন হিসেবে ধরে নিই, যা ঠিক নয়।'
সংক্ষিপ্ত বক্তব্য শেষে মামদানি বলেন, 'আমি এই প্রেসিডেন্টকে ভয় পাই না, ভয় পাবও না।'
অপরদিকে, মামদানির সম্ভাব্য প্রতিদ্বন্দ্বী ট্রাম্পের পছন্দের নিউইয়র্কের সাবেক গভর্নর, এখন মেয়র পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী অ্যান্ড্রু কুয়োমো ম্যানহাটনে ভোটদান শেষে সাংবাদিকদের বলেন, 'আমার খুব ভালো লাগছে। মনে হচ্ছে গতি আমাদের দিকেই।'
কুয়োমো বলেন, 'আমি অনেকবার ভোট দিয়েছি, কিন্তু এই প্রথম কোনো ভোটকেন্দ্রে ঢুকেই মানুষকে হাততালি দিতে দেখেছি—এটা দারুণ সংকেত। আর রেকর্ড সংখ্যক ভোটার উপস্থিতি ভালো লক্ষণ।'
যখন তাকে জিজ্ঞেস করা হয় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তাকে সমর্থন করছেন কি না, কুয়োমো বলেন, 'প্রেসিডেন্ট আমাকে সমর্থন করছেন না। প্রেসিডেন্ট জোহরান মামদানির বিরোধিতা করছেন। তিনি মনে করেন মামদানি একজন কমিউনিস্ট এবং তিনি এক ধরনের অস্তিত্বগত হুমকি।'
মামদানিকে নিয়ে নিজের মত প্রকাশ করতে গিয়ে কুয়োমো বলেন, 'আমি মনে করি তিনি একজন সমাজতন্ত্রী— আর সেটা সাজানো-পোশাকি সমাজতন্ত্র নয়। তাদের সেই সমাজতন্ত্রে সরকারই উৎপাদনের সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করে, ব্যক্তিগত রিয়েল এস্টেট মালিকানা থাকে না, জেলখানা বিলুপ্ত হয়, যৌনকর্ম বৈধ হয়— এটা ভয়ানক চিন্তা। আমি মনে করি এ কারণেই নিউইয়র্কবাসী সাড়া দিচ্ছেন ও ভোট দিতে বের হচ্ছেন। আমি একেবারে বিপরীত দৃষ্টিভঙ্গিই তুলে ধরছি।'
সকালে কুইন্সে মামদানি, ম্যানহাটনে কুয়োমো এবং রিপাবলিকান প্রার্থী কার্টিস স্লিওয়া আগেই আগাম ভোট দিয়েছেন। সবার প্রশ্ন এখন কে হচ্ছেন নিউইয়র্কের মেয়র? উৎস: ডেইলিস্টার।