স্পোর্টস ডেস্ক: পর্তুগিজ ফুটবল তারকা ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর প্রকৃত বয়স ৪০ পেরিয়েছে ঠিকই, কিন্তু তার শরীরের জৈবিক বয়স এখনো ২০ বছর—এমনটাই দাবি করেছেন সৌদি আরবের একজন ক্রীড়া বিজ্ঞানী। রোনালদোকে 'বিরল ঘটনা' হিসেবে আখ্যা দিয়ে তার শরীর ও জীবনযাপন নিয়ে বৈজ্ঞানিক গবেষণার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
তাইবাহ ইউনিভার্সিটির এক্সারসাইজ ফিজিওলজির অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আলি আল আহমাদি বলেন, “ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো আধুনিক স্পোর্টস সায়েন্সের জন্য একটি অনন্য মডেল। যেখানে বেশিরভাগ ফুটবলার ত্রিশের কোঠায় ক্যারিয়ার শেষ করেন, সেখানে রোনালদো তার শৃঙ্খলা, শারীরিক সুস্থতা এবং আত্মনিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে বিশ্ব ক্রীড়াঙ্গনে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।”
সৌদি রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে অধ্যাপক আহমাদি বলেন, “রোনালদো শুধু একজন ফুটবলার নন, বরং এক চলমান গবেষণার বিষয়। তার জৈবিক বয়স এখনো ২০-এর কোঠায়, যা অত্যন্ত বিরল। বয়স বাড়লেও তিনি যেন আরও বেশি ফিট হয়ে উঠছেন।”
তিনি আরও জানান, রোনালদোর শরীরে ৫০ শতাংশ পেশি ও মাত্র ৭ শতাংশ চর্বি রয়েছে, যা বিশ্বের সবচেয়ে ফিট অ্যাথলিটদের ক্ষেত্রেও অনন্য। তার খাবার, ঘুম, অনুশীলন—সবই অত্যন্ত বিজ্ঞানসম্মতভাবে পরিচালিত।
ড. আহমাদি রোনালদোর শরীর, ফিটনেস ও শারীরিক গঠন নিয়ে অ্যানথ্রোপোমেট্রিক এবং আন্তর্জাতিক ফিজিওলজিক্যাল মডেল অনুযায়ী গবেষণা করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। তার লক্ষ্য এই গবেষণাকে বৈজ্ঞানিক জার্নালে প্রকাশ করে সৌদি আরবের নামে বৈশ্বিক পর্যায়ে পরিচিত করা।
তিনি বলেন, “রোনালদোর সৌদি আরবে উপস্থিতি শুধু ফুটবলের জন্য নয়, বরং একটি বৈজ্ঞানিক উত্তরাধিকার হিসেবে বিবেচনা করা উচিত। আমরা এই স্বাস্থ্য মডেল নিয়ে গবেষণা করে পুরো বিশ্বকে জানাতে চাই।”
রোনালদোর প্রভাব মাঠের বাইরেও পড়ছে বলে মনে করেন তিনি। উদাহরণস্বরূপ, আল নাসরের ম্যাচগুলোতে দর্শক সংখ্যা ২০ শতাংশ বেড়েছে।
ড. আহমাদি আরও বলেন, “বেশিরভাগ খেলোয়াড় যেখানে ৩০ বছর বয়সের মধ্যেই অবসর নেন, সেখানে রোনালদো অতিরিক্ত এক দশক ক্যারিয়ার বাড়িয়ে অর্ধেক বয়সী প্রতিদ্বন্দ্বীদের সঙ্গেও পাল্লা দিচ্ছেন—অনেক সময় তাদের ছাড়িয়েও যাচ্ছেন।”
রোনালদোর একটি প্রেরণাদায়ী উক্তি দিয়ে তিনি বলেন, “আমি প্রতিদিন জিমে যেতে ভালোবাসি এমন নয়, আমিও সাধারণ মানুষের মতো। কিন্তু আমি জানি, আমাকে এটা করতেই হবে। তোমাকে ব্যায়াম ভালোবাসতে হবে না, কিন্তু শরীর ও স্বাস্থ্যের প্রতি সম্মান দেখাতে হবে।”