মো. রমজান আলী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি : চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলে চালক রাজু আহমেদকে গলা কেটে হত্যার পর ব্যাটারিচালিত ভ্যান ছিনতাইয়ের ঘটনার তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পুলিশের দাবি, এদের মধ্যে হত্যার অভিযোগে একজনকে ও ছিনিয়ে নেয়া ভ্যান কেনার অভিযোগে অপর দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
শনিবার দুপুরে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক প্রেসব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এএনএম ওয়াসিম ফিরোজ। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার উত্তর সিঙ্গেরগাড়ী এলাকার খাদেমুল ইসলাম মধু, চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলার ফতেপুর-মসজিদপাড়ার আমানত আলী ও তার ছেলে আমিনুর রহমান। খাদেমুল ইসলাম মধুর বাড়ি নীলফামারী হলেও নাচোলে বিয়ে করে তিনি সেখানেই ভাড়া বাড়িতে থাকতেন।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ওয়াসিম ফিরোজ প্রেসব্রিফিংয়ে বলেন, গত ২৩ জুন নাচোল উপজেলার পারিলা চাঁনপুকুর এলাকা থেকে রাজুর গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এরপর থেকেই হত্যার সঙ্গে জড়িতদের ধরতে মাঠে নামে পুলিশ। বৃহস্পতিবার রাতে নীলফামারী থেকে গ্রেপ্তার করা হয় রাজুর হত্যাকারী খাদেমুল ইসলাম মধুকে। পরে তার দেয়া তথ্য অনুযায়ী শুক্রবার রাতে গ্রেপ্তার করা হয় আমিনুর ও আমানতকে। এ সময় ছিনিয়ে নেয়া রাজুর ব্যাটারিচালিত ভ্যানটি উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশের কাছে হত্যার দায় স্বীকার করেছে খাদেমুল ইসলাম মধু। তিনি পুলিশকে বলেছেন, ভ্যান ছিনিয়ে নিতেই হত্যা করা হয় রাজুকে।
ওয়াসিম ফিরোজ আরও বলেন, নাচোল রেল স্টেশন এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতেন খাদেমুল। একই এলাকায় বাস করায় রাজুর সঙ্গে তার বন্ধুত্ব গড়ে উঠে। তারা একসঙ্গে নিয়মিত গাঁজা সেবন করতেন। একসময় খাদেমুল ব্যাটারিচলিত ভ্যানটি নেওয়ার জন্য রাজুকে হত্যার পরিকল্পনা করে। পূর্ব পলিকল্পনা অনুযায়ী ঘটনার দিন (২২ জুন) বিকালে রাজুকে চুয়ানি খাওয়ানোর কথা বলে দুইজনই একসাথে ভ্যান নিয়ে বের হয়।
সন্ধ্যার পর চুয়ানি সংগ্রহ করে রাজুকে মাত্রাতিরিক্ত চুয়ানি খাওয়ায়, ফলে রাজু ভ্যানে শুয়ে পড়ে। এরপ খাদেমুল নিজেই ভ্যান চালাতে থাকে। রাত সাড়ে ১০টার দিকে ঘটনাস্থলে নিয়ে যায় এবং সুযোগ বুঝে খাদেমুল তার কাছে থাকা মৌচাক কাটা ধারালো চাকু দিয়ে রাজুর গলা কেটে এবং পিঠে আঘাত করে হত্যা করে।
গ্রেপ্তার তিনজনকেই আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। ২১ জুন নাচোল উপজেলার শ্রীরামপুরের নিজ বাড়ি থেকে ভ্যান নিয়ে বের হয়ে আর ফিরেন নি রাজু আহমেদ। পরদিন পারিলা চাঁনপুকুর থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় তার মা সুলতানা বেগম বাদী হয়ে নাচোল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।