মনিরুল ইসলাম: বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, “জাতির অনেক অর্জনের মধ্যে একটি বড় অর্জন হলো জুলাই বিপ্লব। আমরা এই বিপ্লবের শহীদ ও যোদ্ধাদের যথাযথ মর্যাদা দিতে চাই।”
শনিবার (২৯ জুন) দুপুরে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে ১ জুলাই উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভা ও বিশেষ অনুষ্ঠানের ভেন্যু পরিদর্শন শেষে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, “আমরা এমন একটি ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখি, যা সাধারণ মানুষের স্বপ্নের প্রতিফলন। সকলে যাতে নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ জীবন যাপন করতে পারে, সেটাই আমাদের প্রত্যাশা।”
বিএনপি জুলাই-আগস্ট মাসজুড়ে 'গণঅভ্যুত্থান, শোক ও বিজয়ের বর্ষপূর্তি' উপলক্ষে দেশব্যাপী কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। এর অংশ হিসেবে ১ জুলাই আয়োজন করা হচ্ছে ‘গণঅভ্যুত্থান ২০২৪: জাতীয় ঐক্য ও গণতান্ত্রিক অভিযাত্রা’ শীর্ষক আলোচনা সভা এবং শহীদ পরিবারগুলোর সম্মানে বিশেষ অনুষ্ঠান। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি বক্তব্য রাখবেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
রিজভী জানান, এই কর্মসূচিকে ঘিরে বিএনপি ৩৬ দিনব্যাপী নানা আয়োজন করছে। তিনি বলেন, “যারা গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার সংগ্রামে জীবন দিয়েছেন, তাদের যথাযথ সম্মান জানাতে হবে। সেই প্রত্যয়ে আমরা মাঠে আছি।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা ভেন্যু ঘুরে দেখেছি, যাতে শহীদ পরিবারের সদস্য ও অতিথিরা সম্মানের পরিবেশে অংশ নিতে পারেন। অনুষ্ঠান যেন সার্থক ও গৌরবময় হয়, সেটাই আমাদের লক্ষ্য।”
অর্থনীতি ও সামাজিক সংকট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “দেশে মব কালচার ও অগণতান্ত্রিক পরিস্থিতি বিরাজ করছে। প্রবৃদ্ধি গতবার ছিল ৪.২ শতাংশ, এবার হয়েছে ৩.৯। নির্বাচন কমিশনের উচিত দ্রুত একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা।”
সাবেক সরকারগুলোর সমালোচনা করে রিজভী বলেন, “তারা রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুট করেছে এবং গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংস করেছে—যেমন নির্বাচন কমিশন ও মিডিয়া। আমরা আশা করি ড. ইউনূস জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী ভূমিকা রাখবেন।”
অনুষ্ঠানে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি বলেন, “জুলাই বিপ্লবকে স্মরণীয় করে রাখতে আমরা মাসব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা করেছি। আমরা আশা করি, শিগগিরই শেখ হাসিনার বিচার কাজ দৃশ্যমান হবে এবং একটি নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে।”
তিনি আরও বলেন, “শহীদ ও আহত পরিবারগুলোর পাশে দাঁড়াতে আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করছি। ভবিষ্যতে একটি কমিশনের মাধ্যমে এসব পরিবারকে আরও সংগঠিতভাবে সহায়তা করবো।”
অনুষ্ঠান পরিদর্শনে আরও উপস্থিত ছিলেন—বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, গণঅভ্যুত্থান দিবস পালন কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খান, কেন্দ্রীয় নেতা হাবিবুর রশিদ হাবিব, মাহদী আমিন, ড. তৌফিকুল ইসলাম মিথিল ও আবদুস সাত্তার পাটোয়ারী প্রমুখ।