কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি : কুড়িগ্রামের তিনটি প্রধান নদী—ধরলা, ব্রহ্মপুত্র ও দুধকুমার—তীর রক্ষা ও ব্যবস্থাপনায় প্রায় ২ হাজার ২৫১ কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) আওতায় বাস্তবায়িত এসব প্রকল্প শেষ হলে জেলার কয়েক হাজার বসতবাড়ি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় উপাসনালয় এবং হাট-বাজার ভাঙনের হাত থেকে রক্ষা পাবে। উপকৃত হবেন অন্তত ১৫ লাখ মানুষ।
পাউবো সূত্রে জানা গেছে, কুড়িগ্রাম সদর, রাজারহাট ও ফুলবাড়ী উপজেলার ধরলা নদীর তীর সংরক্ষণ প্রকল্পের (প্রথম সংশোধিত) ৬২৯ কোটি টাকা ব্যয়ে ৭২ শতাংশ কাজ ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে।
চিলমারী ও উলিপুর উপজেলার ব্রহ্মপুত্র নদের ডানতীর রক্ষা প্রকল্পে ৪৪৮ কোটি টাকা ব্যয়ে ৯৩ শতাংশ এবং রৌমারী ও রাজিবপুর উপজেলার ব্রহ্মপুত্রের বামতীর সংরক্ষণ প্রকল্পে ৪৮০ কোটি টাকায় শতভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। অন্যদিকে, দুধকুমার নদীর ব্যবস্থাপনা ও উন্নয়ন প্রকল্পের ৬৯২ কোটি টাকায় ৬১ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে।
সব প্রকল্পের নির্ধারিত সময়সীমা চলতি বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত।
স্থানীয়দের প্রত্যাশা ও প্রতিক্রিয়া
ধরলা নদীর পাড়ের বাসিন্দা কহিনুর রহমান ও গোলজার হোসেন বলেন, "এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে অনেক পরিবার ভাঙনের হাত থেকে বাঁচবে, উন্নতি হবে জীবনের মানে।"
দুধকুমার নদীতীরের বাসিন্দা আমজাদ হোসেন, সুলতান মাহামুদ ও রাজিয়া বেগম বলেন, “এই কাজ আমাদের আতঙ্কমুক্ত জীবন উপহার দেবে।”
চিলমারীর রমনা ঘাট এলাকার নুর মোহাম্মদ, জব্বার আলী ও সকিনা বানু বলেন, “বছরের পর বছর নদীভাঙনে ভুগেছি। প্রকল্পটি সঠিক সময়ে শেষ হলে আমরা স্বস্তি পাব।” রৌমারী উপজেলার মাসুদুর রহমান ও আওরঙ্গজেব বলেন, “এতদিনের প্রত্যাশা বাস্তবে রূপ নেবে।”
প্রকল্প পরিচালকদের বক্তব্য
প্রকৌশলী আহসান হাবীব, রৌমারী-রাজিবপুর প্রকল্পের পরিচালক, বলেন: “গুণগত মান বজায় রেখে শতভাগ কাজ শেষ করেছি।”
প্রকৌশলী মাহবুবর রহমান, ধরলা ও দুধকুমার প্রকল্প পরিচালক, জানান: “ধরলা প্রকল্পে ৭৩ শতাংশ এবং দুধকুমারে ৬১ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে, বাকি কাজ সময়মতো শেষ করা হবে।”
প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান, ব্রহ্মপুত্র ডানতীর প্রকল্প পরিচালক, বলেন: “৯৩ শতাংশ কাজ শেষ, বাকি কাজ দ্রুত শেষ করার চেষ্টা চলছে।”
পাউবো কুড়িগ্রাম জেলার সংশ্লিষ্ট প্রকল্পগুলোর সময়মতো ও গুণগত মান বজায় রেখে বাস্তবায়নে সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। উন্নয়ন কাজ শেষ হলে দীর্ঘদিনের নদীভাঙন সমস্যা থেকে মুক্তি পাবে জেলার লাখো মানুষ।